পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইট পাথরের ঢাকা মহানগরীর হাতিরঝিল দেখতে ক্যানভাসে আঁকা ছবির মতো। পুরো শহর থেকে আলাদা জ্যামহীন, পরিচ্ছন্ন ফুটপাত, আধুনিক ব্রিজ, লেকের চারধার ঘিরে প্রশস্ত হাঁটার রাস্তা নাগরিকের মন ভুলিয়ে দেয় যানজটের বিরক্তিকর ঢাকাকে। ধনুকের মতো আঁকা বাঁকা বিশাল লেককে কেন্দ্র করে ১৬ কিলোমিটার রাস্তা এই স্থাপনায়। চারটা বড় ও চারটা ছোট ব্রিজ এবং পথচারীদের জন্য রয়েছে অসংখ্য বসবার বেঞ্চ। হাতিরঝিল পুরোটাই যেন সবুজ দিয়ে ঘেরা। ব্রিজগুলোর গায়ের সবুজ গুল্ম চার পাশের গাছ, লেক আর প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ বাতাস, পুরো প্রজেক্টের নয়নাভিরাম দৃশ্য- সব মিলিয়ে হাতিরঝিল আপনাকে এবং আপনার প্রিয়জনদের দেবে নির্মল আনন্দ।
সেই হাতিরঝিল হয়ে গেছে উঠতি বয়সী বখাটেদের আড্ডাখানা। ছিনতাইকারী, পকেটমারদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে এসে ছিনতাইকারীর হাতে সবকিছু খুইয়েছেন অনেক মানুষ। এছাড়াও হাতিরঝিলে বেড়াতে আসা মানুষদের নানাভাবে বিরক্ত করে এক শ্রেণির বখাটে যুবক। তাদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে পড়েন বেড়াতে আসা মানুষ। প্রায়ই আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা একই বখাটেদের পাকড়াও করে থাকে। গতকালও উত্ত্যক্তকারী ৩১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে তাদের আটক করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। এসময় একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ১০২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে ৩০২ একরের হাতিরঝিল রাতে যেন সেজে উঠে এক অপরূপ সাজে। প্রতিদিন বিকেলে এক উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বিনোদন পিপাসুদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে। ঝিলের প্রতিটি ব্রিজের চোখ ধাঁধানো আলোর সৌন্দর্য। দিনের চেয়ে রাতে হাতিরঝিল বেশি মুখর হয়ে উঠে দর্শনার্থীদের পদচারণায়। প্রশস্ত ব্রিজে কিংবা ছোট ব্রিজের উপরে অথবা লেকের পাড়ে বেঞ্চগুলোতে যেখানেই বসুন, পুরো হাতিরঝিল দর্শনার্থীদের কাছে মনে হবে স্বর্গীয় কোনো স্থান। শুধু ঘোরাফেরা নয়, সাইক্লিংয়ের জন্যও হাতিরঝিল খুবই ভালো জায়গা। জ্যামমুক্ত এলাকায় সাইক্লিং, প্রাত ভ্রমণ, সান্ধ্য ভ্রমণের জন্যেও এটি উপযুক্ত স্থান। নিরিবিলি পরিবেশে লেকের পাড় ঘেসে হাঁটের হাজার হাজার মানুষ। নিরব, শান্তিপূর্ণ এবং মনোরম হওয়ায় হাতিরঝিলের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দুশ্য দেখতে দেশের দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন আসেন।
পাথর, কংক্রিট আর ইটের এই ব্যস্ত ঢাকা মহানগরীর মানুষের জীবনযাত্রা একঘেয়ে হয়ে গেছে। মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য ছোট একটু বাসা, এক চিলতে ছাদ, ছোট একটা ঝুল বারান্দা- এ যেন এক অলীক কল্পনা। আবার বিশ্রাম ও অবকাশ যাপনের জন্য নিরাপদ কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না। ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার চারিদিকে বড় বড় বিল্ডিং, অ্যাপার্টমেন্ট, এখানে সেখানে শপিংমল, শব্দ দূষণ, বায়ূ দূষণের মধ্যে একটি নির্মল নি:শ্বাস নেয়ার বিনোদনের এক অনন্য নাম হাতিরঝিল। ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি নগরবাসীর জন্য অনিন্দ্য সুন্দর এই বিশাল স্থাপনা উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। ঢাকা শহরের কেন্দ্রে মনোরম এই স্পটের চারপাশে তেজগাঁও, গুলশান, বাড্ডা, রামপুরা, নিকেতন, মগবাজার।
বিনোদনপ্রেমীদের নির্বিঘেœ ঘোরাফেরার লক্ষ্যে হাতিরঝিলে সোমবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। আটকদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে গণ উপদ্রব ও অহেতুক হইচই করার অপরাধে ডিএমপি অরডিন্যান্স অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্যদের শর্তসাপেক্ষে অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
গত ২৬ জানুয়ারি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস উইং পরিচালিত ফেসবুক পেজে এক ব্যক্তি জানান, হাতিরঝিল এলাকায় বেড়াতে আসা সাধারণ মানুষ কতিপয় কিশোরের হাতে নানাভাবে উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বিষয়টি হাতিরঝিল থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়ার পর ২৭ জানুয়ারি থেকে হাতিরঝিল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
বিনোদন প্রত্যাশী মানুষের আনন্দকে নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে ও যে কোনো প্রকার হয়রানি থেকে মুক্ত রাখতে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।