পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেফতার সিকদার গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদারের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার দুপুর সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আশেক ইমাম এ রায় ঘোষণা করেন। গ্রেফতারের প্রায় ৫ ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেলেন রন হক সিকদার। রায়ে মো. আশেক ইমাম বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত তাকে জামিন দেয়া হলো। গতকাল সকাল ১০টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) গুলশান বিভাগের একটি দল রন হক সিকদারকে গ্রেফতার করে।
আদালত পুলিশ জানায়, গতকাল দুপুর তিনটার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের এসআই রিপন উদ্দিন আসামি রন হককে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী এ কে এম ফুরকান আলী ও সোহেল আমিন তার জামিনের জন্য আবেদন করেন।
শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, সিকদার গ্রæপ দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। রন হক সিকদারের বাবা এই গ্রæপের চেয়ারম্যান, যিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বাবার জানাজায় অংশ নিতে তিনি দেশে এসেছেন। এ অবস্থায় মানিবক বিবেচনায় আমরা তার জামিনের প্রার্থনা করছি। বিচারক দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় রন হক সিকদারের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
ডিবির গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম সাকলায়েন বলেন, এক্সিম ব্যাংকের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এই মামলার অপর আসামি রন হক সিকদারের ভাই দিপু হক সিকদার দেশে ফেরেননি। এ কারণে তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারকে আসামি করে মামলা করেছিল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
গত ১৯মে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, এক্সিম ব্যাংক থেকে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ পেতে আবেদন করে সিকদার গ্রæপ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ মে দুপুর ১২টায় এক্সিম ব্যাংকের গুলশানের প্রধান কার্যালয়ে আসেন রন হক সিকদার ও ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডি চৌধুরী মোসতাক আহমেদ। তারা এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডিকে ঋণের বিপরীতে জামানত হিসেবে রূপগঞ্জের আদি নওয়াব আসকারি জুট মিল পরিদর্শনে নিয়ে যান। পরিদর্শনে গিয়ে জামানত হিসেবে ওই সম্পত্তির বন্ধকি মূল্য নথিপত্রে দেখানো মূল্যের চেয়ে কম উল্লেখ করলে রন হক সিকদার তাদের আরেকটি প্রজেক্ট পূর্বাচলের আইকন টাওয়ার পরিদর্শনে যেতে বলেন। তাতে রাজি হয়ে টাওয়ার পরিদর্শনে গেলেও রন হক সিকদার ও চৌধুরী মোসতাক আহমেদকে না পেয়ে ও প্রকল্পের ভেতরের সড়ক অপরিচিত হওয়ায় এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডি ৩০০ ফিট সড়ক ধরে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেন। ওই সড়কেই রন হক সিকদার ও ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডিকে দেখতে পেয়ে থামেন তারা। সে সময় ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডি, এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডিকে জানান, বলে দেয়া নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হওয়ায় রন হক অত্যন্ত মনোঃক্ষুণœ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
এজাহারে বলা হয়, এরপরই রন হক সিকদারের কাছে এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডিকে মাফ চাইতে বাধ্য করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই রন হক সিকদার গাড়ির গøাস নামিয়ে এক্সিম ব্যাংকের এমডির উদ্দেশ্যে গুলি ছুঁড়লে তা তার বাম কানের পাশ দিয়ে চলে যায়। এরপর আবারও তিনি গুলি করতে উদ্যত হলে এক্সিম ব্যাংকের অতিরিক্ত এমডির গাড়ির পেছনে আশ্রয় নেন। এরপর এক্সিম ব্যাংকের এমডির গাড়িতে ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডিকে তোলা হয়। সে সময় রন হক সিকদারের একজন নিরাপত্তাকর্মীও গাড়িতে ওঠেন এবং এমডি ও অতিরিক্ত এমডির মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বনানীর সিকদার হাউজে নিয়ে যান।
এজাহারে আরও বলা হয়, সেখানে দিপু হক সিকদার ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডিকে মারধরের চেষ্টা করেন। পরে দু’জনকে বিদেশি নিরাপত্তাকর্মীর পাহারায় বসিয়ে রাখা হয়। এরপর রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার ব্যাংকটির এমডির কাছে একটি সাদা কাগজে জোর করে সই আদায় করে নেন। সই না করলে বিদেশি নিরাপত্তাকর্মী দিয়ে টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতন চালানো হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। আবার আর এই সইয়ের সাক্ষী করা হয় অতিরিক্ত এমডিকে। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টায় সিকদার গ্রæপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদারের কাছে নিয়ে তার সঙ্গে ছবি তোলা হয়। এরপর দুই গাড়িচালকসহ রাত সাড়ে ৭টায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। রন হক সিকদার বাসার নিচে এসে সবার মোবাইল ফোন ফেরত দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।