Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই - বেফাক

প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সন্ত্রাস,জঙ্গিবাদ ও নৈরাজ্যের কোনো স্থান ইসলামে নেই। জিহাদের নামে ভ্রান্ত সন্ত্রাসবাদ,নৈরাজ্যবাদ ও জঙ্গিবাদ যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করতে হবে। সন্ত্রাস,নৈরাজ্য ও মানুষ হত্যার কোনো বিধান ইসলামে নেই। ইসলাম পবিত্র জিহাদের মাধ্যমে সন্ত্রাস,নৈরাজ্য,জঙ্গিবাদ ও হত্যাসহ সকল অন্যায় অশান্তি দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে ছিল। আর ইহাই ছিল রাসূল সা.আদর্শ। ইসলামী জিহাদে নিরিহ মানুষ শিশু-বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও নারী হত্যার কোনো বিধান নেই। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জিহাদের নামে যারা সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছে তাঁরা অর্থলোভী ভ্রান্তমতবাদী বিশ্বাসী হয়ে জান্নাতে যাওয়ার প্রত্যাশায় ইসলাম বিরোধী জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়ে মূলত বিপথগামী হচ্ছে। সন্ত্রাস-জঙ্গি ও নৈরাজ্য প্রতিহত করতে হলে এদের মাস্টারমাইন্ড,অর্থদাতা এবং সাহায্যকারীদের চিহ্নিত করে এদের নির্মূলে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে এবং এদের পিছনে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের সঠিক তথ্য উদঘাটন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সন্ত্রাসবাদ,জঙ্গিবাদ ও নৈরাজ্যবাদ এর মত ভ্রান্ত পথ থেকে অজ্ঞ ও সরল মনা যুব সমাজকে ফেরাতে শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে।
বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর উদ্যোগে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এর বিরুদ্ধে আজ ঢাকা সদরঘাট থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত দীর্ঘ ৪০ কি.মি.নিরবচ্ছিন্ন ঐতিহাসিক মানববন্ধনের জাতীয় প্রেসক্লাব পয়েন্টে সমবেত সহস্রাধিক মাদরাসা ছাত্র-শিক্ষক-ও তওহিদী জনতার উপস্থিতিতে দেশের প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম তাদের বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। মানববন্ধনে ৯টি পয়েন্ট নির্ধারিত ছিল-সদরঘাট,কাকরাইল মোড়,মালিবাগ,রামপুরা ব্রিজ,নতুনবাজার, কুড়িল বিশ্বরোড, এয়ারপোর্ট ও জয়দেবপুর চৌরাস্তা পয়েন্ট। এছাড়াও বেফাকের মানববন্ধন কর্মসূচী অনুস্মরণে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন পালিত হয়। মূল মানববন্ধন চলাকালে বিভিন্ন শ্লোগানে শ্লোগানে আকাশ-বাতাস ছিলো মুখরিত।
বেফাকের সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটি’র আহবায়ক আল্লামা নূর হোসেন কাসেমী সভাপতিত্ব করেন। বেফাকের সহকারী মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক এর পরিচালনায় ঢাকা মহানগর মূলপয়েন্ট জাতীয় প্রেসক্লাব সামনে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বেফকের সিনিয়র সহ-সভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী মা.দা,বেফাক মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জাব্বার জাহানাবাদী,জামিয়া মুহাম্মদিয়া’র প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম,জামিয়া নূরীয়া কামরাঙ্গীরচর প্রিন্সিপাল মাওলানা আতাউলল্লাহ হাফেজী,মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী,বেফাকের সহকারী পরিচালক মাওলানা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী,জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগের প্রিন্সিপাল মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী,মারকাজুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি তৈয়ব হোসাইন,জামিয়া কাসিমিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব,আল ইহসান মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী,জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার ভাইস-প্রিন্সিপাল মাওলানা নাজমুল হাসান,আশরাফুল উলুম বরকাটা মারদাসার সদরোল মুদাররিসিন মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী,বরকাটা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সাইফুল ইসলাম,লালবাগ মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি ফয়জুলল্লাহ,জামিয়া দারুল উলুম নতুনবাগের প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহিউদ্দীন ইকরাম,জামিয়া ইসলামিয়া ওয়াহিদিয়ার মাওলানা আতাউলল্লাহ আমিন। উপস্থিতি ছিলেন মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান,মাওলানা জসিম উদ্দিন,মাওলানা মুফতি মনির হোসাইন,মাওলানা আহলুলল্লাহ ওয়াসেল,মুফতী এ বি এম শরীফ উলল্লাহ,মাওলানা আরিফুর রহমান,মাওলানা আলতাফ হোসাইন,মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল,মাওলানা তোফায়েল গাজালী,মাওলানা ফয়সাল আহমদ,মুফতি ফখরুল ইসলাম। এছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন মাদরাসার দায়িত্বশীলগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মানববন্ধনে বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করেন মুফতি নূরুল আমিন,মাওলানা হাবিবুলল্লাহ মিয়াজী,মাওলানা আলমগীর,মাওলানা আনোয়ার শাহ,মাওলানা আবু মূসা,মাওলানা আবুল হাসান,মাওলানা মকবুল হুসাইন,মাওলানা লোকমান মাজহারী,মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম,মাওলানা মুহাম্মদ শফী,মাওলানা আনিসুর রহমান,মুফতি লেহাজ উদ্দীন ভূইয়া,মাওলানা জাকির হুসাইন প্রমুখ।
এছাড়াও মাওলানা আব্দুলল্লাহর নেতৃত্বে সাভারে,মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরীর নেতৃত্বে নরসিংদীতে,মুফতি আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে,মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফীর নেতৃত্বে হবিগঞ্জে,মাওলানা সেখান্দর আলী ও মাওলানা আব্দুল হক কাউসারী নেতৃত্বে পটুয়াখালীতে,মাওলানা উসমান গণীর নেতৃত্বে ঝিনাইদহে,মাওলানা আনোয়ারুল করিমের নেতৃত্বে যশোরে,মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুরের নেতৃত্বে মুন্সিগঞ্জে,মাওলানা আব্দুল বারী ধর্মপুরীর নেতৃত্বে মৌলভীবাজারে,মাওলানা আনোয়ার শাহ এর নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জে,মাওলানা আব্দুল রহমান হাফেজ্জি ও মাওলানা আব্দুল হক এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহে,মাওলানা শাহাদাত হুসাইনের নেতৃত্বে রাজশাহীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আ ল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন,সন্ত্রাসের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ করে তাদের ইহকাল ও পরকাল বরবাদ। এরা ইহুদীবাদী সাম্রাজ্যবাদীদের এজেন্টে। তিনি বলেন,ইসলামের চিন্তা চেতনা বাস্তবায়িত হলে সন্ত্রাসবাদ দূর হবে। তাই শিক্ষাসকলস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশ ও মানুষের ক্ষতি হয় এমনকাজ ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিতরা করতে পারে না।
আ ল্লামা আশরাফ আলী বলেন,ইসলামী শিক্ষা,মানবতা ও দয়া-মায়া শিক্ষাদেয়। ইসলামী শিক্ষা থাকলে সন্ত্রাস ও জঙ্গি,নৈরাজ্য থাকতে পারে না। একমাত্র ইসলামী শিক্ষাদিয়েই সন্ত্রাস,জঙ্গি ও নৈরাজ্যবাদ নির্মূল করা সম্ভব।
মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদী বলেন,সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হয়েছে ধর্মহীনতা থেকে। শিক্ষার সর্বক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেই সন্ত্রাস দমন করা সম্ভব। যারা কওমি মাদরাসায় জঙ্গিবাদের স্থান খুঁজে তারা মূলত বোকাস্বর্গে বাস করছে। আজকের মানববন্ধন এটাই প্রমাণ করে।
মাওলানা আবুল কালাম বলেন,আজকের ঐতিহাসিক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন আবার প্রমাণ করল কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও আলেম ওলামারা কোন ধরনের জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত নয়। বরং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বদা সোচ্চার ছিল,আছে,থাকবে।
মাওলানা আতাউলল্লাহ হাফেজ্জী বলেন,পবিত্র কোরআনের পর্মূলা অনুযায়ী কাজ করলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থাকবে না। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারকে পবিত্র কোরআনের পর্মূলা অনুস্মরণ করে শিক্ষাব্যবস্থায় তা বাস্তবায়ন করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ