বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল ব্যুরো : দিক নির্দেশনাকারী পাইলট এবং কাপ্তেন ও চালক থাকার পরেও রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের নৌযোগাযোগ রক্ষাকারী রাষ্ট্রীয় নৌ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের ‘পিএস মাহসুদ’ জাহাজটি দুর্ঘটনার ১১ ঘণ্টা পরে রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কীর্তনখোলা নদীতে ভাসান সম্ভব হয়েছে। বিকেলের ভরা জোয়ারে বিআইডব্লিউটিএ’র টাগ ‘নির্ভীক-’এর সহায়তায় নৌযানটিকে চর কাউয়ার নদী কিনারা থেকে মূল চ্যানেলে ভাসান সম্ভব হয়। ফলে আজ সন্ধ্যায় পিএস মাহসুদ ফিরতি ট্রিপে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার বরিশাল অফিসের এজিএম।
শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পিএস মাহসুদ আজ প্রত্যুষে বরিশাল বন্দরের অপর পাড়ের চরকাউয়া এলাকায় নদী তীরে উঠে যায়। এজন্য চালকের অদক্ষতা উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন সাধারণ যাত্রী সহ প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে দুর্ঘটনার পরে নৌযানটির উদ্ধার তৎপরতা ছিল সীমিত। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দুর্ঘটনা কবলিত নৌযানটি উদ্ধারে বিআইডব্লিউটসি কর্তৃপক্ষ ভরা জোয়ারের অপেক্ষা করছিলেন। পরবর্তীতে বিআইডব্লিউটিএ’র কাছ থেকে টাগ সংগ্রহের করে নৌযানটি উদ্ধারে তৎপর হন কর্তৃপক্ষ। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মাহসুদ’কে কীর্তনখোলার কিনারা থেকে মূল চ্যানেলে টেনে নামায় বিআইডব্লিউটিএ’র টাগ ‘নির্ভীক’।
দুর্ঘটনায় নৌযানটির ক্ষয়ক্ষতি প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। সংস্থার পরিচালক কারিগরি পিএস মাহসুদ-এর তলা ও খোলের সব দিক নিবিড় পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে বরিশালে সংস্থার মেরিন কর্মকর্তাকে গতকাল এখানে পাওয়া যায়নি। গতকালের দুর্ঘটনা নিয়ে গত এক মাসে পিাএস মাহসুদ ৩বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ল বলে স্বীকার করেছেন সংস্থার দায়িত্বশীল মহল।
নৌযানটিতে ভ্রমণরত প্রায় ৪শ যাত্রী আটকা পরলেও বরিশালের গন্তব্যের যাত্রীরা সকলেই নৌকা ও ট্রলারে করে নেমে গেলেও ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের যাত্রীরা আটকা পরে। এদের মধ্যে দুজন বিদেশীও ছিলেন। বেলা বাড়ার পরেও মাহসুদ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসায় সংস্থার বরিশাল অফিস থেকে আটকে পড়া যাত্রীদের টিকেট মূল্য ফেরত দেয়া হয়। তবে তাদের গন্তব্যে পৌছার কোন ব্যবস্থা হয়নি।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার সদরঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে পিএস মাহসুদ চাঁদপুর হয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। আজ সকাল ৫টার দিকে নৌযানটি বরিশাল বন্দরে ভেড়ার জন্য অপর পাড়ে চরকাউয়া এলাকায় বামে মোড় ঘোরার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। চালকের ভ’লে নৌযানটি ১৮০ডিগ্রী ঘুরে কীর্তনখোলা নদীর অপর পাড়ের ভাঙন এলাকায় পূর্ণ গতিতে কিনারায় সিসি ব্লকের ওপর উঠে যায়। বিকট শব্দের সাথে সজোরে নৌযানটি কিনারায় ধাক্কা লাগায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অনেক কেবিন যাত্রী বিছানা থেকে পড়েও যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুর্ঘটনার সময় নৌযানটির হুইল হাউজে দ্বিতীয় মাস্টার-এর নেতৃত্বে হুইল সুকানি এবং বিআইডব্লিউটিএ’র দিক নির্দেশনাকারী পাইলটও ছিলেন।
তবে দুর্ঘটনার ব্যাপারে নৌযানটির প্রথম মাষ্টারের দাবী ঘন কুয়াশার কারণে চালক দিক ভুল করায় নদী কিনারায় জাহাজটি উঠে গেছে। কিন্তু দুর্ঘটনা কবলিত স্থানের একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবী দুর্ঘটনার সময় ঐ এলাকায় কোন কুয়াশা ছিলনা। পুরো নদী ও এর কিনারা সহ অপর পাড়ে বরিশাল বন্দরের সব কিছুই তখন দৃশ্যমান ছিল।
এব্যাপারে বিআইডব্লিউটসি’র পরিচালক-কারিগরি জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কারো বিরুদ্ধে অদক্ষতা এবং দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিললে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।