বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি দলীয় ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী অলিউর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে দলীয় নেতারা হোটেলে বসে চা খাওয়া অবস্থায় অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার ২৭ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের শাহমোস্তফা সড়কে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হলেও হামলাকারীরা তার আগেই বিএনপির সিনিয়র নেতাদেরকে হোটেলে ঢুকে লাঞ্ছিত করে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ৩০ জানুয়ারি মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনের মাত্র দুদিন পূর্বে এমন ঘটনায় বর্তমানে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
ঘটনাস্থলের পাশেই বিএনপি নেত্রী সাবেক সংসদ সদস্য খালেদা রব্বানীর বাসভবন। সেখানেও হামলার উদ্দেশ্যে হামলাকারীরা বাসার গেট টপকিয়ে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি নাসের রহমান দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে নিয়ে দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের সুলতানপুর এলাকায় গণসংযোগ শেষে নাসের রহমান চলে যান। এর পর বেলা ৩ টার দিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্স, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক জিএম মুক্তাদির রাজুসহ বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গণসংযোগ শেষে শাহমোস্তফা সড়কে অবস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চুর মালিকানাধীন ইসমাইল হোটেলে অবস্থান করছিলেন।
সেখানে তারা নির্বাচন কেন্দ্রিক দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একে অন্যের সাথে কথা বলছিলেন। এক পর্যায়ে নৌকার সমর্থকরা শতাধিক মোটরসাইকেলে করে হোটেলে অবস্থানরত বিএনপি নেতাদের উপর লাঠিসোটা দিয়ে অতর্কিত হামলা এবং রেস্তোরায় ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এসময় বিএনপি নেতারা হামলা থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়ে যান।
হামলার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আক্তার হোসেন। এসময় তাঁকে হামলাকারীদের নিবৃত করতে দেখা যায়। তিনি বলেন,নৌকা এবং ধানের শীষের সমর্থকদের মধ্যে ঘটনা ঘটেছে। তবে কি কারনে ঘটনার সূত্রপাত তা জানতে চেষ্টা করছি,পরবর্তীতে জানাতে পারব ঘটনার প্রকৃত কারণ।
ঘটনাস্থলে কথা হয় ব্যাপক ভাংচুরে ক্ষতিগ্রস্ত ইসমাইল হোটেলের কর্মচারী জাকির হোসেনের সাথে, এসময় তিনি জানান, কিছু বুঝে উঠার আগেই হটাৎ হামলার ঘটনায় হতবম্ভ হয়ে যাই। কোন রকম প্রাণ বাঁচাতে পিছন থেকে পালিয়ে যাই। কি কারণে হামলা সে বিষয়ে হোটেল কর্মচারী জাকির কোন মন্তব্য করতে চাননি।
বিষয়টি নিয়ে নাসের রহমানের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এই ঘটনা মৌলভীবাজারের রাজনৈতিক ইতিহাসে কখনো ঘটেনি, সিনিয়র নেতাদের উপর পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয় লোকজন যে হামলার ঘটনাও অতীতে ঘটেনি। এ ঘটনায় হোটেলে অবস্থানরত জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্সসহ পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসময় আরও অনেক সিনিয়র নেতাদের লাঞ্ছিত করা হয়। তিনি বলেন, আমি গণসংযোগ থেকে চলে আসার কিছুক্ষণ পরই আমাদের সিনিয়র নেতাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে হামলাকারীরা আমাদের প্রচারণার উপর নজরদারী চালায় জানিয়ে নাসের রহমান বলেন, মূলত ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে না আসে সে কারণেই এমন ঘটনা ইচ্ছাকৃত ভাবে আওয়ামীলীগ ঘটিয়েছে ।
এদিকে নেতাদের উপর হামলার বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে জেলা বিএনপির জরুরী বৈঠক ডেকেছেন নাসের রহমান। বুধবার সন্ধ্যায় জরুরী এক সভায় বসেন বিএনপি সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আহবান করা হয় বলে জানান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, মৌলভীবাজারের মানুষ খুব শান্তিপ্রিয়, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে মাঝে মধ্যে উত্তেজনা থাকেই, আজকের ঘটনা খুব বড় না হলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে যাতে কোন প্রভাব না পরে পুলিশ সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।