Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোহরাওয়ার্দীর সাবেক পরিচালকের লাইসেন্স বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ

সরকারি কোষাগার থেকে নেয়া টাকা ফেরত চাওয়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়ার ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল ও ডাক্তার হিসেবে এ পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গতকাল রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ নোটিশ প্রেরণ করেছেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএমডিসি’র চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিস্ট ১২ জনকে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছে।

‘উত্তমের পড়ালেখা থেকে চাকরি, সর্বত্র জালিয়াতি’ শিরোনামে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এই আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
উত্তম কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এসএসসিতে পান প্রথম বিভাগ। আর এইচএসসিতে দ্বিতীয় বিভাগ। এসএসসি আর এইচএসসি মিলে তিনি পেয়েছিলেন ১১১১ নম্বর। এই নম্বর নিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করারও যোগ্য ছিলেন না তিনি। কিন্তু তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের নিয়মিত ছাত্র হিসেবে ৫ বছরের শিক্ষাজীবন ১০ বছরে শেষ করে ডাক্তারি সনদ দিয়ে সরকারি চাকরি করেছেন। হয়েছেন রাজধানীরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকও। একের পর এক দুর্নীতি ও অনিয়ম করে বসেছেন উচ্চ পদে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে এরইমধ্যে তাকে ওএসডি করা হয়েছে। দায়ের করা হয়েছে বিভাগীয় মামলা। এ অবস্থায় তার ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল ও ডাক্তার হিসেবে এ পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে যত টাকা নিয়েছেন তা ফেরত দিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
উত্তম কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনায় ৬ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে সাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জন্য যন্ত্রপাতি কেনায় ব্যাপক অনিয়মের কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক ) গত বছরের মার্চ মাসে উত্তম কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে। এই মামলায় তদন্তের মধ্যেই তার সনদ জালিয়াতির অভিযোগ সামনে এসেছে বলে জানা গেছে।
প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে, উত্তম কুমার বড়ুয়া কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চট্টগ্রামের রাউজানের আবুরখীল অমিতাভ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে প্রথম বিভাগে ৬২৮ নম্বর পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। তার রোল নম্বর ছিল ২৭২৩৯। এরপর তিনি ১৯৮৩ সালে একই শিক্ষা বোর্ডস্থ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর কুয়াইশ বুড়িশ্চর শেখ মোহাম্মদ কলেজ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। এইচএসসিতে তার রোল নম্বর ছিল ১০৯৩৫। তিনি এইচএসসিতে পান ৪৮৩ নম্বর। তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন ১৯৮৪ সালে। তার দাখিল করা নথিপত্র অনুযায়ী তিনি সিলেট মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।
এরপর মাইগ্রেশনের সুযোগ নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি হন। তার সেখান থেকেই পাশ করেন। কিন্তু ওইবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মেডিকেলে ভর্তির জন্য জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ভর্তির আবেদন করার যোগ্য হতে হলে এসএসসি ও এইচএসসিতে মোট ফলাফলের অন্তত শতকরা ৬০ ভাগ নম্বর থাকার কথা অর্থাৎ কমপক্ষে ১২শ নম্বর থাকতে হবে। কিন্তু ডা. উত্তম কুমারের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ১১১১। তাহলে তিনি কিভাবে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করলেন, আর কিভাবেইবা উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হলেন? এরপর দিব্যি লেখাপড়া জীবন শেষ করে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদান করলেন। একের পর এক পদোন্নতি পেয়ে হয়ে উঠলেন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ