Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শুকাচ্ছে হাজার হাজার মেট্রিক টন আখ

জয়পুরহাট চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ

মুহাম্মদ আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

দেশের বৃহত্তম চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জয়পুরহাট চিনিকলে শ্রমিকরা কাজ না করায় গত বুধবার থেকে আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে মাড়াইয়ের জন্য মিলের বাইরে পড়ে থাকা হাজার হাজার মেট্রিক টন কাটা আখ রোদে শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে চিনি আহরণের হার কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, জয়পুরহাট চিনিকলের আওতায় থাকা আখ জমি থেকে কৃষকরা কেটে অর্ধেক করে মিলে সরবরাহ করে। পরে তা চেইন দিয়ে বেঁধে মেশিনের সাহায্যে শ্রমিকরা ডোঙায় আখ নিক্ষেপ করে। কিন্তু শ্যামপুর ও মহিমাগঞ্জ থেকে আনা আখগুলো দিয়ে আবার চেইন দিয়ে বাঁধা হয়। সেই আখ এক বোঝা করে ডোঙায় হাত দিয়ে ফেলতে হয়। ফলে শ্রমিকদের চরম অসুবিধার পাশাপাশি সময়ও বেশি লাগে। এ ছাড়া চিনিকলের কর্মরত শ্রমিকরা নিজস্ব শ্রমিক নয়। ঠিকাদারের মাধ্যমে কন্ট্রাকের ভিত্তিতে তিন শিফটে ৬০ জন শ্রমিক কাজ করে থাকেন। তারা চেইন দিয়ে বাঁধাই করা আখ ফেলতে রাজি হলেও মহিমাগঞ্জ বা শ্যামপুরের গোটা আখ ফেলতে রাজি না হওয়ায় তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে চিনিকলের আখ মাড়াই কার্যক্রম গত বুধবার থেকে বন্ধ রয়েছ। জয়পুরহাট চিনিকলের আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয় গত ১৮ ডিসেম্বর। চলতি আখ মাড়াই মৌসুমে এক লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে। ১০ হাজার ৬শ’ ৯২ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আখের অভাবে অব্যাহত লোকসান কমাতে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার উত্তরাঞ্চলের তিনটি চিনিকল এলাকার এক লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করা হবে। এরমধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট এলাকার ৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ, শ্যামপুর চিনিকলের ৫০ হাজার ও মহিমাগঞ্জ চিনিকলের ৫২ হাজার মেট্রিক টন আখ। ওই আখ থেকে ২০২০-২১ সালে ১০ হাজার ৬শ’ ৯২ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছ। চিনি আহরণের শতকরা হার ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৬০ ভাগ। জয়পুরহাট চিনিকলের ৫৮তম মাড়াই মৌসুমে এবার ১শ’ ১০ দিন মিল চালু থাকবে। শ্যামপুর ও মহিমাগঞ্জ চিনিকল থেকে আখ ক্রয় করে ট্রাকের মাধ্যমে জয়পুরহাট চিনিকলে সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৮ হাজার ১১০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ২ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়েছে।
জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. আবু বকর জানান, আখের রস বের করে নেয়ার পর ছোবরা (ভেগাজ) জ্বালানি হিসেবে বয়লারে ব্যবহার করা হয়। যা থেকে স্টিম তৈরি হয়। বর্তমানে ভেগাজের অভাবে বয়লারের স্টিম কমে গেছে। বয়লার চালু করার জন্য ১০০ মেট্রিক টন ভেগাজ প্রয়োজন। ইতোমধ্যে রাজশাহী চিনিকল থেকে ভেগাজ সংগ্রহের কাজ চলছে। ডোঙায় আখ নিক্ষেপ কাজে নতুন করে শ্রমিক সরবরাহের জন্য আখের ঠিকাদারকে বাদ দিয়ে নতুন ঠিকাদার নিয়োগেরও চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ