Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সূতার দাম বাড়ায় বিপাকে নিট শিল্প

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে কাঁচামাল সঙ্কটে পড়েছে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। একই সঙ্গে রফতানি আদেশ কমে যাওয়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। সুতার দাম আর্ন্তজাতিকবাজারে বাড়ার কারণে চরম বিপাকে নিট শিল্প মালিকরা। এসব কারণে পোষাক শিল্প সঙ্কটে পড়ারও আশাঙ্কা করছেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পোশাক শিল্পের মালিকরা এখন করেনার কারণে তিন ধরনের সংকট দেখতে পাচ্ছেন। সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচামালের দাম বাড়ছে। যার কারণে বেড়ে গেছে উৎপাদন খরচ। কাঁচামাল সঙ্কটে সময়মত পণ্য সরবরাহও করতে পারছেন না তারা। বাংলাদেশের কারখানাগুলো নিট ও ওভেন এই দুই ধরনের পোশাক তৈরি করে। করোনায় মূলত ওভেন পোশাকের কারখানাগুলোই বেশি বিপাকে পড়ার কথা ছিলে। সেই তুলনায় নিট পোশাকের কারখানাগুলোতে প্রভাব কম হবে এমন ধারণা করেছিলো সবাই। কারণ নিট কারখানাগুলোর ৮৫ ভাগ সুতাই দেশে উৎপাদন হয়। আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সুতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে স্পিনিং মিলগুলো। বাধ্য হয়ে নিট কারখানা মালিকদের দ্বিগুনের বেশি দাম দিয়ে তাদের কাছ থেকে সুতা কিনতে হচ্ছে। এছাড়া ডায়িং-এর কেমিক্যাল চীন থেকে আসে। আর সব ধরনের পোশাকের জন্য বোতাম, জিপার, লেবেলসহ আরো যে অ্যাক্সেরসরিজ আছে, তার ৮৫ ভাগই আসে চীন থেকে। ফলে সব মিলিয়ে পুরো পোশাক শিল্পই এখন সঙ্কটের মুখে পড়েছে।

সা¤প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের রফতানিতে মন্দাভাব চলছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে তৈরি পোশাক পণ্যের রফতানি আয় ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ কমে ২৭ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে, নিটওয়্যার শিপমেন্ট থেকে এসেছে ১৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন শিপমেন্ট থেকে এসেছে ১৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় পাঁচ দশমিক পাঁচ-তিন ভাগ কম। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের সহায়তা চেয়েছে। আপৎকালীন তহবিল গঠন, ঋণের নিশ্চয়তা স্কিমসহ আরো কয়েকটি দাবি জানিয়েছে তারা। সরকারের কাছে লিখিত আবেদনে সংগঠনটি বলেছে, গত অর্থবছরে চীন থেকে ১ হাজার ৩৬৩ কোটি ডলারের পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি হয়েছে। তার মধ্যে সুতা, কাপড় ও অন্যান্য কাঁচামাল রয়েছে ৫০২ কোটি ডলারের। সব মিলিয়ে পোশাক খাতের ৪৬ ভাগ কাঁচামাল আসে চীন থেকে। করোনাভাইরাস অব্যাহত থাকলে পোশাক খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। চীন থেকে জাহাজ না আসায় আমদানি প্রায় ৫০ ভাগ কমে গেছে বলেও উল্লেখ করেন তারা। পাশাপাশি স্পিনিং মিল মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে সুতার দাম নির্ধারন করে দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে বিকেএমই’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আর্ন্তজাতিক বাজারে অস্বাভাবিকভাবে সুতার দাম বাড়ছে। সুতার দাম বাড়লেও বায়াররা বেশি দামে অর্ডার দিতে রাজি নন। এমনিতেই অর্ডার কম তারপরও অস্বাভাবিকভাবে সুতার দাম বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে নিটওয়্যার খাতের উদ্যোক্তারা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা বিজিএমইএ’র সঙ্গে বৈঠক করেছি। স্পিনিং মিলগুলোর এলসির পিইর মেয়াদ সাধারণত তিনদিন দিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আমরা অন্তত এই মেয়াদ ১৫ দিন করার জন্য দাবি জানিয়েছি বলে জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ