Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিলাসবহুল পর্যটন জাহাজ বে-ওয়ানের যাত্রা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:০২ পিএম

নানা বয়সের মানুষ জাহাজে আরোহণ করছে। জেটিকে ঘিরে উৎসবের আমেজ। রোমাঞ্চকর এক সমুদ্র যাত্রার অপেক্ষা সবার চোখে মুখে। রাত তখন ৯টা। কয়েক ঘণ্টা পর শুরু হবে সমুদ্র যাত্রা। চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিয়ে যাত্রা শুরু করবে বিলাসবহুল প্রমোদ জাহাজ এমভি বে-ওয়ান।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় পতেঙ্গার ওয়াটার বাস টার্মিনাল থেকে পাঁচ শতাধিক পর্যটক নিয়ে বিশ্বের অন্যতম এই ক্রুজ শিপ বে-ওয়ান যাত্রা শুরুর কথা রয়েছে। মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র হয়ে সেটি প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পৌঁছবে শুক্রবার সকালে।


দেশে বিশ্বমানের এ পর্যটন জাহাজ চালুর ফলে মেরিটাইম ট্যুরিজম এবং সুনীল অর্থনীতিতে নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেল বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশে আধুনিক পর্যটন শিল্প বিকাশে নতুন সংযোজন বে-ওয়ান। নীল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা এনে দেবে জাপানে তৈরি এ ক্রুজ শিপ।
প্রাথমিকভাবে সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার রাত ১১টায় পতেঙ্গা থেকে ছেড়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে সকাল ৭টায়। শুক্রবার, শনিবার ও রোববার দুপুর ১টায় ফিরতি যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে সন্ধ্যা ৭টায় জাহাজটি ফিরবে চট্টগ্রামে। একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এমভি বে-ওয়ানের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স।
পর্যটকদের জন্য এই জাহাজে সর্বনিম্ন যাওয়া-আসার ভাড়া হবে তিন হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। দুই হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম এই জাহাজটিতে প্রাথমিকভাবে ৫০০ থেকে এক হাজার পর্যটক পরিবহনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। জাপানের তৈরি জাহাজটিতে ক্রু রয়েছে ১৬৭ জন। এর দৈর্ঘ্য ৪০০ ও প্রস্থ ৫৫ ফুট। জাহাজটি প্রতি ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ রশিদ বলেন, বে-ওয়ান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ ধরনের জাহাজে ভ্রমণের জন্য অনেকে বিপুল টাকা খরচ করে বিদেশে যান। এখন দেশেই এ সুবিধা চালু হলো। বিদেশি পর্যটন ও বিনিয়োগকারীরাও এই জাহাজে প্রমোদ ভ্রমণ করতে পারবেন। ভবিষ্যতে দেশের বাইরে পর্যটন এলাকা ভ্রমণ এবং এই জাহাজযোগে হজযাত্রী পরিবহনেরও পরিকল্পনা রয়েছে।


প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ক্যাপ্টেন (অব.) মাসুক হাসান আহমেদ বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নীল সাগরে ঘুরে বেড়ানোর রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পাবেন পর্যটকেরা। বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জনের মাধ্যমে ব্লু-ইকোনমির অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বে-ওয়ান চালুর ফলে মেরিটাইম ট্যুরিজমের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। সমুদ্র ভ্রমণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা দেশের অফুরান সম্ভাবনার সমুদ্র সম্পদ দেখারও সুযোগ পাবে।
এদিকে পতেঙ্গা পয়েন্টে জেটি থাকলেও সেন্টমার্টিনে জেটি না থাকায় পর্যটকদের সেখানে নামতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ওঠানামার পাশাপাশি সময়েরও অপচয় হয়। জানা গেছে, পাঁচ দশমিক চার মিটার গভীরতার বে-ওয়ান সেন্টমার্টিনের কাছে গিয়ে গভীর সমুদ্রে থামে। সেখান থেকে ছোট জাহাজে যাত্রীদের নামিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নেয়া হয়। পাটাতন দিয়ে ছোট জাহাজে নামতে গিয়ে হুড়োহুড়ির কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেটি নির্মাণ জরুরি। কর্ণফুলী শিপ ইয়ার্ডের এমডি এম এ রশিদ জানান, সেন্টমার্টিনে এলজিইডি একটি জেটি নির্মাণ করছে। জেটিটি নির্মাণ হলে সেখানে খুব সহজে জাহাজটি ভিড়তে পারবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ