Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারাদেশে ভ্যাকসিন প্রথম ধাপেই

কোন জেলায় কতজন পাবেন তার সম্ভাব্য তালিকা তৈরি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে প্রথম ধাপেই পর্যায়ক্রমে ৬৪ জেলায় ভ্যাকসিন দেয়া হবে। ইতোমধ্যে কোন জেলায় কতজন প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাবেন তার একটি সম্ভাব্য তালিকাও তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জনসংখ্যার ঘনত্ব, সংক্রমণের হার ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মোট বরাদ্ধ তালিকায় সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন বরাদ্দ রাখা হয়েছে ঢাকা জেলায় ১২ লাখ ৫৪ হাজার ২০০ ডোজ।

আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি দেশে অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন আসবে এমনটি জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রথম ধাপে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই সারাদেশে প্রথম ধাপের ভ্যাকসিন দান কার্যক্রম শুরু হবে। এই ভ্যাকসিন দান কর্মসূচিতে ভ্যাকসিন পাবেন দেশের ৮ দশমিক ৬৮ শংতাশ মানুষ।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জাইশঙ্কর গতকাল বলেছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে করোনভাইরাস ভ্যাকসিনের রফতানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দেশটি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স-এ দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে জাইশঙ্কর বলেন, আমরা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কি ধরনের অবদান রাখব সেটি দ্রুতই প্রকাশ করা হবে।

এই বিপুল জনগোষ্টিকে ভ্যাকসিন দানের জন্য প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ সহয়িকা চুড়ান্ত খসড়া করা হয়েছে। পাশপাশি অনলাইন প্রশিক্ষণ, মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ ও বাজেট চুড়ান্তকরণ, স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ নির্দেশিকা তৈরি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে এগুলো সব জেলা পর্যায়ে পৌছে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আগামী ১৮ থেকে ১৯ জানুয়ারি ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়ে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের (ডেপুটি সিভিল সার্জন, ইউএইচএফপিও) প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ হবে ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি এবং ভ্যাকসিন দান কর্মীদের প্রশিক্ষণ চলবে ২৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি। বিভিন্ন পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবকদের ওরিয়েনটেশন হবে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি।

যেসব স্থান থেকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে তারমধ্যে রয়েছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/সদর হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যধি হাসপাতাল। এসব জায়গায় প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দিতে ইতোমধ্যে ৭ হাজার ৩৪৪টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দলে দু’জন সরাসরি ভ্যাকসিন দেবেন এবং বাকি ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে অন্যান্য কাজ করবেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিসট্রিবিউশন প্লানে দেখা গেছে, বরিশাল বিভাগে ভ্যাকসিন দেয়া হবে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জনকে। চট্টগ্রামে বিভাগে দেয়া হবে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, ঢাকা বিভাগে দেয়া হবে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে। খুলনা বিভাগে দেয়া হবে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে। রাজশাহী বিভাগের দেয়া হবে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে। রংপুর বিভাগে দেয়া হবে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে। সিলেট বিভাগে দেয়া হবে ১০ লাখ ৩২ হাজার এক জনকে। তিনটি রাউন্ডে এই জনগোষ্ঠিকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ’র লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক বলেন, অধিদফতরের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছবে ২৭ জানুয়ারি। ভ্যাকসিন পাওয়ার পর কয়েকটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকদের পরীক্ষামূলকভাবে দেয়া হবে। তার এক সপ্তাহ পর, মাঠ পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠীকে ৮ সপ্তাহ ব্যবধানে (১ম ডোজের ৮ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ) ভ্যাকসিন দেয়া হবে। প্রথম ধাপেই ভ্যাকসিন পাবেন কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসাবে কর্মরত সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরপর পর্যায়ক্রমে পাবে অন্য সবাই।

উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্বাবিত এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এর তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুসারে প্রথম ধাপে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা। এ মাসেই যার প্রথম চালান আসছে।



 

Show all comments
  • Nasir Mahmud Shãh ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৫ এএম says : 0
    আল্লাহ বিশ্বের সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • Arifur Rahman ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৮ এএম says : 0
    করোনা বাণিজ্যে গবেষকদের বড় ভূমিকা রয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nahi Dullah ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০২ এএম says : 0
    টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলার সম্ভাবনা আছে
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Jalil ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০৩ এএম says : 0
    দুর্নীতি যুক্ত বাংলাদেশে করোনা টেস্টের মত টিকা নিয়ে অনেক দুর্নীতি হবে এবং গরীর সাধারণ মানুষ সবার শেষে টিকা পাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mustafizur Rahman ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০৩ এএম says : 0
    যে জাতী করোনার চাইতেও শক্তিশালী তাদের আবার ভেক্সিন কিসের?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ