Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বইমেলার তারিখ নিয়ে বাংলা একাডেমি ও প্রকাশকদের মতবিরোধ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

অমর একুশে গ্রন্থ মেলার আয়োজন নিয়ে প্রকাশকদের সঙ্গে বাংলা একাডেমির মতবিরোধ চলছে। মেলায় ক্রেতা বা দর্শনার্থীর শারীরিক উপস্থিতিতেই ফেব্রুয়ারির শেষ বা মার্চের শুরু থেকে মেলা আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে প্রকাশক সমিতি। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে অর্থাৎ বাংলা একাডেমী কতৃপক্ষ আগামী এপ্রিল-মে মাসে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করছে। এই মতবিরোধ মিটাতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের উপস্থিতিতে আগামী ১৭ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি ও প্রকাশকরা বৈঠকে বসবেন। এদিনই চূড়ান্ত হবে এবারের অমর একুশে গ্রন্থ মেলা কবে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রকাশকরা বলছেন, মূলত ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমির অমর একুশের গ্রন্থ মেলার আয়োজন করা হয়। তাই তারা একুশে ফেব্রুয়ারি আগেই বউ মেলা শুরু করতে চান। প্রকাশকদের অনেকেই বলেন এবারের বই মেলা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে উৎসর্গ করা হচ্ছে। তাই বই মেলা ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ এ সময়ে আয়োজন করলে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনও পালন করা যাবে।

বাংলা একাডেমী বলছে, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। ইচ্ছা থাকলেও আমরা এ সময় মেলার আয়োজন করতে পারছিনা। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসলেই মেলার আয়োজন করা হবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে যদি টিকা প্রয়োগ শুরু হয় তাহলে মার্চ পর্যন্ত সেটা চলবে। এ অবস্থায় এপ্রিল বা মে মাসে বই মেলার আয়োজন করা যেতে পারে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: আব্দুল মান্নান ইলিয়াস বলেন, করোনার কারণেই মেলা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে মেলার আয়োজন করতে হবে। মার্চ মাসে অনেক গুরুত্বপ‚র্ণ অনুষ্ঠান থাকে। তাছাড়া করোনার কারণে সে সময়ও বৃহৎ জনসমাগম করারও সুযোগ নেই। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের সিদ্ধান্তে সবকিছু ঠিক হবে। তবে যাই সিদ্ধান্ত হোক স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই বইমেলার আয়োজন করা হবে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোনও মতামত নেই। সরকার বা মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। বইমেলা করা বাংলা একাডেমির দায়িত্ব। কিন্তু জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আগামী ১৭ জানুয়ারি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক হবে। এর পর তিনি ব্রিফিং করবেন, দেখা যাক কী বলেন।

জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারি বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই চাই। তবে বইমেলা সরকার কবে নিয়ে যাবে সেটা একটা ব্যাপার। যদি সরকার ফেব্রুয়ারি শেষে অথবা মার্চের প্রথমে শুরু করে, হতেই পারে। জরুরি পরিস্থিতির কারণে এটা কনসিডার করাই যায়। কিন্তু যদি এমন একটা সময়ে নিয়ে যায় যখন প্রাকৃতিক কারণে মেলা বাধাগ্রস্ত হবে, তাহলে তো আমাদের বলার কিছু থাকবে।

অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম আয়োজক বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পক্ষ থেকে গত ৫ জানুয়ারি এক সভায় আবেদন জানানো হয়, ফেব্রুয়ারিতে না পারলেও আগামী ১ মার্চ থেকে যেন বইমেলার আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতারা বলেন, এপ্রিল বা মে মাসে, বিশেষ করে মে মাসে বই মেলা করলে বৃষ্টিতে কোটি টাকার বই নষ্ট হবে। যে অবকাঠামো দিয়ে বইমেলার স্টল করা হয় তাতে ঝড় বা বৃষ্টিতে বই রক্ষা করা যাবে না। তাছাড়া ক্রেতাও পাওয়া যাবে না বৃষ্টি হলে। সে কারণে আমরা চাই ফেব্রæয়ারির শেষে না হলেও ১ মার্চে থেকে বই মেলা করা হোক।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা (বইমেলা) বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ঘোষণা দেওয়া হয় ভার্চুয়ালি বই মেলা করা হবে। তাতে আপত্তি জানান প্রকাশকরা। তারা চান ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বই মেলা শুরু করা হোক। এর আগে ভার্চুয়ালি বইমেলা করার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির বাধার মুখে তা ভেস্তে যায়। পরে শারীরিক উপস্থিতিতে করা হবে এমন আলোচনা শুরু হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বইমেলা

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ