পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টাঙ্গাইলে বেদখল হয়ে যাওয়া লৌহজং নদ উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রাখা এবং নদকে ঘিরে নেয়া নানা উন্নয়ন কার্যক্রম শঙ্কার মুখে পড়েছে। নদের তীরের বাসিন্দা একটি পরিবার জমির বৈধ মালিকানা দাবি করে মামলা করে।
মামলায় জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, মেয়রসহ ১৪ জনকে বিবাদী করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে টাঙ্গাইল যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে পৃথক দুটি মামলা করায় এই আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন আইনগতভাবে মোকাবেলার পাশাপাশি বিধান মেনেই নদের অবৈধ দখল উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত রাখবেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৩ ফেব্রæয়ারি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে লৌহজং নদটিকে অবৈধ দখলদার মুক্ত করার জন্য সহকারি কমিশনারের (ভ‚মি) মাধ্যমে নোটিশ জারি করেন। নোটিশের তথ্যে নদ তীরের দশ মিটার পর্যন্ত সীমার মধ্যে কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। নোটিশ প্রদানের ১২ দিন পর গত বছরের ২৫ ফেব্রæয়ারি লৌহজং নদের তীরবর্তী একটি জমিতে নির্মিত সাত তলা ভবনের অংশ বিশেষ ভেঙে দেয়া হয়।
ওই জমির বৈধ মালিকানা এবং জমির উপর নির্মিত ভবনটি ভেঙে দেয়ায় বিপুল অঙ্কের টাকা ক্ষতি হয়েছে দাবি করে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর পাঁচজন বাদি হয়ে টাঙ্গাইলের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে সাত কোটি ৯৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদিরা হলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার জমশের আলী, আ. কাইয়ুম বাবলুর স্ত্রী রোকেয়া বেগম রিনা, মাহবুব ইসলাম মিলনের স্ত্রী সোনিয়া ইসলাম রুমি, মো. জমশের আলীর মেয়ে সুমি আক্তার এবং ছেলে রফিকুল ইসলাম।
মামলায় বিবাদী করা হয়েছে ১৪ জনকে। এরা হলেন জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি), টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র, স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার মো. নুরুল ইসলাম, আব্দুল বাছেদের স্ত্রী মোছা. নাজমা আক্তার, তায়াফ্ফাল হকের স্ত্রী আয়েশা খাতুন, লৌহজং নদ ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রতন সিদ্দিকী এবং স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার আব্দুল হামিদের স্ত্রী নাজমা হামিদ, ছাত্তার মিয়ার স্ত্রী শাহনাজ আক্তার, মজিবর রহমান ও মতিয়ার রহমানের স্ত্রী সাহিদা দিল আফরোজ।
সরেজমিন নদের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, টাঙ্গাইল পৌর এলাকার ভেতর দিয়ে বয়ে চলা প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক সময়ের খরস্রোতা নদটি দখলে দূষণে সরু খালে পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র শহরের অংশে বিভিন্ন ব্যক্তি অবৈধভাবে প্রায় দুই কিলোমিটার দখলে নিয়ে অসংখ্য ছোট-বড় স্থাপনা ও ভবন নির্মাণ করেছে। এতে পানির প্রবাহ বাঁধাগ্রস্থ হয়ে নদটির নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে।
নদী, খাল-বিল, জলাশয়, বন ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রতন সিদ্দিকী বলেন, গত বছর নদী তীরের একটি ভবনকে অবৈধ বলে চিহ্নিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ভবন মালিককে নোটিশ দিয়ে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলে। কিন্তু ভবন মালিক তা না করায় প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে দেন। এ বিষয়টি নিয়ে পরিবেশবাদীরা সরব থাকায় আমার বিরুদ্ধেও ক্ষতিপূরণ মামলা করা হয়েছে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, নদ-নদী আইনের উপর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে সিএস রেকর্ড ব্যক্তি মালিকানা থাকে তবুও নদীর ৩০ ফুটের মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এরই আলোকে নদ তীরের অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে যে মামলা হয়েছে তা মোকাবেলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা যথাযথ নিয়ম ও বিধি মেনেই লৌহজং নদের সীমানা নির্ধারণ ও উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছি। আমাদের বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছে তা মোকাবেলা করার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিবো।
টাঙ্গাইল পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর বলেন, মামলার বিষয়ে আইনগতভাবে যা করণীয় আমরা তাই করবো। জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, মামলার জবাব আমরা আইনগতভাবেই দিবো। দখল, দূষণ নিয়ে যারাই অপতৎপরতা চালাবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ডসহ সকল কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।