Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা দেশে টিকাদান শুরু

ঢাকায় ৫০টি হাসপাতাল ও সারা দেশে ৯৫৫টি হাসপাতাল প্রস্তুত নিবন্ধন করেছেন মন্ত্রী-এমপি ভিআইপিসহ তিন লাখ ২৮ হাজার গ্রামগঞ্জে ভ্যাকসিনের সচেতনতামূলক প্রচারণায় ঘাটতি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আজ। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সবার জন্য করোনা টিকা গ্রহণের সে সুযোগ আসছে। সারাদেশে ১০০৫টি কেন্দ্রে টিকা দেয়ার মাধ্যমে আজ রোববার একযোগে শুরু হচ্ছে করোনা টিকাদান কর্মসূচি। রাজধানী ঢাকায় ৫০টি হাসপাতালে ২০৪টিম ছাড়াও সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে ২১৯৬টি টিম টিকা প্রয়োগ কর্মসূচি চলবে। টিকা গ্রহণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মন্ত্রী-এমপি, ভিআইপিসহ তিন লাখ ২৮ হাজার জন মানুষ নিবন্ধন করেছেন। কার্যক্রমের প্রথম দিনেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী টিকা গ্রহণ করবেন।

তবে বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ টিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভীতি আতঙ্কের সৃষ্টি হয় তার দূর করতে কার্যকর প্রচারণা হয়নি। ফলে টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো বিপুল সংখ্যাক মানুষের মধ্যে টিকা ভীতি রয়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে টিকা নেয়ার বিষয়ে জন সচেতনতা তৈরিতে গ্রামাঞ্চলে সরকারি প্রচারণা হয়েছে খুবই কম। প্রচারণায় গণমাধ্যমকে যেভাবে ব্যবহার করার সুযোগ ছিল তা গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া নিবন্ধনের জটিলতা ছিলই। ফলে, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে অনলাইনে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে আসা মানুষের সংখ্যাও অনেক কম। এমনকি দৈবচয়ণ পদ্ধতিতে নির্বাচিত দেশের প্রায় এক ডজনেরও বেশি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে এই চিত্র পাওয়া গেছে। অনেক কেন্দ্রে নিবন্ধন সেবা নিতে আসেননি এখনো কেউই।

এছাড়া করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের বহুল কাঙ্খিত এই টিকা কার্যক্রম সম্পর্কে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর এ বি এম খুরশিদ আলম এক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা, মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ নাজমুল ইসলাম, এমবিডিসি পরিচালক এমবিডিসি প্রফেসর ডা. সামিউল ইসলাম প্রমুখ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনা টিকা নেবেন। এর আগে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর খুরশিদ আলম বলেন, অনেক দেশের আগেই টিকা জোগাড় করতে পেরেছি এবং নির্ধারিত সময়ে শুরু করতে পারছি। রাজধানী ঢাকায় ৫০ টি হাসপাতালে ২০৪ টিম এবং ঢাকার বাইরে সারাদেশে ৯৫৫ টি হাসপাতালে ২১৯৬ টি টিম টিকা প্রয়োগে যুক্ত থাকবে। আমাদের সর্বমোট এক হাজার পাঁচটি ২৪০০ টিম কাজ করবেন। আমাদের টিম প্রস্তুত আছে ৭৩৪২ টি। আপাতত এই ২৪০০ দিয়ে আমরা শুরু করছি। প্রতিদি সকাল ৮ থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেয়া হবে।

ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা নেবেন। টিকা নেয়ার আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদফতরের কার্যালয়ে এসে সারাদেশের কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কথা বলবেন। এরপর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে গিয়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, যেসব কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে মোটামুটি সব জায়গায় প্রস্তুতি ভালো আছে। আমরা প্রতিবন্ধকতা ছাড়া টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারছি। কিছু কিছু ছোট কেন্দে- মাতৃসদন, শিশু সদন কেন্দ্রগুলোতে খানিকটা আমাদের স্থবির রয়েছে, এটা সকালের কথা। আশা করছি সন্ধ্যার মধ্যে সেগুলো প্রস্তুত হয়ে যাবে।

উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই প্রথম দিনে টিকা নেবেন জানিয়ে ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, প্রধান বিচারপতি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সচিব টিকা নেবেন নিউরো সাইন্স হাসপাতালে, ক্যাবিনেট সচিব টিকা নেবেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন মন্ত্রীরা, যেমন-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। দুযোর্গ প্রতিমন্ত্রী, জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে টিকা নেবেন। এরকম ভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে সংসদ সদস্যরা, রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধি, গন্যমান্য ব্যক্তিরা যেসব কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত থাকবেন, তারা নিজেরাও টিকা নেবেন এবং অন্যদেরও টিকা নিতে উদ্ধুদ্ধ করবেন। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ঢাকা থেকে জুমে চাদপুরে যুক্ত হবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

প্রস্তুতি সম্পর্কে মূল্যায়ন জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি তো ভালো বলবো। তবে অন্যরা মূল্যায়ন করবেন ‘আমাকে ‘এ’ নাকি ‘বি’ নাকি ‘সি’ দেবেন’।
প্রথম দিনে যারা টিকা নেবেন, তারা তো বুঝতে পারছেন না, তারা এদিন টিকা পাবেন কিনা, তারা এখনো এসএমএম পাননি। এমন প্রশ্নে মহাপরিচালক বলেন, এসএমএম পেয়ে যাবেন। রাতে ম্যাসেজ পেয়ে কাল কি সকলের পক্ষে টিকা নেয়া সম্ভব- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই কার্যক্রম তো চলমান এটা তো চলবে। একদিন না নিলে যে নেওয়া যাবে না-এরকম না। এটা চলবে। একদিন না পারলে পরের দিন নিবেন, তারপরের দিন না পারলে, তারপরের দিন নেবেন।

প্রথম ¯øটে ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার টার্গেট, কিন্তু শনিবার পর্যন্ত নিবন্ধন হয়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার তাহলে টার্গেট পূরণ হতে কত দিন সময় লাগবে এবং প্রথম ধাপে টিকা দিতে কত দিন লাগবে। এদের দ্বিতীয় ডোজ কবে থেকে শুরু হবে? এমন প্রশ্নে ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, প্রথম ধাপের টিকা কবে শেষ করতে পারবো এই মুহুর্তে বলতে পারছি না। শনিবার পর্যন্ত ৩ লাখ রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, শুরুর পর কি পরিমাণ রেজিস্ট্রেশন হবে এবং আমরা যেহেতু কেন্দ্রেও রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রেখেছি কাজে, এই রেজিস্ট্রেশনের উপর ভিত্তি করে বলা যাবে না। আমরা দ্বিতীয় ডোজ কবে দেবো? আমাদের কাছে নির্দেশনা ছিলো ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাবে।

এই প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, প্রথম ধাপ দ্বিতীয় ধাপ বলে আমাদের কিছু থাকবে না। পর্যায়ক্রমে টিকা কার্যক্রম চলতে থাকবে। চার সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে । পাশাপাশি যারা প্রথম ডোজ পাননি তাদের দেয়া হবে। প্রথম ধাপ দ্বিতীয় ধাপ বলে কিছু নেই। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যদিও টিকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতে ৪ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক নন কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রফেসর ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ট্রায়েল ২৮ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ২৮ দিনের গ্যাপেই দ্বিতীয় ডোজ দেয়াই ভালো।
প্রাথমিক ভাবে যাদের টিকা দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বলবো না। যা পরিলক্ষিত হয়েছে, এটা টিকার পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নয়, স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। ১ শতাংশের জ্বর হয়েছিলো। তারপর ঠিক হয়ে গেছে।

কারা টিকা নিতে পারবেন না, জানতে চাইলে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ১৮ বছরের নিচে, গর্ভবতী নারী, শিশুকে দুগ্ধদানকারী মা, যাদের অনেক জ্বর আছে তাদে টিকা দেয়া যাবে না। যাদের করোনা আছে, তাদের ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত টিকা নেয়া যাবে না। অন্য কোনো রোগের ক্ষেত্রে করোনা টিকা দেয়া যাবেনা- এমন কোনো নিষেধ নেই। কিন্তু সকর্ততার অংশ হিসেবে যারা এই মুহুর্তে গুরুত্বর অসুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদেরকে আমরা বলছি- তারা যেন টিকা নিতে না আসেন। এছাড়া কিছু প্রশ্ন থাকবে, টিকাদান কর্মী সেই সব প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেই টিকা দেবেন। ওষুধে অ্যালার্জি আছে, তাদের টিকা দেয়া হবে না। প্রাথমিক অবস্থায় এই কথাগুলো বলছি। টিকা কার্যক্রম কিছু দিন চলার পর আমাদের অবজারভেশনের ভিত্তিতে আপডেট করা হবে বলে জানান তিনি।

এসময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রফেসর ডাক্তার নাজমুল ইসলাম জানান, প্রতিটি জেলা-উপজেলা হাসপাতলে আজ থেকে টিকা দেয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নিবন্ধনের জন্য ওয়েবসাইট চালু আছে এবং গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ ইন্সটল করা হয়েছে। প্রাক নিবন্ধন ছাড়া কাউকে টিকা দেয়া সম্ভব হবে না। তবে টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে যারা নিবন্ধন করবেন তাদেরকে পরবর্তীতে টিকাদানের তারিখ সময় ও স্থান জানিয়ে দেয়া হবে।

এদিকে গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত মোট তিন লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন ভ্যাকসিন নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন। নিবন্ধনে সহায়তা করতে প্রায় ছয় হাজার ৬৮৬টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। যদিও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে গ্রামাঞ্চলে অনেকেরই প্রযুক্তিগত জ্ঞান নাও থাকতে পারে- সে বিষয়টি মাথায় রেখেই এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে টিকা নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে গ্রামাঞ্চলে প্রচারণা খুবই কম বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন।

মানিকগঞ্জের বলধারা ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রের একজন উদ্যোক্তা মো. সবুজ রায়হান বলেন, আমরা সেবা দিতে প্রস্তুত আছি। তবে নিবন্ধনের জন্য কেউ আসেননি। একই পরিস্থিতি গাজীপুরের রাজাবাড়ী ইউনিয়নের আরেকটি ডিজিটাল সেন্টারের। সেখানকার এক উদ্যোক্তা শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, এখনো কেউ নিবন্ধনের জন্য আসেননি। আমাদের সেবা দিতে প্রস্তুত। নিবন্ধনের জন্য মানুষ আসবে, সে অপেক্ষায় আছি আমরা।

পাবনার দোগাছি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, নিবন্ধনের ব্যাপারটি অনেকের কাছেই নতুন। মানুষ এ বিষয়টি জানে না। এর জন্য সময় লাগবে। আশা করি, ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলে নিবন্ধনের সংখ্যাও বাড়বে। রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. ইব্রাহিম টাইটন জানান, রেজিস্ট্রেশনের কাজটি ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে দেয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে এখনো নিবন্ধন বাড়েনি। তিনি বলেন, আমরা এখন উপজেলা ও জেলা হাসপাতাল থেকেও নিবন্ধন করতে সহায়তা করছি। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম জানান, তারা বিভিন্ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে নিবন্ধনের জন্য উৎসাহিত করেছেন।

দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার আগে কেন সচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু করা হয়নি- প্রশ্নের জবাবে বিভিন্ন জেলার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, এ বিষয়ে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি।

প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তারিকুল ইসলাম জানান, তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন এবং দ্রুতই সংশ্লিষ্টদের কাছে নির্দেশনাটি পৌঁছে যাবে বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, আসলে মানুষ দেখেতে চায় যে অন্যরা কী করছেন। কাজেই, যখন ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হবে তখন এমনিতেই সবাই কেন্দ্রগুলোতে যাবে এবং নিবন্ধনের সংখ্যাও বাড়বে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষের নিবন্ধন নিশ্চিত করতে সরকার স্থানীয় সরকারি প্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র মতে, প্রথম মাসে ৩৫ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। গত ২৭ জানুয়ারি ওয়েবসাইটটি চালু হওয়ার পরে লগ ইন করতে সমস্যায় পড়েছেন বলে অনেকেই অভিযোগ তোলেন। এতে নিবন্ধনের সংখ্যা কমে যায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মানুষ ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য নিবন্ধন করতে অনীহা প্রকাশ করছে। সবাই দেখতে চায় অন্যরা কী করে। ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হলে মানুষের আস্থা বাড়বে এবং নিবন্ধনের সংখ্যাও বাড়বে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথম করোনা টিকা প্রদান শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ওই দিন ২৬ জন টিকা গ্রহণ করেন। এর একদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রাথমিকভাবে ৫৪১ জনকে টিকা প্রদান করা হয়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য টিকাগ্রহণকারীদের পর্যাবেক্ষণে রাখা হয়। খুব একটা সসম্যা না হওয়ায় ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে এক যোগে টিকা প্রয়োগ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ৫০ লাখ ডোজ পায় বাংলাদেশ। সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে বেক্সিমকো ফার্মার মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন কিনেছে সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে। এ ছাড়া, ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে বাংলাদেশ।

ভারত থেকে আসা এই ভ্যাকসিন ছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্যাভির ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের নেতৃত্বে পরিচালিত কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ পাবে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। গত বুধবার কোভ্যাক্স একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।



 

Show all comments
  • Parvez Muhammad ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:২৬ এএম says : 0
    ধন্যবাদ। শুভ হোক এমন উদ্যোগ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shabuj Hossain ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:২৭ এএম says : 0
    Abar school ta kule den
    Total Reply(0) Reply
  • সোলায়মান ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:২৭ এএম says : 0
    যে টিকার জন্য এতো অপেক্ষা ছিল আজ সেই টিকা নিতে এতো ভয়!
    Total Reply(0) Reply
  • Ripon Chakma ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    টিকা নেওয়ার কোন ইচ্ছে আপাতত নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Ataur Rahman Ranju ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    আমি টিকা দিতে চাই,কিন্তু আমি তো অগ্রাধিকার তালিকায় নাই,কেন?
    Total Reply(0) Reply
  • Mahbubul Alam ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:৩৬ এএম says : 0
    টিকার প্রচারনা খুব একটা কাজে আসছেনা!
    Total Reply(0) Reply
  • নাবিল আব্দুল্লাহ ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:৩৭ এএম says : 0
    টিকা নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে গ্রামাঞ্চলে প্রচারণা খুবই কম
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ