Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হারিয়ে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের সৌন্দর্য্য

চারদিকে ধু-ধু বালুচর

চিলমারী(কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:০৩ পিএম

রংপুর বিভাগ অধিনস্ত কুড়িগ্রাম জেলা নদ নদী দ¦ারা বেষ্টিত প্রাকৃতির পরিবর্তনে ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদ-নদী নাব্য হারিয়ে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। নদীর বুক এখন খাঁ খাঁ করছে। শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে কৃষি জমিতে যে সেচ দেয়া হয় তা এখন প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। প্রভাব পড়ছে কৃষি, মাছ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর। ফলে শতশত জেলে পরিবার নিদারুণ অন্নাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে এক সময়ের প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ কয়েকটি নদ নদী। শুষ্ক মৌসুমে নদের পানি একেবারেই কমে যায়। এতে নদের দুই পাশের শত শত জমি অনাবাদি হয়ে থাকে। পানি শূন্য নদে মাছ ধরতে না পেরে জেলেরা পড়েছেন নিদারুণ কষ্টে। নদ, নদীর এ বৈরী আচরণে অনেক জেলে পরিবার তাদের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে জীবন- জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। আর প্রকৃতি হারাচ্ছে তার আপন সৌন্দর্য। এমনকি বিভিন্ন চরে নানা ধরনের সবজি আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চর অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক।
জানা গেছে, ভারতের আসাম রাজ্য হয়ে বাংলাদেশ অংশের কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, উলিপুর হয়ে রৌমারী রাজিবপুর এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, সোনাভরি, হলহলিয়া, দুধকুমার, বুড়ি তিস্তসহ ১৬টি ছোট-বড় নদী। পানিশূন্য হয়ে ব্রহ্মপুত্রসহ প্রমত্তা এই নদীগুলোর অস্তিত্ব এখন বিলীন হতে চলেছে। এলাকার প্রধান ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদী এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে। খর¯্রােতা ব্রহ্মপুত্র নদী নাব্য হারিয়ে সংকুচিত হয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে, কোথাও হাঁটুপানির নদীতে পরিণত হয়েছে, শুকিয়ে যাওয়া নদীর বুকে জেগে উঠেছে ধু-ধু বালুচর। ফলে বিভিন্ন নৌপথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। নদীর ওপর নির্ভরশীল মাঝি মাল্লাসহ কর্মজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়েছে তাদের রুজি-রোজগার। ফকিরেরহাট কাচকোঁল এলাকার জেলে চন্দ্র দাস (৪৫) বলেন, ‘বাহে, এই নদীত সারা বছর মাছ ধরি ছাওয়া-পোওয়া নিয়ে সংসার খরচ চলাং। এই মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে যায় ফলে খুব কষ্ট হয় সংসার চালাইতে। ব্রহ্মপুত্র নদীপারের সোনারী পাড়ার লিপু, নুরআমিন, বড়চরের মাহফুজার, ইউছুফ জানান, নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সেচ কাজে পানি সংকটসহ নদী পদ পরির্বতনসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে আবার অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে আর ভারতের সব বাঁধ খুলে দেয়ায় শুকনো নদীগুলো পানিতে ভরে দুই কূল ভাঙ্গতে থাকে, প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ আবাদি জমি ও এলাকা। ফলে নদীপারের মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়, ভেঙ্গে যায় মানুষের সাজানো ঘরসংসার, জমিজিরাত ও ফসল। এ ভাঙ্গনে শত শত মানুষ হয় গৃহ হারা ভূমিহীন। এ বিষয়ে সচেতন মহলের সাথে কথা হলে তারা বলেন নদী দ্রূত খনন করা হলে নদী ফিরে পাবে তার সৌন্দর্য্য সেই সাথে নৌ-বন্দরের কাজ সম্পূর্ন করা হলে শ্রর্মীক গন ফিরে পাবে তার কর্মস্থল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ