পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভেজাল মদ সেবনে তাৎক্ষণিক অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছেই। ভেজাল মদপানে একের পর এক মৃত্যুতে রাজধানীসহ দেশজুড়ে একরকম ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ গত রবিবার রাতে বগুড়ায় মদপানে ১২জনের মৃত্যু হয়েছে। একই দিন গাজীপুরের একটি রিসোর্টে গিয়ে মদ পান করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ভেজাল মদ পান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীও হাসপাতালে মারা যান। সংশ্লিষ্টরা জানান, কাস্টমস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারসাজির কারণে দেশি-বিদেশি মদের সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে দামও বেড়ে গেছে। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা এই ভেজাল কারবারে জড়িয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, গেল এক বছরে দেশে শতাধিক ব্যক্তি মদপানে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। এর মধ্যে কয়েকজন নারীও রয়েছে। মদপানে অসুস্থ হয়ে মারা গেলে মৃত ব্যক্তির পরিবার সামাজিক ও ধর্মীয় কারণে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চায়। এতে সেই বিষাক্ত মাদক জব্দ করে পরীক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা আইন রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে আর সম্ভব হয় না। তবে মৃত ব্যক্তির ভিসেরা পরীক্ষায় প্রায়ই মাদকের সঙ্গে প্রাণঘাতী রাসায়নিক থাকার প্রমাণ মেলে। এর মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার নজির খুবই কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশি-বিদেশী মদ, ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল ভেজাল করতে গিয়ে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশায় মাদক কারবারিরা। আর বিদেশী মদের বেশির ভাগই বৈধ পন্থায় আমদানির দাবি করে অবৈভাবে কেনাবেচা হচ্ছে।
বিদেশি দামি মদের বোতলে সাধারণ পানীয় মিশিয়ে ঝাঁজালো করতে প্রাণঘাতী রাসায়নিক মিথানল মিশিয়ে দেওয়া হয়। ইথানল ও মিথানল একই রকম হওয়ায় সাধারণভাবে অনেকে তা চিনতে পারে না। মাদকে অনাকাঙ্খিত প্রাণহানি ঠেকাতে সবখানে নজরদারি ও মান যাচাইয়ের ব্যবস্থা জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায়ও আনতে হবে। রাজধানীর একটি বারের ম্যানেজারের জানান, বারগুলোতে বিদেশি মদের সরবরাহ করোনার কারণে কমে গেছে। আগের তুলনায় কাস্টমারও কমেছে। সমস্যা হলো কাস্টমস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কৌশলে মদের সরবরাহ কমিয়ে দেয়। এতে করে স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যায়। দাম বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। ভেজাল মিশিয়ে দেদারছে বিক্রি করছে। যার শিকার হচ্ছে মানুষ। তিনি বলেন, সবাইতো আর মদ পান করে না। বৈধভাবে যারা পান করতে চায় তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। এজন্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সরবরাহ না থাকলে মানুষ বিকল্প পথ খুঁজবে এটাই স্বাভাবিক। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, গত ৮ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় মদপানে অসুস্থ হয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীসহ চারজনের মৃত্যু হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে পারিবারিকভাবে দুজনের দাফনও করা হয়। সোনারগাঁ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তোফাজ্জল ও মহসিনের লাশ কাউকে না জানিয়ে দাফন করে তার স্বজনরা। পরিবারের সদস্যরা মদপানের কথা অস্বীকার করে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দুলাল চন্দ্র সাহা বলেন, কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে, দেশি বা বিদেশি মদে ইথানলের বদলে মিথানল দিয়ে ভেজাল করা হয়। মিথানল বিষাক্ত, প্রাণঘাতী। দুটো দেখতে একই রকম। তিনি বলেন, বিদেশি মদ মানসম্মতভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে। এগুলো পান করে মরার কথা নয়। এতেই পরিষ্কার এগুলো ভেজাল হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় যে বিষাক্ত মদ পান করে মানুষের জীবননাশের ঘটনা ঘটেছে, সে ব্যাপারে আমাদের নজরদারি আছে। অভিযোগ, তথ্য পেলে আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি। সা¤প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মদ বিক্রেতাসহ অবৈধ মদের কারখানায় অভিযান শুরু হয়েছে। এদিকে, রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকায় নকল মদ তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এসময় ভেজাল মদসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়। গত সোমবার রাতে এ অভিযান চালানো হয়। গুলশান জোনের উপপুলিশ (ডিসি) কমিশনার সুদীপ্তা চক্রবর্তী বলেন, স¤প্রতি বিষাক্ত মদপানে জীবননাশের ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে মদ বিক্রেতাসহ অবৈধ মদের কারখানায় অভিযান চালানো হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।