Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে জিলবাংলা চিনিকল

পুঞ্জিভূত ঋণের বোঝা

ফিরোজ খান লোহানী , ইসলামপুর (জামালপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

পূঞ্জিভূত ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জিল বাংলা চিনিকল ধ্বংসের দ্বাড়প্রান্তে দাড়িয়েছে। দীর্ঘ দিনের বকেয়া ঋণের বোঝা মাথায় থাকায় নুয়ে পড়েছে দেওয়ানগঞ্জের জিল বাংলা চিনি কল। স্বল্প উৎপাদন ক্ষমতা মিলের পূঞ্জিভূত বকেয়া ঋণের সুদ শ্রমিক কর্মচারীদের অন্তোষ, জোনের বিভিন্ন এলাকা প্রায় ২৫টি ইঞ্জিন চালিত ক্রাশার মেশিন ব্যবহারসহ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় দায়ী করা হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের যৌথ অর্থায়নে ৩৫১ একর জমির ওপর মিলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। চিনিকলটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৫৯-৬০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মিলের প্রথম আখ মাড়াই শুরু করেন। চলতি বছর ২০২০-২১ মৌসুমে মিল জোন এলাকায় ৭ হাজার আখ চাষি উৎপাদিত আখ নিয়ে ৬৩তম আখ মাড়াই শুরু হয়। ১৯৫৯-৬০ থেকে ৬২তম আখ মাড়াই মৌসুম অতিক্রমকালে ৪৪টিতে লোকসান ১৮টি লাভ করেছে। মিলের এই ৬২তম আখ মাড়াই বড় অংশটাই লোকসান দিতে হয়েছে।
অন্যদিকে গত অর্থ বছরে ২০১৯-২০ আখ মাড়াই মৌসুমে ৬ কোটি টাকা মূল্য ১ হাজার মেট্রিকটন চিনি, ১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা মূল্য ৭ মেট্রিকটন চিটা গুড় অবিক্রিত রয়েছে। শ্রমিক কর্মকর্তা কর্মচারী অনুমোদিত ৯৮৯ জনের মধ্যে কর্মরত ৬৩৭ জন কর্মরত রয়েছেন। বাকী ৩৫২টি পদ দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য হলেও ২০২০ শ্রমিকদের ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেতন বকেয়া রয়েছে। ২০২০-২১ আখ মাড়াই ৯৫ দিন ধার্য্য করা হলেও বিগত বন্যার কারণে চরাঞ্চলের আখের ব্যাপক ক্ষতির ফলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মিল বন্ধ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
মিল কৃষি ব্যবস্থাপক মজিবর রহমান জানান, আপাতত সরকারের দেওয়ানগঞ্জ সুপার মিল বন্ধ করে দেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আখ মাড়াই ব্যাংক সুদসহ চিনির মূল্য ১শ’ ৮০ টাকা পড়লেও চিনি বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। বিভিন্ন রাসায়নিক সংস্থা থেকে বীজ সার কীটনাশক প্রায় ২ কোটি ৪৮ লাখ ও বিসিআইসি ৫৬ কোটি টাকা মিলের নিকট প্রাপ্ত রয়েছে। এই পুজিভ‚ত ব্যাংক ঋণের টাকা সুদ দিতে গিয়ে মিলের দীর্ঘ দিনের লোকসান টানতে হচ্ছে।
আখ চাষি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আ. মান্নান মোল্লা জানান, প্রতি বছর পূঞ্জি সঙ্কট প্রকৃত চাষিদের লোন না দেয়ায় চাষিদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
জিল বাংলা চিনিকলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চাষিরা জানান, মিলটিতে প্রতি বছরের লোকসানের দায় মুক্ত করে লাভজনক পর্যায়ে নিতে গেলে পুঞ্জিভ‚ত বকেয়া ঋণের সুদ মওকুফ করাসহ পুরাতন পদ্ধতির উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নয়ন করে মাড়াই ক্ষমতা দ্বিগুণ করতে হবে।
চাষিদের ন্যায্য মূল্য সঠিক সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এবং দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে চিনি শিল্প ধ্বংসকারী শ্যালো ইঞ্চিন চালিত গুড় তৈরির সরঞ্জাম ক্র্যাশার মেশিন বন্ধ করতে হবে।
ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল হক জানান, আখ চাষিদের উৎসাহিত করণ, সার বীজ, যথাসময়ের মধ্যে আখের টাকা পরিশোধ, চাষিদের স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান, প্রান্তিক চাষিদের প্রতিমাসে আখ চাষের উদ্বৃদ্ধকরণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, কৃষকরা যেন হয়রানির স্বীকার না হয় সেদিকে কর্র্তৃপক্ষের খেয়াল রাখাসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে।



 

Show all comments
  • Shariful Islam ১৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:২৭ পিএম says : 0
    Kau kicu kore perbey Na , jodi perto onek age e perto, Amke lease din, Ami Amer Canadian company niye , investment/Management group niye kaj korle , shob problem solved korte perbo, kono one stop solutions thakley Kau amke janaben pls ... thx
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ