করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত এক দিনে আরো ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ৫২৫ জন। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, নতুন শনাক্ত ৫২৫ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ১০৭ জন হয়েছে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ১২ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ১৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৫১২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮০ হাজার ৭২৮ জন হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৬২টি র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে তথা সর্বমোট ২০৬টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৪৫২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৯টি নমুনা। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৯টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৮৭০টি। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ আর নারী ১ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ১ জন করে মোট ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৬ জন ঢাকা বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ৪ জন চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ১৪৯ জনের মধ্যে ৬ হাজার ১৭৭ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৯৭২ জন নারী। এদের মধ্যে ৪ হাজার ৫১৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ৩৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৩১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪০৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬৫ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫৩৮ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৪৯৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৬৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৫১ জন খুলনা বিভাগের, ২৪৭ জন বরিশাল বিভাগের, ৩০৬ জন সিলেট বিভাগের, ৩৫৭ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯০ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩১তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে।

এদিকে বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১০ কোটি ৩৪ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২২ লাখ ৩৮ হাজার। গতকাল মঙ্গলবার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫৯ জন। এছাড়া, ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯৬৪ জন।