Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিষমুক্ত বিটি বেগুন চাষে সাফল্য

মোস্তফা শফিক, কয়রা (খুলনা) থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

অধিক ফলন ও কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন না হওয়ায় বিটি বেগুন চাষে ঝুকে পড়েছেন কয়রার কৃষকরা। আবার এই জাতের বেগুনের উৎপাদন যেমন খরচ অনেক কম, তেমনি বাজারে এর দামও ভালো। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি বিটি জাতের এই বেগুন কৃষি সরেজমিন গবেষণা বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী চাষ করে অনেকেই এরই মধ্যে লাভবান হয়েছেন। এ জন্য বিটি বেগুন চাষে আগ্রহ হয়ে উঠছে স্থায়ীয় কৃষকরা।
সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বেগুন চাষের সময় ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমনে ৭০-৮০ ভাগ বেগুন মাঠেই নষ্ট যায়। এজন্য প্রতি বছর ১৭-২০ লাখ মেট্রিক টন কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। ফলে বেগুন চাষের খরচ বেড়ে যায় এবং কৃষকরা এ থেকে লাভবান হতে পারেন না। তাছাড়া প্রচুর পরিমানে কীটনাশকের ব্যবহার মানবদেহের জন্যও ক্ষতিকর। পোকার আক্রমণে সহনীয় হিসেবেই বিটি-১,২,৩, ও ৪ নামে চারটি নতুন উদ্ভাবন করে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এসব জাতের বেগুনে ডগা ও পোকা আক্রমণ করতে পারে না। ফলে বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন সম্ভব হয়।
কয়রা উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের চাষি গোপাল সরদার বলেন, বিটি বেগুন পরিবেশ বান্ধব। এতে কোনও ধরনের বালাইনাশক স্প্রে করার প্রয়োজন পড়ে না। গবেষণা বিভাগের কর্মকর্তার অনুরোধে বিটি বেগুনের চাষ শুরু করি। আগস্ট মাসে বীজতলা ফেলে সেপ্টেম্বরে চাষ শুরু করি নভেম্বর মাসের ১ সপ্তাহ থেকে বেগুন তোলা শুরু হয়। এখন প্রতি সপ্তাহে ২ বার বেগুন তুলতে পারছি, প্রতিবার ১৫০ থেকে ১৮০ কেজি বেগুন তুলতে পেরে তা বাজারে বিক্রি করে সংসারের খরজ চালিয়ে যাচ্ছি। ৩নং কয়রার কৃষক আজিজুল ১৩ শতক জমিতে বিটি বেগুন চাষ করেছেন। তিনি বলেন, বেগুন চাষে মাত্র ১৫০০ টাকা খরচ হয়েছে।
কৃষক আহসান বলেন, আগে বেগুন চাষ করলে কীটনাশক কিনতে গিয়েই অনেক টাকা খরচ হয়ে যেত। তবে আমার পাশের জমিতে কীটনাশক ছাড়াই বিটি বেগুন চাষ করতে দেখেছি। আমিও আগামীতে এই বেগুন চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বেগুন ক্ষেতে এমএলটি সাইট কয়রার বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহিদ হাসান বলেন, প্রথম অবস্থায় কৃষকদের বেগুন চাষে আগ্রহী করতে বেগ পেতে হয়েছে। কিন্তু উৎপাদনে সাফল্য দেখে উপজেলার অন্য কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনর রশিদ বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার (বিএআরআই) কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প এর আওতায় খুলনা জেলার সর্ব দক্ষিণে উপজেলা কয়রাতে বারি বিটি বেগুনের প্রদর্শণী দিয়েছি। দক্ষিণ অঞ্চলে আমাদের যে জাতগুলো ছিল সে জাতগুলোতে প্রচুর পরিমানে পোকা লাগত এবং কৃষক অনেক কীটনাশক স্প্রে করত। কিন্তু এখন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) গবেষণা করে (ব্যাসিলাস ট্যুরিনজিনসিস) জাতের বেগুন বীজ উদ্ভাবন করছে। ফলে কোন প্রকার কীটনাশক ছাড়াই বেগুন উৎপাদিত হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ