পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ঐতিহ্যবাহী সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবারে দু’দিনব্যাপী ৯৯তম বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল আগামী শনিবার বাদ জোহর থেকে শুরু হবে। ১ মার্চ সোমবার বাদ ফজর দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে। উক্ত মাহফিল সফল করার লক্ষে গতকাল সোনাকান্দা বহুমুখী কামিল মাদরাসার অফিস কক্ষে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তা’লীমে হিযবুল্লাহ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব মুফতী মুহাম্মদ মোতালিব হোসাইন সালেহী, সোনাকান্দা দারুল হুদা কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ ইসলামী যুব কাফেলার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মাহমুদী ও সাংবাদিক ড. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
মাহফিল উপলক্ষে দরবার শরীফের পক্ষ থেকে ৬টি আলাদা আলাদা প্যান্ডেল ছাড়াও দূরবর্তী মেহমানের থাকা, খাওয়া, অজু, গোসল, টয়লেট ও ৮টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের মেটংঘর থেকে শ্রীকাইল, নবীপুর থেকে শ্রীকাইল পর্যন্ত রাস্তা দু’টি যানজট মুক্ত রাখতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে। পাশাপাশি অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান, স্থানীয় পুলিশদের সহযোগিতায় ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। করোনাকালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ফ্রি মাস্ক বিতরণ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হবে। এতে দেশ-বিদেশের ওলামায়ে কেরাম ও বিভিন্ন দরবার শরীফের পীর ছাহেবগণ বয়ান করবেন। মাহফিলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকের সমাগম হবার সম্ভাবনা রয়েছে। উক্ত মাহফিলে উপস্থিত থেকে দুনিয়া ও পরকালের অশেষ ছাওয়াব হাসিল করার জন্য দরবারের পীর, বাংলাদেশ তা’লীমে হিজবুল্লাহ’র আমীর প্রিন্সিপাল আলহাজ মাওলানা মাহমুদুর রহমান ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মাহফিলের মুখপাত্র মুফতী মুহাম্মদ মোতালিব হোসাইন সালেহী বলেন, মাহফিলের সার্বিক কর্মকা- পরিচালনা করতে মাঠ পর্যায়ে বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রচার ও প্রসারের জন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। মাহফিলে পীর মাশায়েখদের বয়ানের আলোচ্য বিষয় দেশ ও সুশীল জাতি বিনির্মানে নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপমহাদেশের আধ্যাত্মিকতায় প্রসিদ্ধ এ দরবার। পাক ভারত উপমহাদেশের মধ্যে দ্বীনের দাওয়াত ও খেদমতে যারা আঞ্জাম দিয়েছেন তন্মধ্যে সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবারের শরীফের দাদা হুজুর বাগদাদ ও ফুরফুরা শরীফ থেকে খেলাফত প্রাপ্ত শাহ্সুফি আলহাজ মাওলানা হাফেজ আব্দুর রহমান হানাফি (রহ.) অন্যতম। তিনি তার জীবনকে সর্বদা ইবাদত, বন্দেগী, মোরাকাবা-মোশাহাদার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির শিখরে সমাসীন হতে সক্ষম হয়েছেন। দ্বীনের ওপর তার আত্মত্যাগ ও সাধনা দেখে লাখ লাখ মুসলমান তাকে অনুসরণ করেন। বিশেষ করে এ দেশের মুসলিম মিল্লাতের নৈতিক অধপতন থেকে চারিত্রিক উন্নতি ও আমলের অগ্রগতির ক্ষেত্রে তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তিনি এ দাওয়াতি কাজ চালু রাখার জন্য বহুযুগ আগ থেকে দরবারে প্রতিবছর বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৪ সালে তার ইন্তেকালের পর উত্তরসুরী বড় ছাহেবজাদা শাহসুফি আলহাজ মাওলানা আবুবকর মোহাম্মদ শামসুল হুদা (রহ.) খেদমতকে অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগের মাধ্যমে গোটা দেশে আঞ্জাম দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় উভয়ের প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ, খানকাহ, মক্তব, মুসাফির ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০০৫ সালে তিনি যখন ইন্তেকাল করেন বড় ছাহেবজাদা আলহাজ মাওলানা প্রিন্সিপাল মাহমুদুর রহমান স্থলাভিষিক্ত হন। তিনিও নিরলস ভাবে দেশ-বিদেশে দ্বীনের দাওয়াতি কাজ ইন্তেজামে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।