Inqilab Logo

বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নোয়াখালী সদরের কাদিরহানিফ ইউনিয়নে কলেজছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারন, এক আসামীর বিদেশ গমনের চেষ্টা

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৩:২৭ পিএম

নোয়াখালী সদর উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে নিজ কলেজ সহপাঠির সাথে কথা বলা অবস্থায় (১৯) এক কলেজ ছাত্রীকে জোর পূর্বক আটক করে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারন করেছে সন্ত্রাসীরা। পরে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে।
একই সাথে ওই তিন যুবকের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছে ছাত্রীর সহপাঠি। অশ্লীল ছবিও ধারন করা হয়েছে তার। ঘটনায় নির্যাতিতা ওই ছাত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করলেও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে অভিযুক্ত তিন আসামী। উপরোন্ত প্রতিনিয়ত আসামীরা বিভিন্ন মাধ্যমে নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে মামলার ৩নং আসামী রায়হান বিদেশ গমনের চেষ্টা করার খবর পেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রবিবার সকালে সরজমিনে নির্যাতিতার বাড়ীতে গিয়ে ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজের ¯œাতক দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কৃষ্ণরামপুর গ্রামে তাদের বাড়ী গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে তার সহপাঠী (২০) এর সাথে দাড়িঁয়ে পরীক্ষার সাজেশনের বিষয়ে কথা বলছিল। এসময় বাড়ীতে তার ছোট ভাই থাকলেও মা-বাবা আত্মীয়ের বাড়ীতে ছিলেন। এশার নামাজের আজান হওয়ায় তার ছোট ভাই বাড়ীর পাশ^বর্তী একটি মসজিদে নামাজ পড়ে যায়। এরকিছুক্ষণ পর পুলক মজুমদার, আকবর হোসেন ও রায়হান উদ্দিন এসে ওই ছাত্র-ছাত্রীর সাথে টানা হেঁচড়া শুরু করে। এক পর্যায়ে ওই তিনজন তাদের ধাক্কা দিয়ে ছাত্রীর ঘরের ভিতরে নিয়ে যায়।

নির্যাতিতা ছাত্রীর অভিযোগ, ঘরের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার পর রায়হান তার সহপাঠিকে তাদের রান্নার কক্ষে ও পুলক এবং আকবর ঘরের ভিতরের কক্ষে তাকে নিয়ে যায়। ওই কক্ষে গিয়ে প্রথমে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও পরে জামা কাপড় খুলে বিবস্ত্র করে তাদের সাথে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। এসময় পুলক ও আকবর তার কাছে ৫০হাজার টাকা দাবী করে অন্যথায় তার এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিন্তু ওইছাত্রী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পুলক ও আকবর তাকে গণধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এরইমধ্যে ছাত্রীর গোংরানিতে পাশের সড়ক দিয়ে যাওয়া লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্ত তিনজন পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় নির্যাতিতা বাদী হয়ে শনিবার রাতে পুলক, আকবর ও রায়হানকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর পুলক মজুমদারের বড় ভাই সুজন মজুমদার রাত ১২টার দিকে তাদের বাড়ীতে এসে জোর পূর্বক নির্যাতিতা ছাত্র-ছাত্রীকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর থেকে আসামীরা বিভিন্ন ভাবে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের লোকজনকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

সুধারাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন বলেন, ওইছাত্রীর দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামীকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। অপরদিকে মামলার তিন নং আসামী বিদেশ গমনের সংবাদ পেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ