রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
যমুনা নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকা আর দূষন-দখল ও সুপরিকল্পিত ড্রেজিং-এর সুব্যবস্থা না থাকায় উত্তরের বেড়াকোলা থেকে দক্ষিণ দিকের কাউনিয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ১৩৫ মাইল দীর্ঘ যমুনা নদী মরতে বসেছে। উত্তর বঙ্গের প্রবেশদ্বার যমুনা এখন হেটে পার হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই এমন নাব্যতা সঙ্কটের কারণে নৌযান চলাচলে তীব্র সঙ্কটসহ নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পানির অপ্রতুলতার কারনে মৎস্যজীবীরা বেকার হয়ে পড়ছে। দুর্গম চরাঞ্চলের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় রবি মৌসুমের ফসল ফলানো দায় হয়ে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ফুলজোর, ইছামতি, করতোয়, কাটাখালি, হুড়াসাগড় এলাকায় খেয়া পারাপারও হুমকির সম্মুখীন হয়ে পরেছে। যমুনা নদী সংশ্লিষ্ট খেয়া নৌকাগুলো কুলে ভিড়তে পারছে না ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মালামাল পরিবহনে খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় নি্যুপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ম‚ল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী দখলের প্রতিযোগিতায়ও মরছে নদী। নদীর তীরর্বুী হতদরিদ্র প্রান্তিক কৃষক যারা নদীর পানির ওপর ভরসা করে ইরি-বোরো চাষাবাদ করত তাদের দুঃখের শেষ নেই। পানি সঙ্কটে প্রাকৃতিক বিপর্যায়ে গাছ-গাছালি মরতে বসেছে। ঘটনার এখানেই শেষ নয়, উত্তরবঙ্গের একমাত্র নৌবন্দর শাহজাদপুর বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে নব্যতা সঙ্কটে তেলবাহী জাহাজ, কাগো, এমন কি শ্যালো নৌকাও কুলে ভিড়তে পারছে না। ফলে ভরা ইরি মৌসুমে তেল সঙ্কট দেখা দিলে এ মৌসুমের চাষাবাদে বিঘœ ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সব কিছু মিলে এক মহাসঙ্কটের প‚র্বাভাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যমুনা সেতুর ওপর চোখ মেললেই শাখা নদীগুলোর করুণ চিত্র অনুমান করা যায়। নদীর বুকে চাষাবাদ আর বিশাল চরে দুরন্ত কিশোররা খেলছে ফুটবল, ক্রিকেট। এদিকে শাহজাদপুর উপজেলায় বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে মাঝ পথে চর জেগে উঠায় নদী এখন দ্বিখন্ডিত হয়ে পরেছে। এ বন্দরে মালামাল তেলবাহী জাহাজ কার্গো ভিড়তে পারছে না। নদী কুলের অনতিদ‚রে জাহাজ, কার্গো নৌঙ্গর করে মালামাল খালাস করা হচ্ছে। পানির নব্যতা কমে যাওয়ায় যে কোন সময় মালামাল পরিবহন করা বন্ধ হয়ে সঙ্কট সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এক সময় ‘প্রাচ্যের ম্যানচেস্টার’ নামে খ্যাত বাহিরগোলা নৌবন্দর, যমুনা নদীর ভ‚য়াপুর জগন্নাথগঞ্জঘাট, সিরাজগঞ্জ পুরাতন জেল খানা ঘাট, কাজিপুরঘাট, এলাকায় বড় বড় স্টিমার, লঞ্চ, কাগো, মালবাহী জাহাজ ভিড়তো সেটা এখন শুধুই গল্প। শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই এখন নাব্যতা সঙ্কটে পড়ে এই জেলায় অধিকাংশ নদী, মৎস্য চাষিরা এখন বেকার জীবন যাপন করছে। খেয়া পারে এখন নেই যে খেয়া। হেটেই পার হতে হয় নদী। আবার কোথাও হাটু কোথাও গোড়ালী পানিতে নৌকা ভিড়ছে কাঁদাপানিতে, হাটু পানি পেরিয়ে কুলে আসতে হচ্ছে যাত্রীদের, মালামাল পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘপথ তপ্ত বালুর চর পেড়িয়ে যেতে বৃদ্ধ, শিশু ও নারী শিশুরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। চরাঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকরা ধানের সেচ নিয়ে এখন থেকেই দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে।
কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, চরাঞ্চলে প্রায় ৩ হাজার কৃষক ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পলি ও দোয়াশ মাটিতে গম, বাদাম, মিস্টি আলু সবজিসহ বিভিন্ন জাতের ফসল আবাদ করা হচ্ছে তাতে ভাল ফলন হবে না বলেই আশঙ্কা করছে কৃষি অধিদপ্তর।
পানি উন্নয়ন কর্মকর্তাদের মতে, অপরিকল্পিত ড্রেজিং ও নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণেই এসব বিপত্তি ঘটছে। সিরাজগঞ্জ জেলায় উন্নয়ন করতে কৃষি খাতকে প্রধান্য দেয়াসহ কৃষকদের সহজ শর্তে ঋন, সুপরিকল্পিতভাবে নদী খনন, সেচ ব্যবস্থা সহজলভ্য করতে হবে এমনটি মন্তব্য করেছেন জেলার সচেতন মহল। এ ব্যাপারে তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জরুরিভাবে গ্রহণ করা উচিত বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন। অন্যথায় নদীকে মরার হাত থেকে রক্ষার কোন উপায় থাকবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।