পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারা দেশে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলছে। গতকালও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আগ্রহের সাথে টিকা গ্রহণ করেছেন। দ্বিতীয় দিন যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে- পানি সম্পদ উপমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বাণিজ্য সচিব, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি এবং বিরোধীদল বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
দ্বিতীয় দিনের মতো দেশব্যাপী করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পরপরই সাতসকালে সস্ত্রীক টিকা নিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। সকালে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্ত্রীসহ করোনার টিকা নেন এনামুল হক শামীম। প্রথম ডোজের টিকা নেয়ার পর নিয়মমতো উপমন্ত্রী এবং তার স্ত্রীকে হাসপাতালে কিছু সময়ের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। টিকা নেয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় উপমন্ত্রী এনামুল হক বলেন, সস্ত্রীক করোনা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করলাম। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করায়। ভ্যাকসিন উৎসবের দ্বিতীয় দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থাপিত কেন্দ্রের ভিআইপি বুথে টিকা গ্রহণ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তিনি সার্বিক বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং টিকা নেয়ার পর সুস্থ আছেন ও ভালো আছেন বলে জানান। বেলা সাড়ে ১১টায় নির্বাচন কমিশনের ২০-২৫ জনের একটি টিম নিয়ে টিকা নেন সিইসি।
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে করোনার টিকা নেয়ার সংখ্যা বেড়েছে। কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাফর উদ্দীনসহ টিকা নিয়েছেন ২৫৭ জন। সচিবালয় ক্লিনিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টিকা নেয়ার পর ১০ থেকে ২০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ফের কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন। তবে কারো কোনো সমস্যার খবর পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এবং সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী। বেলা পৌনে ১২টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা নেন তারা। এসময় এক প্রতিক্রিয়ায় মতিউর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, টিকার কোনো বিকল্প নেই। কোভিড থেকে বাঁচতে হলে একমাত্র উপায় হচ্ছে টিকা। টিকাটা নিতে হবে এবং টিকা নেয়া দরকার। তিনি আরো বলেন, এই কেন্দ্রে এসে আমার ভালো লাগছে। আরো বিপুল সংখ্যক মানুষ যেন টিকা নেন এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। আর যারা এক ধরনের কুসংস্কারে আছেন তাদের কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কুসংস্কার আছে অনেকের- টিকা নিরাপদ কি না, কোথা থেকে আসলো, কীভাবে আসলো, আমি ভালো আছি, আমার কোভিড নাই- এটা বলা ঠিক হবে না। টিকা সবাইকে নিতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই টিকা গ্রহণ করেছেন নোয়াখালী-১ এর সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে (ঢামেক) করোনার টিকা নিয়েছি। টিকা গ্রহণ শেষে সুপ্রিম কোর্টে ফিরে এসে নিয়মিত কাজও করেছি। ইনজেকশনের স্থানে সামান্য একটু ব্যথা ছাড়া আপাতত আর কোনো সমস্যা অনুভব করছি না।
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। তিনি সকাল ১১ টায় রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টিকা গ্রহণ করেছেন। বাফুফে সভাপতিকে টিকা প্রদান করেছেন মুগদা হাসপাতালের সিনিয়র নার্স স্মিতাগেইন।
কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেন, যখনই জানতে পেরেছি দেশে ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে তখন থেকেই চেষ্টা করেছি কিভাবে নিতে পারি। কারণ, ভ্যাকসিনটা তো আর একদিনে আসেনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই ছাড়া হয়েছে। ইউরোপে লাখ লাখ মানুষ ভ্যাকসিন দিচ্ছেন। এটা না নেয়ার কোনো কারণ নেই। টিকা প্রদানের সিস্টেম আরো সহজ করার দাবি জানিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেছেন, আমার স্ত্রীও নিয়ে গেছেন। আমার ছেলে ও মেয়েকে এনেছিলাম দেয়ার জন্য। ফেডারেশনের (বাফুফে) লোকজনও এসেছিল। কিন্তু সমস্যা হয়েছে সিস্টেমের। যে কারণে অন্য কেউ নিতে পারেননি। সিস্টেমটা আরো সহজ করতে হবে। যাতে যার ইচ্ছে সেই নিতে পারেন। তাহলে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন এসেছে দেশে তা ১০ দিনেই শেষ হয়ে যাবে। কারণ, সবাই চান নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে।
গত ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকাদানের উদ্বোধন করা হয়। এরপর গত রোববার শুরু হয়েছে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি। দিনের শুরুতেই রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে টিকা নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এরপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধনকারীরা টিকা নেন। সারাদেশের মোট ১ হাজার ৫টি হাসপাতালে চলছে এই কর্মসূচি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা টিকা নেয়ার পর অন্যরা পর্যায়ক্রমে টিকা পাবেন। তবে প্রথম ধাপে ১৫ ক্যাটাগরির মানুষ টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।