Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় খেলাপি ঋণ কমেছে

খেলাপি ঋণ গ্রহিতা তিন লাখ ৩৫ হাজার, খেলাপি সাড়ে ৯৪ হাজার কোটি টাকা # চার মোবাইল অপারেটরের কাছে সরকারের পাওনা ১৩ হাজার ২২ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

মহামারি করোনার মধ্যে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ কমেছে। বর্তমানে দেশের খেলাপি ঋণগ্রহীতার সংখ্যা তিন লাখ ৩৪ হাজার ৯৮২ জন। আর তাতে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা কমে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের এই তথ্য তুলে ধরেন।

গত নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ করেছিল। মহামারীর মধ্যে বিশেষ সুবিধা ও ছাড়ের কারণে গত বছর এপ্রিলের পর নতুন করে কোনো ঋণ খেলাপি হয়নি। কিছু উদ্যোক্তা নিজ উদ্যোগে কিছু ঋণ শোধ করেছেন। তার ফলেই খানিকটা কমেছে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ।
অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই হিসাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ। তাদের ভাষ্য, সরকারের দেওয়া বিশেষ সুবিধার আওতায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলো নবায়ন করেছে। এর বাইরেও বিপুল পরিমাণ ঋণ পুনঃতফসিল বা অবলোপন করেছে ব্যাংকগুলো। তাতেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখাচ্ছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী খেলাপি ঋণ সম্পর্কিত মামলা দ্রæত নিষ্পত্তি এবং ঋণ আদায়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা সংসদে তুলে ধরেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশ থেকে অবমূল্যায়ন (আন্ডার ইনভয়েসিং) বা অতিমূল্যায়নের (ওভার ইনভয়েসিং) মাধ্যমে অর্থ পাচারের কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তা খতিয়ে দেখছে। যেসব ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, সেসব ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। অর্থ পাচার বন্ধে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপের ফলে বৈদেশিক মুদ্রা বা অর্থ পাচার অনেকাংশে কমে যাবে।

এদিকে খেলাপির মধ্যে দেশের চারটি মোবাইল অপারেটরের কাছে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন) ১৩ হাজার ২২ কোটি ৩৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৪ টাকা পাওয়া রয়েছে বলে তথ্য দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।
সংসদ সদস্য শহীদুজ্জমান সরকারের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য সংসদে তুলে ধরেন তিনি। অপারেটরগুলো হলো গ্রামীণ ফোন, রবি, সিটিসেল (বর্তমানে বন্ধ) এবং রাষ্ট্রয়াত্ত টেলিটক। এদের মধ্যে গ্রামীণ ফোন ও রবির কাছে বকেয়া অডিট আপত্তি সংক্রান্ত। আর সিটিসেলের বকেয়া উচ্চ আদালত নির্ধারিত এবং টেলিটকের কাছে পাওনা রয়েছে থ্রিজি তরঙ্গ বরাদ্দের টাকা। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণ ফোনের অডিট আপত্তির ১২ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৮ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৯ টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। তাদের কাছে বকেয়া রয়েছে ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ টাকা। রবি ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকার মধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা দিয়েছে। বকেয়া আছে ৭২৯ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকা।
সিটিসেলের কাছে বাকেয়া ১২৮ কোটি ছয় লাখ ৯৮ হাজার ৩২৩ টাকা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের কাছে বকেয়া এক হাজার ৫৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। টাকা আদায় নিয়ে টেলিটক বাদে তিনটি অপরাটরের সঙ্গে মামলা চলমান আছে। অন্যদিকে টেলিটকের টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হলেও কোন সাড়া মেলেনি বলে সংসদে জানিয়েছেন মন্ত্রী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ