পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাত্তরের ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ইতিহাস বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ওই ভাষণ অবশ্যই ইতিহাস। অবশ্যই তার সম্মান, তার মর্যাদা তাকে দিতে হবে। তার অর্থ এই নয় যে, ৭ মার্চ আপনি যখন পালন করবেন তখন একথা বলবেন ৭ মার্চের ডাকে হয়ে গিয়েছিল কিনা সেটা তো আলোচনার মধ্যে আসবে, ইতিহাস থেকে আসবে, ইতিহাসের সমস্ত বই থেকে আসবে। গতকাল শনিবার গুলশানে হোটেল লেকসোরে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন মিডিয়া কমিটির আয়োজনে গণমাধ্যমের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা শুধু ৭ মার্চ নয়, আমরা ২ মার্চ, ৩রা মার্চ পালন করছি। ২ মার্চ প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন তখনকার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা আসম আবদুর রব। দ্যাট ইজ এ পার্ট অব হিস্ট্রি। ৩ তারিখ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছেন শাহজাহান সিরাজ। এটাকে অস্বীকার করবো কী করে? আজকে তার রাজনৈতিক ধারা ভিন্ন, রাজনৈতিক দল ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু দ্যাট ইজ রিয়েলিটি, দ্যাট ইজ পার্ট অব হিস্ট্রি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাউকে খাটো করার কোনো রকম ইচ্ছা আমাদের নেই এবং আমরা বিশ্বাস করি সেটা উচিতও না। বিশেষ করে স্বাধীনতার ব্যাপারে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত করতে হবে। ওই সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত, সময় আমাদের সামনে উজ্বল হয়ে আছে। ৭ মার্চ বক্তৃতায় কে কী বলেছিলেন, পরবর্তীকালে ২ মার্চ, ৩ মার্চ কী বলেছিলেন, ৯ মার্চ মওলানা ভাসানী কী বলেছিলেন পল্টন ময়দানে, মাহবুবউল্লাহ কী বলেছিলেন এগুলো ইতিহাস।
একই সঙ্গে ২৬ মার্চ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে ঘোষণা জাতিকে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং সমগ্র জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এটাও ইতিহাস। সুতরাং এগুলো কোনটাই অস্বীকার করা যাবে না।
জাতিকে বিভক্ত করার জন্য আওয়ামী লীগকে অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, ৫০ বছর পরে জাতি হিসেবে আমরা বিভক্ত হয়ে পড়েছি। সেটার জন্য কৃতিত্ব আওয়ামী লীগেরই। জাতিকে প্রথম থেকে তারা স্বাধীনতার পক্ষে, স্বাধীনতার বিপক্ষে, চেতনার পক্ষে, চেতনার বিপক্ষে নিয়ে গেছে। ওই চেতনা নিয়ে কি দেশ স্বাধীন হয়েছিল যে, আমি গণতন্ত্র লুট করে নেব, আগের রাতে নির্বাচন করে সরকার লুট করব, কোষাগার খালি করে দেব। একজন লেখক, একজন নিরীহ মানুষ লেখেন, সেই অপরাধে তাকে জেলে পাঠিয়ে তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে।
ডিজিটাল আইনের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যে ডিজিটাল আইন তৈরি করা হয়েছে আপনারা সাংবাদিকরা তার সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। প্রায় ৪শ’ জন বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগী, কত জনকে জেল খাটতে হয়েছে। ফটোগ্রাফার কাজল, আন্তর্জাতিক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এরা সবাই। সাগর-রুনিকে হত্যা করা হয়েছে। এদের অপরাধ শুধু লেখা। এ জন্য তো আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করিনি, স্বাধীনতা চাইনি।
তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করব। আমাদের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর কর্মসূচি পালন করার ওই একটাই উদ্দেশ্য যে, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম। আমরা কোনো একজন ব্যক্তি, কোনো একটা পরিবার, কোনো একটা দলের একান্ত ব্যক্তিগত পারিবারিক সম্পত্তি করার জন্য এদেশ স্বাধীন করিনি।
জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলে জিয়াউর রহমান এবং বিএনপির কিচ্ছুই যায় আসে না বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে। কে কার খেতাব নিল, না নিল তাতে জিয়াউর রহমানের কিচ্ছু যায় আসে না। আর এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষেরও কিছু যায় আসে না। বিএনপিরও কিচ্ছু যায় আসে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান খেতাব কারো দয়ায় নয় বা কোনো সরকারের বা কোনো ব্যক্তির আনুকুল্যে নয়। তিনি এটা অর্জন করেছিলেন তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটা জাতিকে তার স্বাধীনতা যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করে। এ খেতাব স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান সরকারই দিয়েছিল। এ খেতাবকে তুলে নেয়ার যে অপচেষ্টা তা জনগণ কোনোদিনই মেনে নেবে না এবং এটাতে জনগণের কোনো যায়ও আসে না। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকেও নিমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান তিনি।
স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে আজকের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য আমরা সারা বছরের কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। কারণ আজকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিতর্কিত করার জন্য, নানাভাবে বিকৃত করার জন্য হেনচেষ্টা নাই যা করা হয়নি। যিনি প্রথম যুদ্ধ ঘোষণা করলেন, যিনি প্রথম সেক্টর কমান্ডার, প্রথম ফোর্সেস কমান্ডার তাকে বিতর্কিত করার জন্য কী না করেছে। সর্বশেষ তার খেতাব বাতিলের জন্য আজকে সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যে প্রচেষ্টা নিচ্ছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বিশ্বাস করি, জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করার অর্থ মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা।
মিডিয়া কমিটির আহবায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শ্যামা ওবায়েদের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মিডিয়া কমিটির সদস্য মীর হেলাল উদ্দিন, আতিকুর রহমার রুমন, শায়রুল কবির খান, ফারজানা শারমিন পুতুল, ইয়াসির খান, মাহমুদা হাবিবা, শফিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, মীর সোলায়মান, নুরুল ইসলাম সাজু, বাবুল তালুকদার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।