Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একজনের ভাষণে স্বাধীনতা আসেনি: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

একদিনে, একজনের ভাষণে স্বাধীনতা আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নয় মাস কি কষ্ট করে, লড়াই করে যুদ্ধ করেছে, এক কোটির উপরে মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে চলে গেছে বাড়ী-ঘর ছেড়ে সব কিছু। এখানে যারা ছিলেন প্রতিমুহুর্তে মৃত্যুর কথা চিন্তা করেছেন, তুলে নিয়ে গেছে পাকিস্তানি বাহিনীরা, ফিরে আসেনি। এখানে কত মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন-সেসব কথা উচ্চারণ কিন্তু হয়না। তাদের কথা কেউ বলে না। এজন্য আমরা বার বার বলতে চেয়েছি একদিনে, একজনের ভাষণে স্বাধীনতা আসেনি। আমাদের সেই বক্তব্যের পরে সরকার প্রধান ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছেন যেটা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৯ মার্চ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে কোনো একজন বললেন যে, ২৫/২৬ মার্চ। এটা হাস্যকর, এটা হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়। এটা কেউ বিশ্বাস করবেন না এজন্যে যে, উনি এমন সমস্ত কথা বলেন, যার ঐতিহাসিক প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেন না ।
তিনি বলেন,আজকে কেনো এই মিথ্যাচার? এর কারণটা কি? একটাই কারণ তাদের লক্ষ্যকে চরিতার্থ করতে চায়, তাদের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে, একজন মাত্র ব্যক্তি তার একক ঘোষণায়, তার একক কথায় দেশ মুহুর্তের মধ্যে স্বাধীন হয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তিনি যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতেন তাহলে কি যুদ্ধ শুরু হতো? হতো না। উনার স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবং যুদ্ধ ঘোষণার মধ্য দিয়ে ‘উই রিভোল্ট’ এই কথা মধ্য দিয়ে এবং প্রবাসী সরকার গঠন হওয়ার অনেক আগেই হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়াতে জিয়াউর রহমান সাহেব, আমাদের এমএজি ওসমানীসহ সেক্টার কমান্ডাররা সবাই বসে বৈঠক করে ন্যাশনাল কমান্ড ফর লিবারেশন ওয়ার তারা তৈরি করে ফেলেছেন। সেটা ৪ এপ্রিল। ওখানে(তেলিয়াপাড়া) গেলে আপনারা সেই প্ল্যাট দেখতে পারবেন। আপনাদের প্রত্যেকের উচিত সেটা দেখা। আমাদের সেনা নায়করা যারা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছেন তারা কিভাবে একত্রিত হয়ে বসে তাদের কর্মসূচি প্রস্তৃত করেছেন এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই ঘোষণা করেছেন।
এর আগে ৯ মার্চে ১৯৭১ সালে মাওলানা ভাসানী পল্টনে ময়দানে কী বললেন? তিনি বললেন, স্বাধীনতা মেনে নিন-ইয়াহিয়াকে ভাসানী। আর কাল বিলম্ব না করে স্বাধীনতা দিয়ে দিন। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণার আগে মওলানা ভাসানীই প্রকাশ্যে স্বাধীনতার কথা সমস্বরে উচ্চারণ করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা কোনো নেতাকে ছোট করার জন্য নয় বা কাউকে বড় করার জন্য নয়। আমরা আমাদের স্বাধীনতাতে যার যার যে অবদান আছে, সেই অবদানকে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই। আজকে সেজন্যে আপনাদের(ক্ষমতাসীন সরকার) শরীরে গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। আপনারা বিভিন্ন রকমের অসংলগ্ন কথা-বার্তা বলছেন, অপ্রকৃতিস্থ কথা-বার্তা বলছেন যেগুলোর সঙ্গে সত্যের কোনো চিহ্নমাত্র নেই। সত্য একটাই এদেশের সাধারণ মানুষ, কৃষক-শ্রমিক মেহনতী মানুষ তারা পূর্ব পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন, যুদ্ধ করেছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের যুদ্ধের ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
আওয়ামী লীগের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবশ্যই আপনাদের অবদান আছে। অবশ্যই বিরাট বিরাট অবদান আছে। ১৯৭১ সালের আপনাদের যে অবদান সেই অবদান কেউ কোনোদিন আমরা অস্বীকার করি না। একই সঙ্গে আপনারা যখন মূল নায়কের অবদানটাকে অস্বীকার করেন সেটাকেও আমরা কোনো মতেই মেনে নিতে পারি না। আমি আগেও বলেছি, শহীদ জিয়ার খেতাব তুলে নেবেন। নিক। কে খেতাব পেলো কি পেলো না তাতে কিছু আসে যায় না শহীদ জিয়ার। তিনি এদেশের মানুষের অন্তরে রয়েছেন।
জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ।###

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ