দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর হাদীস বিশারদ হিসেবে যে সকল ক্ষণজন্মা মহান ব্যক্তিবর্গের নাম গণনা করা হয় তাদের অন্যতম একজন হচ্ছেন শামছুল ওলামা অধ্যক্ষ আল্লামা আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ.)। একজন হাদীস বিশারদ হিসেবে তিনি শুধু বাংলাদেশেই নয় বরং উপমহাদেশের সকল ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলেম-ওলামাদের নিকট সমাধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯২৪ সালে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানার চুনতী ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সুবিখ্যাত ও সুপরিচিত পীরে কামেল হযরত শাহ সুফী আলহাজ মাওলানা আব্দুল হাকিম সিদ্দিকী (রহ.) (খলীফায়ে হযরত শহীদ সৈয়দ আহমদ বারীলভী (রহ.) যার নামানুসারে সুবিখ্যাত দ্বীনে প্রতিষ্ঠান চুনতী হাকিমিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা)। মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ.) তাঁরই প্রপৌত্র। তাঁর পিতার নাম মাওলানা আব্দুস সালাম (রহ.)। বাল্যকালে তাঁর পিতা এবং স্থানীয় আলেমগণের তত্ত্বাবধানে আরবী, ফার্সী, উর্দুু ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম আলীয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তিনি শিক্ষাজীবনে প্রতিটি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে সফলতা লাভ করেন। অতঃপর উচ্চতর শিক্ষা ও ইসলামী জ্ঞান হাসিল করার উদ্দেশ্যে ভারত গমন করেন। তিনি সেখানে ফাজেলে বেঙ্গল (কলকাতা) এবং ফাজেলে দেওবন্দ (ইউপি) ভারত, গভর্নমেন্ট স্কলারশিফ এবং মেডলপ্রাপ্ত হন। তিনি ভারতে অধ্যাপনাকালে খ্যাতিসম্পন্ন আলেম ও স্বনামধন্য মুহাদ্দিস ও ফকীহগণের সান্নিধ্যে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি হিনদুস্থান থেকে পাগড়ী নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। তিনি যেমনিভাবে শিক্ষাজীবনে সফলতা এবং সুনাম অর্জন করেন তেমনিভাবে কর্মজীবনেও সুনাম এবং পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন। তিনি সাবেক অধ্যক্ষ বাজালিয়া হেদায়াতুল ইসলাম সিনিয়র মাদ্রাসা ও হুলাইন ইয়াছিন আউলিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় সুনাম ও দক্ষতার সহিত নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চুনতী হাকীমিয়া আলীয়া মাদ্রাসা এবং পদুয়া হেমায়াতুল ইসলাম সিনিয়র মাদ্রাসায় (আল জামেউল আনওয়ার) সাবেক মুহাদ্দিস ছিলেন। তিনি চুনতী মিয়াজীপাড়া হযরত শাহ আবু শরীফ জামে মসজিদে পেশ ইমাম ও খতীব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি চন্দনাইশ সাতবড়ীয়া আরিফ শাহপাড়া জামে মসজিদ এবং কুসুমপুরা জামে মসজিদ (জিরি) এ ইমাম ও খতীব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এমনকি তিনি বাংলাদেশ ছাড়া বার্মা (মিয়ানমার) এবং ভারতের কাশমীরী গেইট, উঁচী মসজিদ দিল্লীতে পেশ ইমাম ও খতীব হিসেবে নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভারতের দিল্লি প্রদেশে “শ্রেষ্ঠ খতীব” হিসেবেও সম্মাননা সনদ এবং পুরস্কার লাভ করেন। এমনকি এই আলেমে দ্বীনকে অভিজ্ঞ অধ্যক্ষ ও প্রশাসক হিসেবে স্বীকৃতিস্বরূপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে “শ্রেষ্ঠ শিক্ষক” হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়। মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ.) একজন সুপ্রসিদ্ধ, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন এবং জনপ্রিয় বক্তাগণের অন্যতম। আমাদের দেশে এমন অনেক খতীব ও বক্তা আছেন যারা কুরআন-হাদীসের আলোকে হিদায়ত করেন না। ওয়াজ নসীহত করেন না, বরং মনগড়া কিস্সাকাহিনী, অর্থহীন মূল্যহীন বানোয়াট ঘটনাসমূহ বর্ণনা করেন। শ্রোতাদের মন জয় করার হীনপ্রচেষ্টা চালান। আর তারা এ ওয়াজকে আয়ের উৎস হিসেবে মনে করেন।
এই আলেমে দ্বীন এই সকল ওয়ায়েজ ও খতীবের বিরুদ্ধে সিংহের ন্যায় গর্জে উঠেন। তাঁর ওয়াজ ছিল গঠনমূলক ও হিদায়াতপূর্ণ। তাঁর ওয়াজ-নসীহতের উছিলায় হাজার হাজার বিভ্রান্ত লোক পথের দিশা পেয়েছে। তার বক্তব্যে কুরআন-হাদীসের পাশাপাশি ফিকহের মাসয়ালাসমূহ ছাড়াও উর্দু-ফার্সী কবিতার অপূর্ব সমাহার ছিল। তিনি মানবজীবনের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের উপর ইসলামী দৃষ্টিকোণ তাদের নিকট তুলে ধরতেন। তাঁর ওয়াজের মধ্যে এমন মূল্যবান মাসয়ালা বর্ণিত হতো যা দ্বীনে প্রয়োজনীয়তার সহিত সম্পৃক্ত ছিল। তিনি স্বীয় ছাত্র থাকাকালীন সময় থেকেই বক্তব্য-বিবৃতি, তাকরির ও খিতাবতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছেন। ধর্মীয় সভা ও কনফারেন্সসমূহে তাঁর বক্তৃতায় খ্যাতি রয়েছে। তাঁর অসাধারণ বক্তৃতায় প্রতিভার কারণে বিশিষ্ট আলেম উলামাগণ ও সাধারণ লোকেরা তাঁকে “চাটগাঁয়ে খতীবে আযম” উপাধিতে ভূষিত করেন। এমনকি ভারতের দিল্লি প্রদেশে এক কনফারেন্সে তাঁকে “ফখরুল ওয়ায়েজীন লিল বাঙ্গাল” উপাধিতে ভূষিত করা হয়। অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ.) একজন সফল আরবীবিদ, শিক্ষাবিদ, ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি কুরআন, হাদীস, ফিকাহ, উসূলে ফিকাহ, ইলমী ফরায়েজ, আরবী, উর্দু এং ফার্সী সাহিত্যের প্রচার-প্রসারে এতদাঞ্চলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি আরবী, উর্দু, ফার্সী ও বাংলা ভাষায় লিখতে এবং অনর্গল বক্তৃতা দিতে পারতেন। ইলমের চর্চা জ্ঞানানুশীলনের প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল প্রবল। তিনি অবসর সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে ডেকে এনে ক্লাসে বিনামূল্যে দরস প্রদান করতেন। মাদ্রাসা শিক্ষার ইশায়াত ও দ্বীনি ইলমসমূহের সম্প্রসারণে তিনি সর্বস্ব ত্যাগের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন। তাঁর কণ্ঠ ছিল সুন্দর, সাবলীল ও মধুময়। তাঁর বুকের সাহস ও মনোবল ছিল অসীম। তাঁর ধীশক্তি ছিল প্রখর। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ও মুহূর্তে তাঁর প্রদত্ত জ্ঞানরাজি অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। আর্থ-সামাজিক ও ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এমন সুমহান জ্ঞানী ও আলেমের অভাব অতুলনীয় অপূরণীয়। তাঁর সাধারণ রীতি ছিলÑ ফজর নামাজের পর অল্পসময়ে কুরআন তেলাওয়াত, অজীফা, তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করতেন। অতঃপর নাশতা আহার করতেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলে যেতেন। অধিকাংশ সময় তিনি নামাজের পূর্বে মাদ্রাসায় চলে আসতেন এবং গভীর হৃদয় নিংড়ানো ভক্তি নিয়ে ছাত্রগণের সাথে মিশে সালামের তাড়নায় অংশগ্রহণ করতেন। সালামের শেষে ইখলাছের সাথে বিশ্ব বিধাতার দরবারে দোয়া করতেন। অতঃপর মাদ্রাসায় বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ পাঠদান করতেন। মুসলিম শরীফ ও শেফা শরীফ পাঠদানকালে কখনো কখনো তিনি তন্ময়তায় নিমজ্জিত হয়ে যেতেন। তিনি ইবনে হাজীবের শাফিয়া ও কাফিয়া এমনভাবে পড়াতেন যে নাহু শাস্ত্রের অন্যান্য গ্রন্থাবলীর অধ্যয়ন থেকে ছাত্রদের অমুখাপেক্ষী করে রাখতেন। তিনি ছাত্রদেরকে কুরআন-হাদীসের পাশাপাশি ধর্মীয় ও আরবী শিক্ষা দেয়া, ইসলামী আদর্শ ও চেতনা জাগ্রত করা, আদর্শবান ও চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তোলা, হানাফী মাযহাবের আলোকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত তথা সঠিক সুন্নী মতাদর্শ প্রচার প্রসার করাই ছিল এই আলেমে দ্বীনের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
তিনি শুধু একজন আদর্শ শিক্ষক, খতীব এবং ওয়ায়েজ ছিলেন না বরং তিনি একজন দায়ীও বটে। তিনি মুজাদ্দেদী ও চিশতীয়া তরীকতের অনুসারী হলেও অন্যান্য তরীকতের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা ছিল অসাধারণ। দ্বীনের তাবলীগ ও ইসলাম প্রচার, তাকরীর এবং খিতাবের উদ্দেশ্যে দেশের প্রায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাবলীগী সফর করেন। বাংলাদেশ ব্যতীত তিনি বার্মা গমন করেন এবং সেখানে বুড়িশ্চং, আকিয়াব, রেঙ্গুন মিয়ানমারের প্রভৃতি স্থানে গমন করেন। বার্মার বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁর অসংখ্য অনুসারী ও ভক্ত অনুরক্তগণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এমনকি এই আলেমে দ্বীন ভারত এবং পাকিস্তানে কনফারেন্সে কয়েকবার অংশগ্রহণ করেন।
পীরে কামেল অধ্যক্ষ আল্লামা আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ.) উত্তম আদর্শ ও অনুপম চরিত্রের অধিকারী সুমহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ছুরাত-সীরাত, আকৃতি-প্রকৃতি, চলা-ফেরা, উঠা-বসা, চাল-চলন, জ্ঞান-গুণ, তাকওয়া ও পরহেজগারী প্রভৃতি গুণাবলীতে ছিলেন অনন্য অসাধারণ। তিনি সবসময় আল্লাহর যিকির ও দরুদ শরীফ পাঠে রত থাকতেন। তিনি জাহেরী ও বাতেনী কামালাতের মালিক ছিলেন। তিনি বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতেন এবং ছোটদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন করতেন। শিশুদের প্রতি তাঁর প্রাণ খোলা স্নেহ-মমতা প্রবাদাকারে সর্বত্র বিখ্যাত ছিল। তিনি জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে শিশুদেরকে আদর-মহব্বত করতেন। তাদের খেলা দেখে আনন্দ পাইতেন। তাঁর আদর-মমতায় প্রত্যাশায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তাঁকে দেখলে তাঁর চতুর্দিকে আনন্দে সমবেত হতো। তিনি তাদেরকে চকলেট দিতেন। শিশুরা তাঁকে “চকলেট হুজুর”, কেউ আবার “চকলেট দাদা”, কেউবা “চকলেট নানা” বলে ডাকত। পরিবারের সন্তান-সন্ততির প্রতিও তাঁর ভালোবাসা অপরিসীম ছিল।
১৯৫১ সালে তিনি সাতকানিয়া থানার অন্তর্গত বাহাউদ্দীন মুন্সীর বাড়ীর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সুপ্রসিদ্ধ মাস্টার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমানের কন্যা আয়েশা সিদ্দিকার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর তিন সাহেবজাদা ও চার সাহেবজাদী রয়েছেÑ (১) রফিকুল ইসলাম এম. এম. এবং চারুকলা ইনস্টিটিউটের বি.এফ.এ. (সম্মান) এবং এম.এফ.এ. প্রথম শ্রেণীতে প্রথম। চট্টগ্রাম শহরে আর্ট অ্যান্ড আইডিয়া নামক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। (২) মাওলানা যোবাইর হোসেন সিদ্দিকী এম.এম. কামিল পাস। তিনি বর্তমানে দ্বীনের খেদমতে আধুনগর ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। এবং একইসাথে সামাজিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন “আল্লামা আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ.) ফাউন্ডেশন”-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছেন। (৩) যাহেদ সিদ্দিকী এম.এম. কামিল পাস মেডেলপ্রাপ্ত।
(৪) ১ম কন্যা ফাতেমা বতুল সিদ্দিকা স্বামী প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন শায়খুল হাদীস প্রফেসর আল্লামা ফখরউদ্দীন (রহ.)। তিনি সাবেক অধ্যক্ষ মাদ্রাসা আলীয়া সিলেট, সাবেক মুহাদ্দিস মাদ্রাসা আলীয়া ঢাকা, সাবেক মুহাদ্দিস সোবাহানিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসা চট্টগ্রাম, শায়খুল হাদীস চুনতী হাকিমীয়া আলীয়া মাদ্রাসা চট্টগ্রামএ সুনাম ও দক্ষতার সহিত নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করেন। (৫) যাইতুন সিদ্দিকা স্বামী সুপ্রসিদ্ধ কুতুবে জামান, অলীয়ে কামেল হযরত শাহসূফী হাফেজ আহমদ (রহ.)। যিনি একইসাথে চুনতীর ঐতিহাসসিক ১৯ দিনব্যাপী মাহফিলে সিরাতুন্নবী (সা.)-এর প্রতিষ্ঠাতা। পীর সাহেবের ইন্তেকালের পর যাইতুন সিদ্দিকাকে অন্যত্র বিবাহ দেন। (৬) রোকেয়া সিদ্দিকা স্বামী মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (রহ.) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি সেখানে সুনাম ও দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন। (৭) শিরীন সিদ্দিকা স্বামী মাওলানা আবুল হোছাইন এম.এম., বি.এ. (অনার্স) সৌদি প্রবাসী।
পীরে কামিল মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুন নূর সিদ্দিকী চিশতী (রহ.) একজন বিশিষ্ট লেখক, অনুবাদক ও গবেষক ছিলেন। তিনি উর্দু ভাষায় আল্লামা ইকবালের শেকওয়া ও জবাবে শেকওয়া শরাহ রচনা করেন। ইলমী ফরায়েযের বিষয়েও তাঁর উর্দু পুস্তক ইসলামিয়া লাইব্রেরী থেকে প্রকাশিত হয়। তিনি জাতির উদ্দেশে “তাক্বরীরে খোশবায়ান” এবং শাহসূফী “হযরত আহমদ শাহ সাহেব কেবলা (রহ.) জীবন চরিত” গ্রন্থ রচনা করেন। তাছাড়া তিনি আরো অনেক গ্রন্থ অনুবাদ করেন। এমনকি এই আলেমে দ্বীনের লেখা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন জার্নালে আরবী, উর্দু এবং বাংলায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়।
১৯৯১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে নিজ বাসভবনে তাঁর প্রভুর ডাকে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর জানাযায় বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে মুহাদ্দিস, মুফাস্সির, মুফতি এবং আলেম উলামাসহ হাজার হাজার ভক্ত ও অনুসারী উপস্থিত ছিলেন। এমনকি বার্মার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজারো ভক্ত উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ.) ছিলেন আলেম সমাজের অহংকার। দ্বীনের খেদমতে তাঁর বহুমুখী অবদান ও ত্যাগ অবিস্মরণীয়। আসুন আমরা এই মহান আলেমের অনুপম চারিত্র্যিক ও আদর্শ অনুসরণ করে দ্বীনের খেদমতে নিজেদের নিয়োজিত করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।