Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভিয়েতনামের অর্ধেকও রফতানি করতে পারেনি বাংলাদেশ

করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বাজার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক। করোনাকালে খাতটির রফতানিতে ব্যাপক ধস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের একক ও বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ ক্ষতি ব্যাপক মাত্রা ব্যাপক। মার্কিন সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, করোনার কারণে গত বছর দেশটিতে বাংলাদেশের রফতানি কমেছে ১০ শতাংশেরও বেশি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে ভিয়েতনামের অর্ধেকেও পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ।
জার্মানিভিত্তিক ভোক্তাপণ্য ও বাজার পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার তথ্য বলছে, ২০২০ সালে পোশাকের বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল দেড় লাখ কোটি ডলারের। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রতি বছর বহির্বিশ্ব থেকে ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি পোশাক পণ্য আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে বৃহত্তম উৎস দেশ চীন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ।
করোনার আগে থেকেই মার্কিন পোশাকের বাজার ছিল টালমাটাল। বিশ্বখ্যাত অনেক ক্রেতাই নাজুক আর্থিক অবস্থার দরুন বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়াসহ আদালতে দেউলিয়াত্বের আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন পরিস্থিতির মধ্যে করোনার আঘাত দেশটির তৈরি পোশাক আমদানিতে বড় ধরনের ধস নামায়। এর ধারাবাহিকতায় দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে পোশাক রফতানি হ্রাস পেয়েছে। একইভাবে কমেছে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের পোশাক রফতানিও। তবে এ হার বাংলাদেশের চেয়ে কম। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির দিক থেকে ভিয়েতনামের চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ।
মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটিইএক্সএ) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালে বিশ্ববাজার থেকে ৮ হাজার ৩৭০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে গত বছর এ আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪০৭ কোটি ডলারে। এ সময় শীর্ষ ১০ উৎস দেশের মধ্যে নয়টি থেকেই আমদানি কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাড়িয়েছে শুধু কম্বোডিয়া থেকে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম থেকে তৈরি পোশাক রফতানি ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫৭ কোটি ডলারে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে এ রফতানির পরিমাণ নেমে এসেছে ভিয়েতনামের অর্ধেকেরও নিচে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ কমে নেমে এসেছে প্রায় ৫২৩ কোটি ডলারে। এ সময় শীর্ষ ১০ উৎস দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক আমদানি সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে চীন থেকে। গত বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ৩৯ শতাংশের বেশি।
রফতানিকারকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানির দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনাম সব সময়ই এগিয়ে ছিল। কিন্তু কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে প্রতিযোগিতায় দুই দেশের মধ্যে ব্যবধান আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তৈরি পোশাক খাতের উত্তরণ এবং ভবিষ্যতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো বড় বাজারগুলোই ভরসা কিনা এ প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, যেহেতু গুটিকয়েক পণ্য ও বাজারে অতিরিক্ত কেন্দ্রীভূত একটি শিল্প বা অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর নয়, তাই আমি মনে করি বাজারে বৈচিত্র্য আনা এখন খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি মৌলিক প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কভিড-১৯ ও বৈশ্বিক মন্দা আমাদের এ বাস্তবতা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। অপ্রচলিত বাজারে আমাদের রফতানি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এ মহামারীর ক্ষতি থেকে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারই প্রবৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধারের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ