দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
আল্লাহ তায়ালা পরম দয়ালু ও দয়াময়। তার দয়ার কোনো সীমা রেখা নেই। মহান আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি জগতের প্রতি অসংখ্য দয়া এবং করুণার মধ্যে অন্যতম হলো মানবজাতির জন্য দয়ার সাগর রাহমাতুল্লিল আলামিন (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে প্রেরণ। তিনি পৃথিবীতে আগমণ করেই আপন উম্মতের কল্যাণ কামনায় সর্বদা ব্যাকুল থাকতেন। বাল্যকালে হারবুল ফিজার নামক অন্যায় সমর খুব কাছ থেকে দেখার কারণে তিনি যারপরনাই ব্যথিত হয়েছিলেন। এই যুদ্ধ থেকে জাতিকে বাঁচাতে শান্তির রাস্তা খোঁজা শুরু করলেন তিনি। পরবর্তীতে শান্তিকামী কিছু যুবকদের নিয়ে আরবে যুদ্ধ ও কলহপ্রিয় মানুষগুলোর সামনে উপস্থাপন করেন শান্তির এক নতুন মডেল ‘‘হিলফুল ফুযুল’’। মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও দয়া প্রদর্শনের দায়িত্ব নিয়ে কিছুৃ লক্ষ্য স্থির করলেন, হিলফুল ফুযুলের। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো আর্তের সেবা, অত্যাচারিতকে সাহায্য করা, শান্তি শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। দিন দিন আরবের লোকরা শান্তির নীড় খুঁজে পাচ্ছে প্রিয় নবির সান্নিধ্যে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি । (সূরা আম্বিয়া-১০৭)
নবুয়ত প্রকাশের দশম বর্ষে মহানবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দ্বীনের দাওয়াত দিতে তায়েফ গমন করেন। কিন্তু তায়েফবাসী দাওয়াত গ্রহণ করার পরিবর্তে নবিজীকে কঠিন ভাবে জবাব দিয়েছিল। ওরা দুশ্চরিত্র কিছু ছেলেদেরকে উষ্কিয়ে দিয়েছিল যে, তার প্রতি পাথর নিক্ষেপ করুক ও তার সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করুক। ঐ জালিমরা প্রিয় নবিকে পাথর নিক্ষেপ করেছিল। প্রিয় নবির শরীর মোবারক রক্তে রঞ্জিত হলো। হযরত যায়দ ইবনে হারিসা (রাঃ) তার সফর সঙ্গী ছিলেন। মহানবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে রক্ষা করতে গিয়ে তার সমস্ত মাথা আঘাতে জর্জরিত হয়েছিল।
একদিন হযরত আয়েশা (রাঃ) প্রিয় নবিকে বললেন, আপনি জীবনে উহুদ যুদ্ধের দিনের চাইতে কঠিনতম কোনো দিন কী এসেছিল? নবিজী বললেন, আকাবার দিন তোমার সম্প্রদায় থেকে যে কষ্ট আমি পেয়েছিলাম তা ছিল আমার জন্য সবচেয়ে কঠিনতম মুহূর্ত। আমি সেদিন আবদে ইয়ালিল ইবনে আবদে কুলালের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করেছিলাম। তারা আমার ডাকে সাড়া দিলনা। আমি সেখান থেকে অত্যন্ত চিন্তিত ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ফিরে আসার পথে ‘‘কারনুস সাআলিব” নামক স্থানে পৌছে কিছু স্বস্তি পেলাম। হঠাৎ মাথা উঠালাম তখন দেখলাম একখন্ড মেঘ আমার উপর ছায়া দান করছে। এর মধ্যে হযরত জিবরাইল (আঃ) সেখান থেকে আওয়াজ দিলেন, আপনার সস্প্রদায় আপনার কথার যে উত্তর দিয়েছে আল্লাহ তায়ালা তা শুনেছেন। এ সময়ে আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য পাহাড়ের ফেরেশতা প্রেরণ করেছেন। আপনি যা ইচ্ছা নির্দেশ দিতে পারেন। পাহাড়ের ফেরেশতা আমাকে সালাম জানিয়ে বললেন, হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমি পাহাড়ের ফেরেশতা, পাহাড় সূমহ নিয়ন্ত্রন করি। আল্লাহ আমাকে আপনার নিকট প্রেরণ করেছেন। আপনি যা ইচ্ছা আমাকে নিদের্শ দিতে পারেন। যদি আপনি আমাকে আদেশ দেন দুই পাহাড় একত্রিত করে দিই যাতে এ সমস্ত্য মানুষগুলো পিষ্ট হয়ে যায়। দয়ার নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করলেন, না আমি আল্লাহর নিকট আশা করি যে, আল্লাহ ওদের বংশে এমন মানুষ সৃষ্টি করবেন যারা শুধু আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তার সাথে কাউকে শরিক করবে না। (সহীহ্ বুখারী-৩২৩১)
রাসুলের পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু, কোমল, ক্ষমাশীল ও পরস্পরের মধ্যে দয়া প্রদর্শনকারী। কেননা এমন গুণগুলো বিশ্ববাসী শুধুমাত্র রাহমাতুল্লিল আলামিনের কাছেই পরিপূর্ণভাবে পেয়েছিল। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন- তারপর সে তাদের দলভুক্ত হয়েছে যারা ইমান এনেছে, একে অন্যকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পর দয়া দেখানোর উপদেশ প্রদান করেছে। আর তারাই বরকতের অধিকারী (সূরা বালাদ, ১৭-১৮) । মানুষের কল্যাণ লাভের জন্য দয়া প্রদর্শন করা কত যে গুরুত্বপূর্ণ তা স্বয়ং রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাদিসের মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। হযরত নু’মান বিন বশির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে মানুষের প্রতি দয়া করে না আল্লাহ তাকে দয়া করেনা। তিনি আরো বলেন “দয়া প্রদর্শন, প্রেম-ভালেবাসায়, মায়া-মমতায় এবং একের সাহায্যে অন্যের ছুটে আসাকে ইমানদারগণ তাদের দেহের সমতুল্য করে দেখবে। যেমন দেহের কোনো অঙ্গ ব্যাথা হলে পুরো দেহটাই অনিদ্রা ও জ্বরে তার শরীক হয়ে যায়। (বুখারী- ২৫১৭)।
দয়া প্রদর্শন ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। আর ভ্রাতৃত্ব হলো শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার মূলভিত্তি। সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে প্রিয় নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মানুষের প্রতি কষ্ট দেয়াকে কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন- প্রকৃত মুসলিম হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার জিহবা ও হাত থেকে অপর মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে।(সহীহ বুখারী- ৬৪৮৪, সহীহ মুসলিম-৪০)।
হযরত ওসামা বিন যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা নবিজীর মেয়ে তার কাছে খবর পাঠাল যে, আমার ছেলে মারা গেছে, আপনি আমাদের কাছে আসুন। আসার পর ছেলেটিকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে তুলে ধরা হলো। তখন তার দুচোখ অশ্রু প্লাবিত হয়ে পড়ল, মন আস্থির হয়ে উঠল। তখন হযরত সা’দ (রাঃ) জিজ্ঞাসা করেলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটা কী? তিনি বললেন, এটা সেই দয়া যা আল্লাহ স্বীয় বান্দার হৃদয়ে তৈরি করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ দয়াবান বান্দাদেরকেই দয়া করেন। (বুখারি)
সহিহ বুখারির অপর বর্ণনায় রয়েছে ছেলে ইবরাহিমের অন্তিম অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার কছে যান। তখন তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু নামতে শুরু করে। এই দৃশ্য দেখে হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) বললেন, ইয়া-রাসুলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনিও কাদঁছেন? নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, হে ইবনে আউফ! এটি হলো রহমত বা দয়া। অতঃপর তিনি বলেন নয়ন অশ্রু সিক্ত, হৃদয় ব্যথিত, তবে আমরা সুধু তাই বলবো যাতে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন। হে ইবরাহিম তোমার বিচ্ছেদে আমরা খুবই কাতর। (সহীহ বুখারী-১২২০)।
খাদেমে রাসুল হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি দশ বছর পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর খেদমত করেছি। আমি তখন ছোট ছিলাম। তাই সবকাজ আমি তার মনের মতো করতে পারতাম না। তবুও তিনি কখনো আমাকে একথা বলেননি যে, তুমি এরূপ কেন করলে? কিংবা এরূপ কেন করলে না? (সহীহ বুখারী-৫৬৯১)।
ইসলাম শান্তির ধর্ম। এতে কোন রকম সহিংসতা, শটতা ও গোড়ামীর স্থান নেই। ইসলামের মধ্যে সকল ধর্মের, সকল গোত্রের ও সকল বর্ণের মানুষের শান্তির কথা বিবৃত আছে। কেউ অপরাধ করলে তাকে কর্ম পরিমান শাস্তি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। শাস্তি প্রয়োগ হলে তাকে বদদোয়া করার কোনো বৈধতা নেই। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট এক মদ্যপ ব্যক্তিকে আনা হলো। নবিজী লোকদেরকে বললেন, একে প্রহার কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ তাকে হাত দিয়ে, কেউ জুতা দিয়ে, কেউ কাপড় দিয়ে মদ্যপ ব্যক্তিটিকে প্রহার করল। লোকটি মার খেয়ে কোন মতে চলে গেল। তখন এক ব্যক্তি তাকে বদদোয়া দিয়ে বলল, আল্লাহ তোমাকে হেয় ও অপদস্ত করুক। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এভাবে বলো না এবং একথা বলে তার উপর শয়তানকে প্রবল করিও না। বরং বলো, আল্লাহ তোমাকে মাফ করুক, তোমার উপর দয়া করুক।(আবু দাউদ)
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোনোদিন কোন স্ত্রীকে প্রহার করেননি। কখনো কোনো খাদেমকে মারেননি এবং কারো উপর তার হাত কখনো তোলেনি। তবে তিনি যখন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে বের হতেন তার কথা আলাদা। আর এমনও কখনো হয়নি যে, কেউ তাকে কষ্ট দিয়েছে এবং তিনি তার প্রতিশোধ নিয়েছেন। তবে কেউ দীনের বিধিবিধান অমান্য করতো তিনি তার প্রতিশোধ গ্রহন করতেন।
অন্যধর্মের লোকেরাও প্রিয় নবির দয়া থেকে বঞ্চিত হয়নি। নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যদি কোন মুসলিম কোনো অমুসলিম নাগরিকের উপর নিপীড়ন চালায়, তার অধিকার খর্ব করে তার উপর সাধ্যাতীত বোঝা চাপিয়ে দেয় অথবা তার কোনো বস্তুকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় তাহলে কিয়ামতের ময়দানে আমি আল্লাহর আদালতে তার বিরুদ্ধে অমুসলিম নাগরিকের পক্ষাবলম্বন করব”।(আবু দাউদ-২৫০৩)।
কেউ কোনো কিছু চাইলে নবিজী (---) কখনো না বলতেন না। এমনকি চরম শত্রুদের কাছ থেকে আগাত পেলেও তাদের প্রতি দয়া ও মহানুভবতা দেখাতে ভুলতেন না। হাদিসে রয়েছে, রাসুলুল্লাহ (--) মক্কা বিজয়ের যুদ্ধ করেন। এরপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে হুনায়নের যুদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে আল্লাহ তায়ালা তার দীনের এবং মুসলমানদের সাহায্য করেন। সেই দিন রাসুলুল্লাহ (--) সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া (কুরাইশ নেতা) কে একশত উট দান করেন। এরপর একশত উট, পুনরায় আরো একশত উট দান করেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যিব (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, সাফওয়ান (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! রাসুলুল্লাহ (---) আমাকে দান করলেন এবং এতো পরিমান দান করলেন যে ইতিপূর্বে তিনি আমার কাছে সবচেয়ে নিম্ন প্রকৃতির লোক ছিলেন। অতঃপর তিনি আমাকে অবিরাম দান করতে থাকলেন এমনকি তিনি আমার নিকট সবচেয়ে পছন্দের লোক হয়ে গেলেন। (সহীহ মুসলিম-২৩১৩)।
মহানবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দয়া ও মহানুভবতা প্রদশর্নের মাধ্যমে ইসলামের অনুসারী দিন দিন ছড়িয়ে পড়েছিল। যে কেউ তাকে একবার দেখেছেন তিনি মুগ্ধ হয়ে যেতেন। হযরত জাবের (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আমার রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে ‘জাতুর রিকা’ অভিযানে ছিলাম। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি বড় বৃক্ষের নিচে আরাম করা অবস্থায় এক মুশরিক নবিজীকে একা পেয়ে তরবারি নিয়ে শিয়রে দাড়িয়ে গেল। সে বলল কে আপনাকে আমার হাত থেকে বাচাঁবে? তিনি বললেন- আল্লাহ। সঙ্গে সঙ্গে মুশরিকটির হাত থেকে তরবারি পড়ে গেল। রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেটি তুলে নিলেন। এবার তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তোমাকে কে বাচাঁবে আমার হাত থেকে? সে বলল, আপনি উত্তম গ্রহনকারী হয়ে যান। নবিজী জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কী সাক্ষ্য দেবে যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই? সে বলল না। তবে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনার বিরুদ্ধে আমি লড়াই করব না এবং এমন লোকদের সঙ্গী হবনা যারা আপনার বিরুদ্ধে লড়াই করে। একথা শুনে নবিজী লোকটিকে ছেড়ে দেন। সে তার সঙ্গীদের নিকট বললেন, আমি একজন শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তির কাছ থেকে ফিরে এসেছি। (সহীহ বুখারী-২৯১০)।
বিখ্যাত সাহাবি হযরত মুআজ (রাঃ) ও আবু মুসা (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইয়েমেনে পাঠাচ্ছিলেন প্রশাসক মনোনীত করে। যাত্রাকালে তাদের দুইজনকে তিনি উপদেশ দিয়ে বললেন, সহজ করবে কঠিন করোনা, এবং সুসংবাদ দাও, তাদের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি করোনা ।(সহীহ বুখারী-৬১২৫) দুর্বল, অপেক্ষাকৃত নির্ভরশীল ব্যক্তিরা মহানবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে ভালোবাসা-দয়া পেত বেশি। রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমরা দূর্বলদের মাঝে আমাকে অন্বেষণ কর (অর্থাৎ তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শনের মাধ্যমে ) কেননা দূর্বলদের উসিলায় তোমাদের কে রিজিক দেওয়া হয় এবং তোমাদেরকে সাহায্য করা হয় (আবু দাউদ)।
সৃষ্টিজগত আল্লাহর, তারই নিদের্শ হলো “তুমি অনুগ্রহ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন” (সূরা কাসাস-৭৭)। অনুরূপ ভাবে রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কুরআনের ব্যাখ্যা হিসেবে চির আম্লান হাদিসে বলেন,“আল্লাহ তায়ালা দয়ালুদের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া কর তাহলে যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। রাহেম (দয়া) শব্দটি রহমান হতে উদগত। যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখে, আল্লাহ ও তার সাথে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহ ও তার সাথে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে। (তিরমিযি-১৯৩০)
লেখক : সহকারী শিক্ষক চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।