Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টিকা সংগ্রহ ও বিতরণে স্বচ্ছতা চায় টিআইবি

চীনের টিকা ট্রায়াল চালানোর সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

কোভিড-১৯ এর টিকার ক্রয়পদ্ধতি, প্রাপ্তি ও অগ্রাধিকার অনুযায়ী বিতরণ প্রক্রিয়ায় যেকোনো ধরনের বিতর্ক ও বিভ্রান্তি দূর করতে সকল পর্যায়ে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় জরুরি কেনাকাটার নামে স্বাস্থ্যখাতে অবারিত দুর্নীতির ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বৃহৎ এই টিকা কার্যক্রমে যেকোনো মূল্যে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রযোজ্য আইন ও বিধি অনুসরণের তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে দেশে চীনা টিকা সিনোভ্যাকের ট্রায়াল চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও বেশ কয়েক মাস ঝুলে থাকার পর সেটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।

টিআইবির বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কোভিড-১৯ মহামারি থেকে সুরক্ষা পেতে কার্যকর টিকার সংখ্যা এখন পর্যন্ত খুবই কম হওয়ায় এবং এর উৎপাদন ও সরবরাহ সীমাবদ্ধতা থাকায়, এর প্রাপ্তি নিয়ে শুরু থেকেই বিশ্বজুড়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতা লক্ষণীয় ছিল। এমন বাস্তবতার মাঝেও সরকার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে দ্রুত সংগ্রহের উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক চুক্তি এবং এই উৎস থেকে টিকার সময়মতো প্রাপ্তির সম্ভাবনা বিতর্ক এড়াতে পারেনি। বরং বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিকার প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেভাবে বাণিজ্যিক চুক্তিটিকে দুই দেশের জি-টু-জি বলার চেষ্টা চালিয়েছে তা অনভিপ্রেত। অন্যদিকে ভারতে টিকার অনুমোদনের পরদিনই যেভাবে দ্রæতগতিতে কোভিশিল্ডের অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসনের বিদ্যমান আইন কতটা মানা হয়েছে এবং কোন কোন নথির ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একইভাবে সরাসরি কেনা টিকার জন্য বেক্সিমকোকে তাদের খরচ ও কমিশন বাবদ যে মূল্য দেয়ার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, তা কোন নীতি বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নেয়া হয়েছে? এর পেছনের যুক্তি বা বিবেচনা কী ছিল, তাও পরিষ্কার করতে পারেনি। এটি যেকোনো পর্যায়ের সরকারি কেনাকাটার স্বচ্ছতার পরিপন্থী। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের মনে রাখা জরুরি যে, মহামারি যেন কোনোভাবেই কারো জন্য অন্যায় সুবিধার মাধ্যমে পকেটপূর্তির উৎসবে পরিণত না হয়।

কোভিড-১৯ এর টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই এক ধরনের সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, দেশে চীনা টিকা সিনোভ্যাকের ট্রায়াল চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও বেশ কয়েক মাস ঝুলে থাকার পর সেটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আবার দেশিয় কোম্পানি গেøাব বায়োটেকের টিকার ট্রায়াল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন মিলেছে টিকা প্রাপ্তির অশ্চিয়তার বিতর্কের মাঝেই। একইভাবে চীনা কোম্পানি আনহুই জিফেইয়ের টিকার ট্রায়াল চালানোর চিন্তাভাবনার কথা জানা যাচ্ছে সমালোচনার মুখে। এর মাঝে সংরক্ষণ জটিলতা থাকার পরও কোভ্যাক্স উদ্যোগের অংশ হিসেবে ফাইজারের টিকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখানে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারি মূল্যায়ন অনুযায়ী ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ ও ব্যবহারে যেখানে ৬৪ জেলার ৫৬টিতেই মানসম্পন্ন বিশেষ শীতলীকরণ ব্যবস্থা নতুন করে তৈরি করতে হবে এবং টিকাটির প্রয়োগে বিশেষ সিরিঞ্জের প্রাপ্তির চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত কতটা ফলদায়ক হবে এবং টিকার তুলানামূলক দরের বিষয়টি কতটা বিবেচনা করা হয়েছে, তা পরিষ্কার করা প্রয়োজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ