Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিআইএফসি’র সাবেক দুই কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ হাইকোর্টের

৪৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) থেকে ৪৩ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় প্রতিষ্ঠানের তৎকালিন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুর রহমান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব বিজনেস সৈয়দ ফাখরি ফয়সালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাদের আগাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ‘ডি আফরোজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ’র নামে দু’টি ঋণচুক্তির আওতায় বোর্ড সভায় অনুমোদনের বাইরে অতিরিক্ত অর্থসহ নেয়া ঋণের মধ্যে ২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে সরকারি এ প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রতিষ্ঠানটির অনুক‚লে মঞ্জুরি করা ৪৫ লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে কোনো অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চেক এবং পে-অর্ডারের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৬১ কোটি ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬৭ টাকা অবমুক্ত করা হয়। এর মধ্যে কিছু অর্থ পরিশোধ করা হয়। বাকিটা এখন পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি।

‘ডি আফরোজ’র নামে জালিয়াতির মাধ্যমে বরাদ্দ অতিরিক্ত টাকার ইস্যুকৃত চেকের অধিকাংশ টাকাই মেজর (অব.) মান্নানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গেছে। দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, এ জালিয়াতির প্রধান সুবিধাভোগী মেজর (অব.) মান্নান এবং তিনি নিজেই এই অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

অন্য মামলাটি ‘ক্লিক টু ডিজাইন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়ার। প্রতিষ্ঠানটি ১৪ কোটি ৩০ লাখ ৬৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের নামে নেয়া ঋণের অর্থও মেজর মান্নানের মালিকানাধীন ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে গেছে বলে এজাহারে বলা হয়েছে। বিআইএফসি থেকে বিপুল পরিমাণের ঋণ অনিয়মের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের তৎকালিন চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের সম্পৃক্ততা পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে ২০১৫ সালের শেষ দিকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুদক ও সিআইডিকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান প্রতিবেদনে সরকারি আত্মসাতের ঘটনায় ১১ জনের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করা হয়। এর ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট উপ-পরিচালক এসএম সাহিদুর রহমান পৃথক দু’টি মামলা করেন। মামলায় ১১ আসামির বিরুদ্ধে প্রতারণা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। আসামিরা হলেন, বিআইএফসির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, বিআইএফসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদ মালি, সাবেক এভিপি অ্যান্ড ইউনিট হেড আহমেদ করিম চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র অফিসার (বিজনেস) মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, সাবেক অফিসার মো. সৈকত আজাদ ও মাসুদ-উল-রেজা চৌধুরী, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার তানিজা মাজেদ, সাবেক সিনিয়র অফিসার ও রিজিওনাল ম্যানেজার আফ্রিদা আহসান, ‘ডি আফরোজ সোয়েটার ইন্ডাস্টিজ’র এমডি গোলাম জিলানী দিদার এবং ‘ক্লিক টু ডিজাইন’র এমডি মো. নাজমুল বাশার। এদের মধ্যে শেষের পাঁচজন একটি করে এবং অন্যরা দুটি করে মামলায় আসামি। মামলার তদন্তে বিআইএফসি’র তৎকালিন এমডি ইনামুর রহমান এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ফাখরি ফয়সালের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসে। এ মামলায় তারা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান। আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। দুই আসামির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর হোসেন। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট একেএম ফজলুল হক।



 

Show all comments
  • Emraan Hossain ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৬:৫৫ এএম says : 0
    বেড়ায় ক্ষেত খায় ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ