পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অনাচার-দুর্নীতি ও লুটপাটের তথ্য সব ভালভাবেই সংরক্ষিত আছে। এদের অপকর্মের বিচার হবেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, অভিনব সন্ত্রাসী কায়দায় ভোট ডাকাতির নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কে এম নুরুল হুদা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন। ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার অবিচারের কাহিনীর প্রধান খলনায়ক কে এম নুরুল হুদা সুষ্ঠু নির্বাচনকে লাশ বানিয়ে কফিনে পেরেক মেরে দিয়েছেন। অবৈধ ক্ষমতাসীনদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অত্যন্ত নিপুণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন ও সুষ্ঠু ভোটের শত্রু প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তার খয়ের খাঁ কতিপয় নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, যিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে রয়েছেন তিনি বিবেক যন্ত্রণায় ভুগতে ভুগতে এখন পদত্যাগের কথা বলছেন। তিনি যথার্থই বলেছেন-নির্বাচন ব্যবস্থা এখন গভীর খাদের কিনারে। গণতন্ত্রমনা বাংলাদেশীদের আত্মমর্যাদাকে ভুলুন্ঠিত করেছেন কে এম নুরুল হুদা।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে-এই সেই নুরুল হুদা যিনি স্বেচ্ছাসমর্পণমূলক আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিলেন। তার ওপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব তিনি সরকারের পদতলে অর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৯১ ই-ধারা (১ ও ২ উপ-ধারা অনুযায়ী) নির্বাচনে কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করে এবং তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের হাতে। অথচ কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন এই কমিশন তাদের সেই ক্ষমতা সরকারের কাছে বিলিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সুতরাং এই ঘটনায় প্রমাণিত হয়-প্রধান নির্বাচন কমিশনার কমিশনের দায়িত্ব নিয়েছেন সুষ্ঠু ভোট করার জন্য নয়, বরং শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা তাদের নিজেদের ক্ষমতাকে প্রয়োগ না করে শেখ হাসিনার পদলেহনেই ব্যস্ত রয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সব নির্বাচনে শেখ হাসিনার সিলেক্টেড প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এতটই আওয়ামী-বান্ধব যে, তিনি ঝড়-জলোচ্ছাস-বন্যা-করোনা কোনকিছুকেই গ্রাহ্য করেননি। আপনারা জানেন, করোনার সময় যশোর কেশবপুর পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডকে ‘রেড জোন’ ঘোষণার পরেও সেখানেও নির্বাচন করা হয়েছে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের অনুকুলে একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে কে এম নুরুল হুদা অস্থির হয়ে পড়েন। কারণ শেখ হাসিনাকে খুশী করার জন্য তিনি আত্মনিবেদিত। সুতরাং গণতন্ত্র, নির্বাচন, সুষ্ঠু ভোট এসব কে এম নুরুল হুদা সাহেব থোড়াই কেয়ার করেন। একতরফা নির্বাচন করার পরেও রক্তাক্ত সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনার কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুদিন আগেও মাদারীপুরের কালকিনীতে একজনকে পিটিয়ে হত্যা এবং চট্টগ্রামের পটিয়ায় আরেকজনকে হত্যা ও চারজনকে আহত করার ঘটনা এটি আওয়ামী সহিংস নির্বাচনের ধারাবাহিকতার আরেকটি দৃষ্টান্ত।
পৌরসভা নির্বাচনে আগের মতো ভোট ডাকাতি হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ঠাকুরগাঁও সদর পৌর নির্বাচনে নজীরবিহীন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘটিত হয়েছে। সেখানে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ভোটকেন্দ্র থেকে বের হতে না চাইলে তাদেরকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে। সেখানে সাধারণ ভোটারদেরকে জোর করে ধাক্কা দিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও প্রিজাইডিং অফিসার নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছে।
লক্ষীপুর জেলাধীন রামগতি পৌর নির্বাচনে ধানের শীষের এজেন্টদেরকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সাধারণ ভোটাররাও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে সাহস পায়নি। সেখানে কালো পর্দার বাইরে ইভিএম মেশিন স্থাপন করে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সীল মারতে বাধ্য করা হয়।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। সরকারী দল মনোনীত মেয়র প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর দ্বন্দ্বে সহিংসতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে সাধারণ ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে সাহস পায়নি।
এছাড়া ফুলপুর পৌর নির্বাচনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ব্যাপক দৌরাত্ব ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি। সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নরসিংদী জেলাধীন মাধবদী পৌর নির্বাচনে ধানের শীষের এজেন্টদের সব কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতায় গোপন কক্ষ থেকে ব্যালট বাক্স নিয়ে এসে ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করে প্রিজাইডিং অফিসার। পুলিশ বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে। এছাড়া নরসিংদী সদর পৌর নির্বাচন একতরফা করার জন্য বিএনপির বেশকিছু নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ফরিদপুর জেলাধীন নগরকান্দা পৌরসভা নির্বাচনে বহিরাগতরা দেশী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেয় এবং দেদারসে নৌকা প্রতীকে সীল মারতে থাকে। সেখানে আগে থেকেই নৌকা প্রতীকে সীল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখে।
রাজশাহীর নওহাট্টা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সব ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। ব্যালট বাক্স ছিল ৫টি, কিন্তু সেখানে তারা ব্যালট বাক্স করেছে ৯টা, অর্থাৎ তারা ৪টি ব্যালট বাক্স আগে থেকেই ভরে রেখেছিল।
রাজশাহীর তাহেরপুর পৌর নির্বাচনে ধানের শীষের সকল পোলিং এজেন্টকে মেরে বের করে দিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। প্রিজাইডিং অফিসার’রা নিজেরাই সীল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, চতুর্থ দফায় ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগের ধাপের নির্বাচনগুলোর মতোই এই নির্বাচনও ছিল আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দখলে। সব ভোটকেন্দ্রেই তাদের দৌরাত্ব ছিল আগের মতোই ব্যাপক নজীরবিহীন ও ভোটকেন্দ্রগুলো ছিল সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য। বর্তমানে ব্যাপক সন্ত্রাস, উদাহরণহীন অনিয়ম ও ভোট ডাকাতির যে নির্বাচন হচ্ছে, তা নিয়ে এক মহাকাব্য রচণা করা সম্ভব। অনাচারের ভোট নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার যে ঝড় উঠেছে সেটিকে পাত্তাই দেয় না নির্বাচন কমিশন। সরকার নিজস্ব অবয়বে গড়ে তুলেছে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং মাফিয়াচরিত্রের গভীর প্রভাব দেখা যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় নির্বাচন কমিশনারের আচরণে। সহিংস ভোট ডাকাতি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দ্বারা অনুপ্রাণিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।