Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যারা অখণ্ড পাকিস্তান চেয়েছিল তারাই জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে : রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২১, ২:৪৫ পিএম

যারা স্বাধীন বাংলাদেশ নয় অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন তারাই দেশের শ্রেষ্ঠ ও বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ শহীদ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু নজিরবিহীনই নয়, আপত্তিকর, অরুচিকর এবং দেশের একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে এ ধরনের কুৎসা রটানোর মতো জঘন্য কাজ কেউ করতে পারে বলে মনে হয় না।

তিনি বলেছেন, ২৫ মার্চে যখন রাস্তায় রাস্তায় সারাদেশে জনগণ ব্যারিকেড দিচ্ছে চট্টগ্রামেও দেশবাসী ব্যারিকেড সৃষ্টি করলে জিয়াউর রহমান নাকি গুলি করেছিল।

তাহলে তিনি কত বড় বিকৃত, পারভারটেড (ইতিহাস বিকৃতিকারী)। আসলে চারিদিকে ধিক্কার উঠেছে। আল জাজিরার রিপোর্ট এবং সরকারের কুকীর্তি নিয়ে ধিক্কার। এসব আড়াল করতেই জিয়ার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে।
ইতিহাস বিকৃতি না করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের যারা নেতৃবৃন্দ ছিলেন তারা এবং তাদের সন্তানেরা যে সমস্ত বই লিখছেন এবং শেখ হাসিনার কেবিনেটেও যেসব প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তারা যে সমস্ত বই লিখেছেন সেখানে জিয়াউর রহমানকে যেভাবে মহিমান্বিত করেছেন তার স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত অবদান নিয়ে।

সেগুলো শেখ হাসিনা ঢাকতে বা আড়াল করতে পারেননি। যখন ২৫ মার্চে হানাদার বাহিনী আক্রমণ করলো তখন তার পিতাকে স্বাধীনতার জন্য কিছু বলতে অনুরোধ করেছিলেন তাজউদ্দীন সাহেব সহ আরো অন্যান্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দ যারা ছিলেন। অথচ তাদেরকে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাতে বলা হলো এবং ২৭ মার্চ তিনি হরতাল ডেকেছিলেন। তিনি স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো কথা বলেন নি।

রিজভী বলেন, এখন যারা নিরপেক্ষভাবে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসছে। শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা তো ঐতিহাসিক ঘটনা।
দেশ-বিদেশের গবেষক, লেখক, রাজনীতিবিদ সবাই শুধু সেটাকে স্বীকারই করেন না বরং শ্রদ্ধার সাথে তারা স্মরণ করেন। শুধু শেখ হাসিনা ছাড়া।

আওয়ামী লীগেরও যেসব নেতৃবৃন্দ রয়েছেন, বা শেখ হাসিনার গত কেবিনেটে ছিলেন, বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও গবেষণায়, বইয়ে, স্মৃতিচারণে জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা বিষয়ে উল্লেখ আছে।

জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকারের গ্রন্থে প্রত্যেকটি জিনিস সুস্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

সুতরাং আর তো কিছু করার বা বলার নেই। এ কারণেই প্রতিদিন অভিনব, বানানো, মিথ্যাচার এই কথাগুলো বলছে।
মূলত তার মধ্যে একটাই ক্ষোভ কাজ করছে এবং এটা সত্য প্রমাণিত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা চায়নি। তারা বৃহত্তর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছেন। মানে আজকের প্রধানমন্ত্রীর পিতা তিনি বৃহত্তর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। তাদের এই সিদ্ধান্তকে যারা ভেঙ্গে ফেলেছে তাদের প্রতি তার একটা ক্ষোভ আছে।

তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি কমান্ডার জানজুয়াকে হত্যা করে ‘উই রিভোল্ট’ বলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। সেই ব্যক্তিকেই বলা হচ্ছে তিনি নাকি চট্টগ্রামে যারা ব্যারিকেড দিয়েছে তাদেরকে তিনি হত্যা করেছেন।

এ ধরনের কথা তো জিয়াউর রহমানের বড় শত্রুরাও বলতে পারে না। যে ব্যক্তি তার পাকিস্তানী কমান্ডারকে হত্যা করে স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা দিলেন তার প্রতি কী ধরনের কলঙ্ক লেপন করছে।

তাহলে বুঝতে হবে শেখ হাসিনারাই বা আওয়ামী লীগই হচ্ছে বৃহত্তর পাকিস্তানের পক্ষে। আর এজন্যই যারা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছেন তাদের প্রতি তাদের চরম ক্ষোভ।
এ জন্যই জিয়াউর রহমানের মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জেড ফোর্সের কমান্ডার এবং স্বাধীনতার ঘোষকের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন, অমূলক মিথ্যা বলছেন।

রিজভী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তারা এখন বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানের আওয়ামী লীগের নেতারা মনোরোগে ভুগছেন। এই কথার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যা আজ থেকে প্রায় ২০/২২ বছর আগে আদালত পর্যবেক্ষণে প্রধানমন্ত্রীকে ‘রং হেডেড’ বলেছিলেন। সেটি আবারো প্রমাণিত হলো যে, তিনি একজন বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি, মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন। (গতকাল) সোমবার তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি শুধু সত্যের অপলাপ তো বটেই এটা মানিসক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ বলতে পারে না। দেশের একজন বরেণ্য এবং শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে এত বড় কুৎসা রটানো কেউ কখনো করতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা জেলা বিএনপির সেক্রেটারি খন্দকার আবু আশফাক, যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোর্ত্তাজুল করিম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখায়রুজ্জামান শিমুল সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ