Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মূল্য নির্ধারণ

করোনাসহ ১০ পরীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অক্সিজেনের ব্যবহার মূল্যসহ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ১০টি জরুরি পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর এ তালিকা দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের অনতিবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তালিকাটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের দৃশ্যমান স্থানে টানানোর জন্য বলা হয়েছে।

গতকাল শনিবার এ কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা। তালিকা অনুযায়ী একক ও মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার সিস্টেমে ঘণ্টায় ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১০০ টাকা, ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ১২৫ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য ১৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (জেনারেটর বেইজড) ঘণ্টায় ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০ টাকা, ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ৩০০ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০ টাকা। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক বেইজড) ঘণ্টায় ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০ টাকা, ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ২৫০ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটার ব্যবহারের জন্য ৩০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (হাইফ্লোনজেল ক্যানোলা) ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫শ’ টাকা।
জরুরি ১০টি পরীক্ষার মূল্য : সিবিসি পরীক্ষার সর্বোচ্চ স্থিরমূল্য ধরা হয়েছে ৪শ’ টাকা। এছাড়া সর্বনিম্ন ৪শ’ ও সর্বোচ্চ মূল্য ৬শ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিআরপি পরীক্ষার স্থিরমূল্য ৬০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬শ’ থেকে ৯শ’ টাকা। এলএফটি পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করেছে ১ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৯৫০ থেকে ১৬শ’ টাকা। এস.ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য ৪০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৩শ’ থেকে ৬শ’৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এস ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫০ থেকে ১৪৫০ টাকা।
ডি. ডিমার পরীক্ষার স্থিরমূল্য ১৫শ’ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ১১শ’ থেকে ৩২শ’ টাকা। এস. ফেরিটিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২শ’ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ১ হাজার থেকে ২২শ’ টাকা। এস. প্রোকালসিটোনিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য ২শ’ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫শ’ থেকে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা।
সিটি স্ক্যানের (চেস্ট) স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৫ হাজার টাকা থেকে ১৩ হাজার টাকা। অ্যানালগ চেস্ট এক্স-রের স্থিরমূল্য ৪শ’ টাকা এবং ডিজিটাল পদ্ধতির মূল্য নির্ধারণ করা ৬শ’ টাকা। এ দুটি এক্স-রে এর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৩শ’ থেকে ৫শ’ এবং ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা।
মূল্যতালিকার বিষয়ে ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, অধিদফতর দাম নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল। জমা দেয়া হয়েছিল উচ্চ আদালতেও। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। তাই নির্ধারিত এ মূল্য তালিকা কার্যকর করার জন্য বলা হয়েছে। হাসপাতালের দৃশ্যমান স্থানে টাঙাতেও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি। উচ্চ আদালতের আদেশ পালনের বিষয়ে এখন একটি প্রতিবেদনও দাখিল করব।
প্রসঙ্গত : ২০১৮ জুলাই মাসে এ বিষয়ে একটি রিট আবেদন করেন আইনজীবীদের ‘সংগঠন হিউম্যান রাইটস ল’ ইয়ার্স ’ এবং ‘সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ’র পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলমের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছর ২৪ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালিন আদেশও দেন। এ ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের শেষ দিকে হাইকোর্ট বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি (ইউজার ফি) নির্ধারণের অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দেন। এর মধ্যে অক্সিজেনের মূল্য নির্ধারণ ও কোভিড-১৯ সম্পর্কিত কিছু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণে সভা করে সরকার।
বাংলাদেশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে মূল্য নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। গত ডিসেম্বরে হাইকোর্টে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট আদেশ পাওয়ার পর এ মূল্য তালিকা কোভিড হাসপাতালের উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শনের জন এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ