পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ প্রতিদিনই বাড়ছে। বাড়ছে সরকারি টিকাদান কেন্দ্রে মানুষের ভিড় আর চাপ। এ কারণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোও প্রস্তুত হচ্ছে টিকা প্রদানের জন্য।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা দেশে গণহারে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর পর মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। প্রতিদিনেই দ্বিগুণ হারে বাড়ছে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা। সরকারি হাসপাতালের কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে চাপ। ভিড়ের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য সরকার টিকা কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন করার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
টিকা গ্রহীতাদের চাপ সামাল দিতে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে টিকাদান কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করছে সরকার। সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তারা সরকারের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে ২০টি প্রাইভেট মেডিকেল ও হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চাহিদা অনুসারে সরকার চাইলে এর সংখ্যা বাড়ানো হবে।
বেসরকারি হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে চিকিৎসা সেবার ৬০-৬২ ভাগ দিয়ে থাকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো। হাসপাতালগুলোতে টিকা দেওয়া শুরু হলে মানুষ আরো উৎসাহিত হবেন। ইতিমধ্যে বেসরকারি হাসপাতালে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। এখন সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
বেসরকারি হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রম শুরু বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে আমরা করোনা টিকা দেব। তারা আমাদের কাছ থেকে কিনে নিবেন। বিষয়টি আমরা প্রসেস করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়েছি। তাদের আমরা বেশি দেব না। ওরা চাচ্ছে তাই অল্প ভ্যাকসিন দেব। তাতে আমাদেরও লোড কম হবে। এসব টিকা শুধু ‘ভালো মানের’ হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজগুলোকে দেওয়া হবে। সেগুলো আমরা অনুমোদন করে দেব। তারাই শুধু ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) সভাপতি এম এ মুবিন খান বলেন, মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার আগ্রহ ব্যাপক বেড়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলো ক্রমবর্ধমান ভিড়ের কারণে অনেক চাপে রয়েছে। সরকারের পক্ষে একা এত বড় কার্যক্রম সামলানো সম্ভব না। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি। এখন সরকার অনুমোদন দিলে কার্যক্রম শুরু করতে পারব। সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিলে সেই টাকা নিয়ে টিকা প্রদান করা হবে। আর যদি সরকার আমাদের ফ্রি দেয়- তাহলে আমরা শুধুমাত্র সার্ভিস চার্জটা নেব।
করোনা টিকার দাম, টিকা নিতে গেলে কত খরচ পড়বে- এসব নিয়ে মানুষের মধ্যে টিকা আবিষ্কারের শুরু থেকে ব্যাপক আশঙ্কা ছিল। কিন্তু জনগণের সব দুশ্চিন্তা দূর করে সরকার সারা দেশে বিনামূলে এই টিকা প্রদান করছে।
সরকারের কাছে টিকার দামের বিষয়ে বেসরকারি মেডিকেল ও হাসপাতালগুলো কোন প্রস্তাবনা আছে কিনা- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করে দিবে আমরা সেভাবেই টিকা প্রদান করব। তবে সার্ভিস চার্জ বা মূল্য যেটাই নির্ধারণই হোক আমরা চাইব-সেটা যেন যৌক্তিক হয়। যেমন করোনা টেস্টের ক্ষেত্রে সরকার যেটা নির্ধারণ করে দিয়ে আমরা সেভাবেই নিচ্ছি। কোন সমস্যা হচ্ছে না। কবে নাগাদ এ কার্যক্রম শুরু হতে পারে-এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুরোটাই সরকারের উপর নির্ভর করছে। আমরা প্রস্তুত রয়েছি। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০টি হাসপাতালে টিকা কার্যক্রম শুরু করব। প্রয়োজনে বাড়ানো হবে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে টিকা কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়ে এম এ মুবিন খান বলেন, আপনারা জানেন আমাদের দেশের অনেক সম্পদশালী ব্যক্তি দুবাই যাচ্ছেন টিকা নিতে। বেসরকারি হাসপাতালে টিকা কার্যক্রম চালু হলে তারা দেশেই নিবেন। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের কথা চিন্তা করেন, তাদের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নেওয়া কষ্টকর। তারা বাড়ির কাছে বেসরকারি হাসপাতালে টিকা নিতে পারবেন। একই সঙ্গে টিকা সংরক্ষণে ও প্রয়োগে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ ও নির্ভরশীলতা কমবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে বিপিএমসিএ’র করা আবেদন স্বাস্থ্য অধিদফতরে জমা হয়েছে। আরও ব্যাপকতার জন্য অধিদফতরও চাচ্ছে বেসরকারি মেডিকেলগুলোকে টিকাদান কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করতে। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কর্তৃপক্ষ থেকে একটি আবেদন পেয়েছি। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাব সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে ডিজি বলেন, আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। মাত্র ছয়দিনে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ টিকা নিয়েছেন। আশা করি সামনে আরও সাড়া পাব।
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ সারা দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হচ্ছে। গণ হারে টিকাদানের প্রথম দিন ৭ ফেব্রুয়ারি মোট ৩১ হাজার ১৬০ জনকে টিকা দেয়া হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল। ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬ লাখ ৮ হাজার ৯০১ জনকে করোনা টিকা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রতি মাসে ভারত থেকে ৫০ লাখ টিকা আমদানির বাইরেও বাংলাদেশের সামনে সুযোগ তৈরি হয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে টিকা পাওয়ার। স্বাস্থ্য অধিদপতরের তথ্য মতে সরকার দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ তথা ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে। প্রতিজনকে দেওা হবে দুই ডোজ টিকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।