Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুলিক নদীর তীরে অতিথি পাখিদের কলরব

আশরাফুল আলম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) থেকে | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২১, ১২:০২ এএম

চারদিকে সবুজ-শ্যামলের সমারোহ। মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে একটি বিশাল আকারের শিমুল গাছ। বিকেলের সোনালি রোদে শিমুলের ডালে ডালে পানকৌড়ির পালক জ্বলজ্বল করছে। এ যেন পানকৌড়ির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। উপজেলার কেউটান গ্রামের এ শিমুলগাছটি যেন পানকৌড় পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
একটি গাছে এক সঙ্গে এত পানকৌড়ি দেখে শত ব্যস্ততার মধ্যেও অনেক পথচারী একটু দাঁড়িয়ে চোখ জুড়িয়ে নিচ্ছেন। আর তা দেখে প্রাণ জুড়ায় ওই গাছের মালিক যাদব রায়ের। যাদব রায়ের বাড়ি উপজেলার শান্তিপুর হয়ে কাঠালডাঙ্গী যাওয়ার সড়ক ঘেঁষা কেউটান গ্রামে।
যাদব রায় বলেন, ‘পাখিদের সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর এখানে পাখি আসে বলেই প্রতিদিন দূর-দুরান্ত থেকে অগণিত পাখিপ্রেমী শুধু পাখিই দেখতে আসে। এ দেখে ভালো লাগে। শীতের মৌসুম শেষের সঙ্গে সঙ্গে পাখিদের উপস্থিতিও কমে যায়। এক সময় ধীরে ধীরে শিমুল গাছ পাখি শুণ্য হয়ে পড়ে। তখন বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আবার যখন গরম শেষে শীত মৌসুম ফিরে আসে তখন এই পাখিগুলোও ফিরে আসে। তখন বুকটা ভরে যায়। পাখির কারণে কিছু ক্ষতি হলেও, সব ক্ষতি আমি মেনে নিয়েছি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, কুলিক নদীর পাশে সব গাছ ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে আছে একটি শিমুল গাছ। গাছের ডালে ডালে শুধু পানকৌড়ি আর পানকৌড়ি। কত যে পানকৌড়ি, তার হিসাব নেই। পানকৌড়ির কলকাকলিতে মুখর চারদিক। আর এই দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন অনেকেই। আর এই পাখিগুলোর নিরাপদ অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে গাছটি।
তবে স্থানীদের অভিযোগ, এবার একটু কম দেখা মিলছে এই পাখিদের। কারণ ইদানিং কিছু মানুষ বন্দুক দিয়ে পাখিগুলো শিকার করছেন। পাখি শিকারে তাদের বারণ করা হলেও তারা কোন কথা শোনে না।
কেউটান গ্রামের বাসিন্দা দুলাল বলেন, রাতে পাখিগুলো শিমুল গাছটিতেই থাকে। সকাল হলেই পাখিগুলো বেড়িয়ে পড়ে খাদ্যের খোঁজে। আবার সন্ধ্যা হলেই ফিরে আসে গাছটিতে। দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। এই পানকৌড়ি পাখিগুলো শিমুল গাছটিকে তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে বাস করছে। এক সময় এ গাছটিতে প্রচুর পরিমাণে পাখি ছিল। কিন্তু পাখি শিকারীদের কারণে তার সংখ্যা অনেকাংশে কমে গেছে। পাখিদের নিরাপত্তা দিতে হবে।
সাবেক অধ্যক্ষ ও পাখিপ্রেমী তাজুল ইসলাম বলেন, পাখিগুলোর কারণে ওই এলাকা সৌন্দর্য ফিরে পায়। পাখি আমাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রচুর ভূমিকা রাখে। তাই পানকৌড়ি পাখিগুলোর নিরাপত্তা সহকারে পরিচর্যা করলে পাখির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। শিমুল গাছটি যেন নিরাপদে থাকতে পারে সে জন্য প্রশাসনকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলকান জুলকার নাইন কবির বলেন, পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি পাখিগুলোর নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনিক তৎপরতা আরও জোরদার করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ