Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষক-কর্মচারীদের ভ্যাকসিন আগে নিশ্চিত করতে হবে

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী টিকার কার্যকারিতা গবেষণা পর্যায়ে নিলেও বিধি মেনে চলবেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টিকা নিলেও মাস্ক পরা, হাত ধোঁয়াসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে হবে। অন্তত নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। কারণ দ্বিতীয় ডোজ রয়েছে। আবার করোনা টিকার কার্যকারিতা কতটুকু বা কী, এটিও গবেষণার পর্যায়ে আছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার টিকা সবাই নেবেন। টিকা নিলেও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলবেন। টিকা সংগ্রহ আমরা আগাম করেছিলাম, অনেক দেশ করতে পারেনি। কিন্তু টিকা নিলেও সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে হবে। কিন্তু আমি আগাম ব্যবস্থা নিয়েছিলাম বলে এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা এটা করছি।
তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার পাশাপাশি সবাইকে সুরক্ষিত থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। এ কারণে যে, এটার কার্যকারিতা কতটুকু কী- এটা গবেষণা পর্যায়ে আছে। তবুও অন্তত মানুষকে সুরক্ষা দিচ্ছে। সুরক্ষা দিলেও নিজেকে আরও সুরক্ষা করতে হবে, দ্বিতীয় ডোজও দিতে হবে। কাজেই সেই দিকে আমি লক্ষ্য রেখে সবাইকে বলব, আপনারা টিকা নিলেও স্বাস্থ্য সুরক্ষার যে নিয়মগুলো আছে সেগুলো সবাই মেনে চলবেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বক্তব্য উদ্ধৃতি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলন নয়। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের সার্বিক আন্দোলন। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। সেই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আমাদের ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছি। এটা শুধু আমাদের জন্য নয়, সারাবিশ্বে যাদের নিজস্ব মাতৃভাষা আছে তাদের নিয়ে কাজ করার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ধর্ম সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম সংখ্যক উকিল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি প্রমুখ।
এর আগে সকালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কি-না, তা পর্যালোচনা করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তা আগামী ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যেই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে বিষয়টি পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে, এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডেকে নিয়ে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্তে আসতে বলা হয়েছে। তারা সভা করবে আমরা (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) খুলব কি-না এবং কখন খুলব। দ্রুত খোলা যায় কি-না, কী পদ্ধতিতে খুলব যেন সেইফটিও ঠিক থাকে, একই সঙ্গে লেখাপড়াও হয়। কারণ এতদিন হয়ে গেছে। অন্যান্য দেশে ভার্চুয়ালি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাই আছে। সেইসব দৃষ্টিকোণ থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, আপনারা বসে চিন্তা-ভাবনা করেন আমরা খুলে দিতে পারি কি-না। দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর গতবছর ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিছুদিন পর টিভিতে ও অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরের ক্লাসে উঠেছেন পরীক্ষা ছাড়াই। আর অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসি ও সমমানের ফলফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়েছে। কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, না, কোনো তারিখের কথা বলা হয়নি। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে গ্রামে-গঞ্জে দেখা গেছে ছেলেমেয়েরা একটু স্বাধীনভাবে চলা ফেরা করছে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন, শিক্ষক ও কর্মচারীদের ভ্যাকসিনটা আগে কনফার্ম করতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ বা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে হল খোলার আন্দোলন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছি কি-না এমন অপর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা আলোচনা হয়নি, তবে এটা আলোচনা হয়েছে যে, বিশেষ করে যারা আবাসিক শিক্ষার্থী, তাদের সেইফটিটাই হলো সবচেয়ে বড় বিষয়। তাদের জন্য সেইফটি মেজার্স নিয়ে কীভাবে স্কুল-কলেজ খোলা যায়, সেটা দেখার জন্য বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ সপ্তাহে না হলে আমরা আগামী রবি-সোমবারের মধ্যে ইনশাআল্লাহ বসে যাব। বসে বিশেষজ্ঞ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে বসে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব। মহামারির প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় এবং এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির কথা বিবেচনা করে গত ২৩ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার প্রস্তুতি নিতে বলেছিল।
গত ২৪ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সংসদে বলেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রাথমিকভাবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস হবে। বাকিরা সপ্তাহে একদিন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাস করবে। কিন্তু সর্বশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর তথ্য জানানো হয়।



 

Show all comments
  • মোঃ দুলাল মিয়া ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৯:৩৪ এএম says : 0
    টিকা আসার সাথে সাথে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ