দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর : আত্মার সাথে আত্মীয়তার বন্ধন সম্পর্কিত। বৈবাহিক সূত্রে কিংবা জন্মগতভাবে আত্মীয়তার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে। আত্মীয়তার বন্ধন হায়াত ও রিজিক বৃদ্ধির পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যা হয়তো আমরা জানি না বা এ বিষয়ে গুরুত্ব দেই না বা বুঝার চেষ্টা করি না। আত্মীয়তার বন্ধন এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে, কেউ যদি তার হায়াত ও রিজিক বৃদ্ধি করতে চায়। তাহলে আত্মীয়তার বন্ধন অটুঁট রাখতে হবে। হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা:) কে বলতে শুনেছি যে, ‘যে লোক তার রিজিক প্রশস্ত ও আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।’(বোখারি, হাদিস :৫৫৫৯)। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার রিজিক বেড়ে যাক এবং তার হায়াত দীর্ঘায়িত হোক, সে যেন আত্মীয়ের সাথে সদ্ব্যবহার করে।’ (বোখারি, হাদিস: ৮/৪৯৮৬)।
আমাদের পরকালীন জীবনের সুখ-শান্তির পিছনে দুনিয়াবি আত্মীয়তার বন্ধন সম্পর্কিত। দুনিয়ার জিন্দেগীতে যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। তারা কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। অথচ আমরা জেনে বা না জেনে সামান্য কথা কাটাকাটি কিংবা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে তালাক দেয়া, পরস্পরের সাথে কথাবার্তা বলা বন্ধ করে দেয়া, কারো মুখ কেউ না দেখার প্রতিজ্ঞা করা কিংবা নিকট আত্মীয় স্বজনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করার মত ঘৃণ্য কাজের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে, পরকালে জান্নাতের পথ বন্ধ করে দেই। হযরত মুহাম্মদ ইবনে মুতঈম (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন,‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’( মুসলিম, হাদিস:৬২৮৯)।
আল্লাহতায়ালার রহমত বরকত পেতে হলে আত্মীয়তার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে না। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি হযরত রাসূল (সা:) এর সাথেও তার সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে যাবে। হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন,‘আত্মীয়তার সম্পর্ক রহমানের মূল। সুতরাং যে তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে, আমিও তার সাথে সুম্পর্ক রাখবো। আর যে তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’ (বোখারি, হাদিস: ৫৫৬৩)। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন,‘ কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে আত্মীয় সম্পর্ক ছিন্নকারী থাকলে তাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হয় না।’ (আল আদাবুল মুফরাদ:৬৩)। হযরত আবু বাকরা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন,‘আল্লাহ সেসব পাপীকে পার্থিব জগতেই তার পাপের ত্বরিৎ শাস্তি দেন, তা হলো আত্মীয় সম্পর্ক ছিন্নকারী ও বিদ্রোহীর পাপ এবং আখিরাতেও তার জন্য শাস্তি জমা রাখে।’(আল আদাবুল মুফরাদ:৬৩)।
আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে আত্মীয়তার বন্ধন অটুটু রেখে হায়াত ও রিজিক বৃদ্ধির তৌফিক দান করুন। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন: ফিরোজ আহমাদ ইসলামিক চিন্তাবিদ ও গবেষক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।