Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট ওবায়দুল কাদের কেন প্রথমে ভ্যাকসিন নিলেন না প্রশ্ন রিজভীর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২১, ৮:৫৮ পিএম

প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও ওবায়দুল কাদের কেন প্রথমে ভ্যাকসিন নিলেন না সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের ব্যাপারে আমরা সন্দেহ পোষণ করেছি। এখন ভারতও বলছে চূড়ান্ত পরীক্ষা ছাড়া এটা নেবো না। অথচ জোর করে এই সরকার একজন মধ্যম মানের কর্মচারী নার্সকে দিয়ে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করলেন। কেন প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট, ওবায়দুল কাদের নিজে নিতে পারলেন না? একজন সামান্য কর্মচারী নার্স, যিনি নিজের জীবন বিপন্ন করে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন তাকে আপনি পুশ করলেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি নিতে পারলেন না?

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে স্বাস্থ্য খাত ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শীর্ষক প্রামাণ্য চিত্রের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে এখন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখানে উন্নয়নের গল্প শোনায়, গল্প শুনিয়ে মানুষকে ভোলানোর চেষ্টা করা হয়। এই হচ্ছে সরকার। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ফ্লাইওভার দেখান, পদ্মাসেতু দেখান। এটা হচ্ছে ডিক্টেটর, দুর্নীতিবাজদের নিদর্শন। কর্তৃত্ববাদী সরকারের বৈশিষ্ট্য। টিআইবি’র তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতির স্তরে আরও দুই ধাপ নিচের দিকে নেমে গেছে।

ইসি সচিবের চোখের চিকিৎসা করা দরকার মন্তব্য করে রিজভী বলেন, চসিকে কি নির্বাচন হয়েছে সবাই দেখেছে? রক্তাক্ত অবস্থা। দুইজন নিহত হয়েছে। আমাদের এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি, মারধর করে, ধানের শীষের লোকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আর নির্বাচন কমিশন সচিব বললেন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এতো ঘটনা ঘটলো আর তিনি একথা বললেন! তিনি তো প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা দিয়েই প্রশাসন ক্যাডারে এসেছেন। সেই লোক তার শিক্ষা-দীক্ষা, বিবেক বিসর্জন দিয়ে বললেন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। কতো হীন হতে পারে তারা!

স্বাস্থ্যখাতে জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, তিনি এমন একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ, যার এতো মাতৃকতা, এতো ডাইমেনশন, শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি সব ক্ষেত্রেই তার অগাধ পাশ্চাত্য ছিল। একেকটা সেক্টরে তার অবদানের কথা বলতে গেলে একেকদিন পার হয়ে যাবে। সেই ব্যক্তির স্বাস্থ্যখাতে যে অবদান, সেই অবদানের কিছুটা চিত্র আজকের এই অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ বলতে শুধু শহরের মানুষকে বোঝাতেন না, তিনি গ্রাম, গ্রামের মানুষকে বোঝাতেন। তিনি বুঝতেন, শহরের উন্নয়ন করলে দেশের উন্নয়ন হয় না। সামগ্রিক উন্নয়ন করতে হলে গ্রামের এবং গ্রামের মানুষের উন্নয়ন করতে হবে। সবচেয়ে অবহেলিত, পশ্চাৎপদ তাদের উন্নয়ন করতে হবে। বিএনপির ঘোষণা পত্রে লেখা আছে তিনি (শহীদ জিয়া) বলেছিলেন, কিভাবে যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশের মানুষ মহাজন দ্বারা শোষিত হচ্ছে এবং এখান থেকে কিভাবে উত্তরণ ঘটাতে হবে। এসব কথা তিনি ঘোষণাপত্রে বলেছিলেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে কি কি করা দরকার তা দলের গঠনতন্তে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তিনি বাগারম্বর ছিলেন না, অন্তর্মুখী মানুষ ছিলেন। চোখ, ব্যক্তিত্ব দিয়ে মানুষের সাথে অদ্ভুত মিথস্ক্রিয়া হয়ে যেতো। এখানেই তিনি তার জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শহীদ জিয়া দেশব্যাপী দ্রুত আধুনিক চিকিৎসা সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য পল্লী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এটা ছিল একটি বৈপ্লবিক কাজ। গ্রামের মানুষের মাঝে জ্বীন, ভূত, ওঝা ইত্যাদি নিয়ে ভুল চিকিৎসা ছিল। পল্লী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দিয়ে কুসংস্কারাচ্ছন্ন বিষয়গুলো ভেঙে ফেলেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। গোটা দেশকে চিকিৎসা প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে এনে মানুষকে উজ্জীবিত করেন। পরিবার পরিকল্পনার বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন। প্রথম দিকে এটিকে ধর্মবিরোধী হিসেবে বলা হচ্ছিল। কিন্তু তিনি বিষয়টিকে এমনভাবে মানুষের মাঝে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, মানুষ বুঝেছিল।

বিএনপির এই নেতা বলেন, তিনি আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন রাষ্ট্রনায়ক, এমন মানুষ যখন কোন জাতি পায় তখন কেবল একটি সেক্টর নয়, সব সেক্টরই ক্রমাগতভাবে উন্নতি লাভ করে। এক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নয়ন হয়েছে। আমরা খুব বেশি এগিয়েছি তা কিন্তু নয়, তৃণমূল পর্যায়ে যে চিকিৎসা পৌঁছাচ্ছে, রাষ্ট্রের যে দায়িত্ব মানুষকে চিকিৎসা প্রদান করা, মানুষের মৌলিক চাহিদা যে, চিকিৎসা সেটির ভিত্তি গড়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও ডা. মাহমুদুর রহমান নোমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম সেলিম, মোফাক্কারুল ইসলাম রানা, আবদুস শাকুর খান, আজহারুল ইসলাম. জাহিদুল কবির, ফেরদৌস আহমেদ, নিলুফার ইয়াসমীন, জাহানারা বেগমসহ বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ