বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অধরাই থেকে যাচ্ছেন জেলার ইতিহাসে বড় কেলেঙ্কারির নেপথ্য নায়ক। ব্যবসায়ী পরিচয়ে সরকারী ব্যাংকের ১০১ কোটি টাকা নিয়ে পরিশোধ না করেই এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সুদ সমিত যে অঙ্কটি গিয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে প্রায় ২০০ কোটির ঘরে। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রভাব এবং আইনের মারপ্যাঁচে বিচারের আওতায় আনা যাচ্ছে না নামধারী সেই ব্যবসায়ীকে।
অভিযুক্ত সেই ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম। নিজেকে ইসলাম’স গ্রুপের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর দাবী করলেও তাঁর বিরুদ্ধে শুধু ফতুল্লা থানাতেই চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠছে ৪টি। গত ২১ ও ২২ জানুয়ারী মনিরুল ইসলামের সম্পর্কে গণমাধ্যমে ২টি প্রতিবেদন প্রকাশের পর, একে একে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। তারই ধারাবাহীকতায় জেলার ইতিহাসের বড় একটি কেলেঙ্কারি মনিরের এই শত কোটি টাকার ঋণখেলাপি।
অনুসন্ধ্যানে বেড়িয়ে এসেছে, মনিরুল ইসলামের মালিকানাধীন মেসার্স এইচ.এস ফ্যাশনের বিপরীতে ধর্মগঞ্জের ২২ শতাংশ জমি ও মনিরুল ইসলামসহ তাঁর ৪ ভাইয়ের নামে বিসিকের মেসার্স মুন নীট ওয়্যারের বিপরীতে ১০ শতাংশ জমি বন্ধক রেখে লোন নেন। সেই টাকা দিতে না পাড়ায় নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ অর্থঋণ আদালতে ২টি মামলা করেছে (মামলা নং-৪৯ ও ৫০/ ২০১৪) সোনালী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেট শাখা। মামলা ২টিতে মনিরুল ইসলামকে বিবাদী করে ১০১ কোটি ৪১ লাখ ৬৬ হাজার টাকার ঋণ খেলাপী দেখানো হয়েছে। সেই সাথে ব্যাংক আদালতের কাছে ১২ শতাংশ হারে ওই টাকার সুদ সহ ফেরতের আর্জি করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, সরকারী এ ব্যাংকের সুদ সমিত এখন মনিরুল ইসলামের মালিকানাধীন দুই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে! এতো শুধু সোনালী ব্যাংকের হিসেব, অনেকেই বলছেন অন্যান্য ব্যাংকে তলব করলে আরও বের হবে তথ্য।
এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের উর্ধতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে লোনের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০০৯ সালে মনিরুল ইসলামদের ত্রৈমাসিক কিস্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়ে ছিল। সেই টাকাও আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বন্ধককৃত সম্পতি নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু ক্রয়ের আগ্রহী কাউকে না পেয়ে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তাই মামলায় গিয়েছি। এখন নানা কারণেই টাকা আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া অভিযুক্ত মনিরুল ইসলামও বিভিন্ন সময় আত্মগোপনে থাকেন। তাই ধরাও সম্ভব হয় না।’
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মনিরুল ইসলাম নিজেকে ব্যবসায়ী দাবী করেন। অথচ চতুর এ মনিরুলের বর্তমানে তেমন কেনা ব্যবসা নেই বলে ঘনিষ্ঠজনরা দাবি করেছেন।
মনিরুল ইসলামের ফুফা শফিউদ্দিন বলেন, ‘মনিরুল ইসলামের বাবা ইসলাম গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব পাওয়ার কয়েক বছর পর মনিরুল ইসলাম সকল শিল্প কারখানা বন্ধ করে ৮ বছর আগে বিদেশে চলে গিয়েছেন। এখন ইসলাম গ্রুপের ভবন গুলো ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানী ব্যবসা পরিচালনা করছে। তাঁর এখন তেমনে কোন ব্যবসা নেই।’
এদিকে, কী ভাবে এতো টাকা ব্যাংক থেকে নিলেন এবং কোন কোন কৌশল ও জালিয়াতির আশ্রয়ে ধরা ছোঁয়ার বাইরে মনিরুল, তা নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।