পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতিবছরের মতো আজ বুধবার দুই দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) এর ৪৪তম গভর্নিং কাউন্সিলের ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর গভর্নিং কাউন্সিলের সভা ইতালিস্থ রোমে ইফাদের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এবারই করোনা মহামারির কারণে প্রথম ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষ্যে গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ)-এর প্রেসিডেন্টের সাথে একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ সরকারের আট সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্য্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সমন্বয় ও নরডিক অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্টদূত এবং ইকোনমিক কাউন্সিলর অংশগ্রহণ করেন। ইফাদের পক্ষ থেকে ইফাদ প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হুংবো ও তার দল অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী ইফাদের প্রেসিডেন্টকে ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণ এবং ২য় বারের মত ইফাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। গত ১৩-১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সময়ে অনুষ্ঠিত ইফাদের ৪১তম গভর্নিং কাউন্সিল সভায় ইফাদ প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতির বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন। উক্ত কাউন্সিল অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করেন। এছাড়াও ইফাদের ৪২তম গভর্নিং কাউন্সিল অধিবেশনে অর্থমন্ত্রীর অংশগ্রহণের সময় ইফাদের প্রেসিডেন্টের সাথে তার সাক্ষাতকারের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) এর সদস্য পদ প্রাপ্তির পর থেকে বাংলাদেশে ইফাদের মোট ক্রমপুঞ্জিত বিনিয়োগের পরিমাণ ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের গ্রামীন অর্থনীতি তথা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য ইফাদ এর গুরুত্বপূরণ ভ‚মিকা রয়েছে। বাংলাদেশে ইফাদের কান্ট্রি প্রোগ্রামে অর্থায়নের পরিমাণ ৯৮৮ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, এরমধ্যে ইফাদ এর অবদান ৪১৫ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; জিওবি’র অবদান ১৩৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অবশিষ্ট অন্যান্য দাতা সংস্থার। ইফাদ এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩৪টি প্রকল্পে ঋণ ও অনুদান সহায়তা প্রদান করেছে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি তথা ১১ দশমিক ৭ মিলিয়ন পরিবার উপকৃত হয়েছে। ৩৪টি প্রকল্পের মধ্যে অদ্যাবধি ২৭ টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে এবং বাকী ৭টি প্রকল্প কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। উক্ত প্রকল্পসমূহে ইফাদ বিভিন্ন সহ-অর্থায়নকারী দাতাসংস্থা যেমন- বিশ্বব্যাংক, এডিবি, নেদারল্যান্ড, স্পেন এবং ডেনমার্কের মতো দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীর সাথে অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে ঋণ ও অনুদান সহায়তা প্রদান করেছে।
বাংলাদেশ ইফাদের রুরাল পুর স্টিমুলাস প্যাসিলিটি (আরপিএসএফ) এর আওতায় অনুদান সহায়তাপ্রাপ্ত প্রথম ৮টি দেশের মধ্যে একটি। করোনার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ইফাদের আরপিএসএফ এর আওতায় বাংলাদেশের ২৬ হাজার কৃষক পরিবারকে বাড়ির উঠোনে সবজি বাগান করার লক্ষ্যে ৯ লাখ ১৫ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এজন্য তিনি ইফাদকে ধন্যবাদ জানান। তিনি পাঁচ বছর মেয়াদী ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, এসডিজি এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলার লক্ষ্যে বাংলাদেশে ইফাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে ইফাদ ইতিবাচক ভ‚মিকা রাখবে বলে অর্থমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অর্থন্ত্রী বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন বিশেষ করে কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য ও সেবা খাতের উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। গ্রামীণ অর্থনীতি তথা কৃষি, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ও ক্ষমতায়ন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সমূহে ইফাদের অনুদান সহায়তা তথা সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, ভবিষ্যতে জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য জিইএফ, জিসিএফ এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী তহবিল হতে বাংলাদেশে অর্থায়নের জন্য ইফাদকে অনুরোধ জানান। ঢাকাস্থ বাংলাদেশের কান্ট্রি অফিসের সাংগঠনিক কাঠামো কলেবর বৃদ্ধি এবং পর্যাপ্ত জনবল বৃদ্ধিপূর্বক বাংলাদেশে ইফাদের প্রকল্প সহায়তা বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করেন।
ইফাদ প্রেসিডেন্ট আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।
পরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য ইফাদের প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানান। একই সঙ্গে নতুন মেয়াদে আগামী ৪ বছরের জন্য প্রেসিডেন্টকে পূনঃনির্বাচন বিষয়ে বাংলাদেশের সমর্থন ব্যক্ত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।