Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

উখিয়ায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ স মিল

চিরাই হচ্ছে সামাজিক ও সংরক্ষিত বনের টন টন গাছ

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ৫:২১ পিএম

উখিয়ায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ স মিলে চিরাই হচ্ছে শত শত একর সামাজিক বনায়নের টন টন গাছ। এর শুধু সদরের মধ্যে রাজাপালংয়ের মাছকারিয়া ও ফলিয়া পাড়া এলাকায় ৬ টি অবৈধ স মিল রয়েছে।

কয়েকজন গ্রামবাসীর ভাষ্য মতে ১০ বছর ধরে ওই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান হয়নি। বনবিভাগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় স্থাপিত স মিলে চোরাই গাছ চিরাই ও পাচারের ডিপুতে পরিণত হয়েছে এগুলো।

পরিবেশবাদী সংগঠন গুলোর মতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা এই অর্ধ শতাধিক স মিলের কারণে সামাজিক বনায়ন আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

শুধু তাই নই পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি সরকার এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযান চালিয়ে লাইসেন্স বিহীন স মিল গুলো উচ্ছেদ করা এতদ অঞ্চলের মানুষের এখন সময়ের দাবি।


কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে সমিল উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নে ১৫ টি, রত্না পালং ইউনিয়ন ৭ টি, জালিয়া পালং ইউনিয়নে ৬ টি, হলদিয়া পালং ইউনিয়নে ৫ টি ও পালংখালী ইউনিয়নের ১৬ টির মত সমিল বসানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ সব স মিলের বৈধ কাগজপত্র কিংবা কোন প্রকার লাইসেন্স নেই। ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে সিন্ডিকেট গঠন করে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে এসব সমিল বসানো হয়েছে এবং চলে আসছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, রাজা পালং ইউনিয়নের মাছ কারিয়া ও ফলিয়া পাড়া এলাকায় স্থাপিত অবৈধ ৬ টি স মিলে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট সামাজিক বনায়নের গাছ কর্তন করে চিরাই করছে পাচারকারীরা।
এসব চিরাইকরা কাঠ ডাম্পার ও জীপ যোগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরবরাহ করা হয়।
'সচেতন নাগরিক সমাজ' জানান, বিগত ১০ বছর ধরে ওই এলাকায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বা বন বিভাগের কোন অভিযান অথবা উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চোখে পড়েনি। বছরের পর বছর প্রকাশ্যে এসব স মিলে সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়নের গাছ কর্তন সহ চিরাই করা হলেও সংশ্লিষ্টরা রয়েছে অধরা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উখিয়া বনবিভাগের কতিপয় বনকর্মী প্রতিটি সমিল থেকে সাপ্তাহিক ও মাসিক মাসোহারা আদায় করে থাকে।

অভিযোগে প্রকাশ, এসব স মিল কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট। এরা আশপাশে চোরাই কাঠ মজুদ করে অঘোষিত ডিপু বানিয়েছে। সেই ডিপু থেকে পাচারকারীরা বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ কাঠ সরবরাহ করে থাকে।
এদিকে সামাজিক বনায়ন রক্ষায় স্থানীয় নাগরিক সমাজ অবৈধ সমিল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করার জন্য বারবার উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তার নিকট শরণাপন্ন হলেও তিনি কোন উদ্যোগ বা পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ অভিযোগ উঠেছে।
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলমের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান , স মিল উচ্ছেদের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। ইতিমধ্যে রত্নাপালং এলাকায় দুটি সমিল উচ্ছেদ সহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। পর্যায় ক্রমে সব অবৈধ সমিল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ