পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719609600](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের অবস্থা ভালো না বলেই পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা নাটক করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের মাফিয়াতন্ত্র দেশে-বিদেশে উন্মোচিত হওয়ার পর তাদের ঘরে-বাইরে মুখ দেখাতে না পেরে চক্রান্তে মেতে উঠেছে। আল জাজিরার পর ডয়েচে ভেলে এরপর আবার ‘দ্য ইকোনমিষ্ট’! রাষ্ট্রের সব গোপন অপকর্ম রাষ্ট্র হয়ে যাচ্ছে। বিদেশী গণমাধ্যমে বাংলাদেশ আজ আর কোনো রাষ্ট্র নয়, প্রজাতন্ত্র নয়, বৈদেশিক শক্তিনির্ভর এক মাফিয়াতন্ত্র মাত্র। অধঃপতিত এই পদ্ধতিতে নীতি, আদর্শ, প্রজ্ঞা বা দূরদর্শিতা নয়, বরং প্রতিহিংসাপরায়ণতা, হঠকারিতা ও অবিমৃষ্যকারিতাই এখন এই সরকারের চলার পথ প্রদর্শক। এখন সরকারের অবস্থা ‘দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ।’ চারিদিকে নানা কথাবার্তা, ফিসফাস শুনতে পাচ্ছে জনগণ।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের অবস্থা ভালো না। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা নাটক, রঙ্গ করছে। আবার নতুন করে গ্রেফতার, মামলা, হামলা, নিপীড়ণ, নিষ্ঠুর দমননীতি শুরু করেছে। জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নতুন নতুন ইস্যু তৈরী করছে। এর অংশ হিসাবে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নড়াইলের এক আদালত একটি মিথ্যা ও ভুয়া মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদ- দেয়। এরপর আমাদের মহান স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ব্রিগেড ফোর্সের অধিনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অর্জিত বীরত্বসূচক ‘বীর উত্তম’ পদক ছিনতাই করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সরকার। কোনটাতেই হালে পানি না পেয়ে হতাশ শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার সরকারের বন্য আক্রোশের কারসাজিতে জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রতীক দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে নড়াইলের বহুল আলোচিত আদালত।
তিনি বলেন, দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির ঘটনার মধ্য দিয়ে বর্তমান বিনা ভোটের প্রধানমন্ত্রী তাঁর জিঘাংসা পূরণের মুখোশ আরো একবার উন্মোচিত করলো। এই ঘটনায় পরিস্কারভাবে বোঝা যায় যে, আইন আদালত শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় এবং আওয়ামী লীগেরই একটি বর্ধিত প্রতিষ্ঠান। আওয়ামী কক্ষপথেই ঘুরপাক খাচ্ছে আইন আদালত। দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির ঘটনাটি কদর্য অমানবিকতা, নির্মমতা ও হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ। বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় তিন বছরের বেশী সময় বন্দী রেখে তাঁর নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী ইতিহাসের সকল বর্বর নির্যাতনকেও হার মানিয়েছে। আজ্ঞাবহ বিচার ব্যবস্থায় হাস্যকর ঘটনাও বটে। কি নির্লজ্জতা, ফ্যাসিবাদের নগ্ন উল্লাস !
বিএনপির এই নেতা বলেন, যে মিথ্যা মামলায় গতকাল বুধবার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের ২৩ আগষ্ট একই মামলায় একই আদালত রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছিল। এই আদালত ঘিরে আওয়ামী লীগ তাদের একটি মামলাবাজ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। সারাদেশে কিছু মামলাবাজ পুষে রেখেছে সরকার। যাদের কাজই হলো সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে মিথ্যা মামলা ঠুকে দেয়া। এদের মধ্যে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের শহীদ শেখ জামাল জাতীয় স্মৃতি পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আশিক বিল্লাহ। অপরজন জেলার কালিয়া উপজেলার চাপাইল গ্রামের মোঃ রায়হান ফারুকী ইমাম। আরেকজন আছে কথিত জননেত্রী পরিষদের সভাপতি ঢাকার রামপুরার মহানগর প্রজেক্ট এলাকার বাসিন্দা এ বি সিদ্দিকী নামের এক মামলাবাজ। যাদের পেশা মামলা করা। এই নিশিরাতের সরকারের আমলেই এই সমাজে এদের মতো অসংখ্য মামলাবাজ দালাল-ফড়িয়াদের জন্ম হয়েছে। গণবিচ্ছিন্ন গণশত্রুদের দুঃশাসনের বাইপ্রোডাক্ট হচ্ছে এই মামলাবাজরা। এই সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে এই ধরণের বিকারগ্রস্ত লোকরা প্রায়ই বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নামে উদ্ভট, বানোয়াট ও আজগুবি মামলা একের পর এক দায়ের করে যাচ্ছে। মিথ্যা-ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করার উদ্দেশ্য হলো সরকারের নেক নজরে থেকে আখের গুছিয়ে নেয়া।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রীর বক্তব্য নিয়ে নড়াইলে এক মামলাবাজ তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলো। অথচ আমরা যদি আইনের ভিত্তিতেও বলি তাহলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া কেউ কারো বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির মামলা করতে পারেন না। কিন্তু সেখানে মামলা হলো, গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে দুই দফা। মুক্তিযোদ্ধার তালিকা এখনো যোগ বিয়োগ হচ্ছে। কাটাছেঁড়া হচ্ছে। তাহলে ওনারা কি ভুল বলেছে ? আদালত কি এতোটা বেখবর হয়ে গেলো ?
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের বিপক্ষে কোন সত্য উচ্চারণ এবং সমালোচনা করলেই সেটা হয়ে যায় তাদের চোখে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। আর তাদের লোকজন বললে হয় দেশপ্রেম। আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান রনাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘৭১ এ যুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধার মোট সংখ্যা ছিলো ৮০ হাজার। এখন কিভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা আড়াই লাখ হলো ? এই ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা কারা ? এটা জাতি জানতে চায়।
রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দিয়ে এই মিডনাইট সরকার গায়ের জোরে দেশের আইন আদালতকে হাতের মুঠোয় নিয়ে সরকারের দুঃশাসনের বিরদ্ধে সোচ্চার বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ দেশের বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ আজ ভয়ঙ্কর সর্বনাশা বিপদের মুখে। প্রধানমন্ত্রীর চরম রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার হচ্ছেন তারা। তারই ধারাবাহিকতায় নড়াইলের আদালত সরকারের মনস্কামনা পূরণ করতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির ভুয়া, বানোয়াট ও সাজানো মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করা হয়েছে। গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করা হয়েছে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধেও। সরকারের চোখ রাঙানী ও প্রতিশোধপরায়ণতার ভয়ে দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা আজ নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। ন্যায়বিচারের ধারণা মানুষ ভুলে যেতে শুরু করেছে। আদালতকে আওয়ামী মাফিয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশীদারে পরিণত করা হয়েছে। আওয়ামী বিচারের শিকার হওয়ার ভয়ে গোটা জাতি আজ তটস্থ।
প্রধানমন্ত্রীর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব নিশ্চিত করার জন্যই তিনি পথের কাঁটা ভেবে চার বারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জুলুমের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি করেছেন। একদিকে শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ দেশনেত্রীকে হত্যার চক্রান্ত অন্যদিকে তাঁকে মানসিকভাবে দুর্বল করতে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় তিন বছরের বেশী সময় ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার গণ্ডিও ছাড়িয়ে গেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা ও জারিকৃত গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করেন। পাশাপাশি বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলাসহ গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মানহানির মিথ্যা মামলাসহ গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। অন্যথায় পরিণতি শুভ হবে না সতর্ক করে বলে, পৃথিবীর ইতিহাসে প্রতিহিংসার পরিণতি হয় অস্বাভাবিক। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করে রাজনৈতিক সমাধান হবে না, বরং দেশকে নিয়ে যাওয়া হবে চরম নৈরাজ্যের দিকে। দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে সকল জুলম-নিপীড়ণ-নির্যাতনের অবসান না হলে জাতীয়তাবাদী শক্তি হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।
ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলামকে গ্রেফতারের বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ছাত্রদল-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে গতকাল রাত পৌনে দশটার দিকে রাজধানীর কাঁটাবন এলাকা থেকে আটক করেছে পুলিশ। মাফিয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের সমালোচনায় দেশ-বিদেশের মানুষ আজ সোচ্চার। সরকার আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে, তাই তারুণ্যের শক্তির যাতে উত্থান না ঘটে সেজন্যই রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাকিবকে গ্রেফতার করার পুলিশের এই হীন বর্বরতার উদ্দেশ্যই হচ্ছে-ছাত্র সমাজের আন্দোলনকে দুর্বল করার অপচেষ্টা মাত্র। কিন্তু সরকারের এই অপচেষ্টা কখনোই সফল হবে না, বরং ছাত্র সমাজ আরও ফুঁসে উঠবে। আমি রাকিবকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।
জেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব শ্যামল মিল্কী, ইটনা উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আবেদ খান, রায়টুটি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খান মিল্কী এবং উপজেলা ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা নাজিম উদ্দিনসহ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ১০৯ জন নেতাকর্মীকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মিথ্যা অভিযোগে এত জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নামে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো নজীরবিহীন ঘটনা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি উল্লিখিত অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং তাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।