Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে চাল ডাল তেলের পরে রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ ভোক্তাদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২১, ৪:১৯ পিএম

চাল,ডাল ও ভোজ্য তেলের সাথে দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে এলপি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারন ভোক্তাদের দূর্ভোগ আরো এক দফা বেড়েছে। প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের ভরা মৌসুমে চালের নজিরবিহীন অগ্নিমূল্যে সাধারন মানুষের নভিশ^াস ওঠার মধ্যেই ভোজ্য তেল ও রান্নার গাসের দামও ক্রমাগত লাফিয়ে বাড়ছে। গত তিন মাসে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্রই সাড়ে ১২ কেজি গ্যসের সিলিন্ডার প্রতি দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ ভাগ। অপরদিকে ভোজ্যতেলের দামও গত তিন মাসে লিটার প্রতি ১৫ টাকার ওপরে বেড়েছে। মুশুর, মুগ ও খেশারী ডালের দামও সাধারনের ধরা ছোয়র বাইরে চলে যাচ্ছে। 

দক্ষিণাঞ্চলের খুচরা বাজারে এখন নি¤œ-মধ্যম মানের ‘বিআর-২৮’ বা ‘২৮ বালাম’ চাল বিক্রী হচ্ছে প্রায় ৪৫ টাকা কেজি । আর মধ্যমÑভাল মানের মিনিকেট চাল ৬০ টাকার ওপরে। গত তিন মাসে এসব চালের দাম বেড়েছে প্রায় ২০%। সরবারহে কোন ঘাটতি না থাকলেও চালের বাজার এখন অপ্রতিরোধ্য। এমনকি ভরা মৌসুমে মোকামে ধান ১২শ বা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রী হলেও চালের সাথে তার ফারাক বিস্তর। এবার আম্পান ও ভাদ্র মাসের ভরা অমাবশ্যায় ভর করে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের সাথে উজানের বণ্যার ঢল আর অতি বর্ষনে দক্ষিণাঞ্চলে আমন ও আউশ ধানের কিছুটা ক্ষতি হওয়য়ায় উৎপাদন ঘাটতির আশংকায় আগে থেকেই মিল মালিক ও তাদের ফরিয়ারা বাজারের নিয়ন্ত্রন হাতে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে ভরা মৌসুমেই চালের বাজার নিয়ন্ত্রনের বাইরে।
এদিকে ভোজ্য তেল সরবারহেও নুন্যতম কোন ঘাটতি না থাকলেও গত মাস তিনেক ধরে দাম ক্রমাগত উর্ধমুখি। এখন বরিশাল মহানগরীর খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার ১১৫ টাকা। যা তিন মাস আগে ৯০ টাকায়ও বিক্রী হত। রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থা টিসিবি বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিনাঞ্চলে জেলা সদরগুলোতে অতি সিমিতাকারে কিছু সয়াবিন বিক্রী করলেও তা সাধারন ভোক্তাদের কাছে পৌছছে না। ডিলাররা ৮০ টাকা লিটারের সয়াবিন তেল কিনতে হলে ৫ কেজি পেয়াঁজ কেনা বাধ্যতামূলক করায় বেশীরভাগ ক্রেতাই টিসিবি’র ভোজ্য তেল কিনতে পারছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। তেমন কোন যুক্তিগ্রাহ্য কারন ছাড়াই সব ধরনের ডালের দামও গত তিন মাসে বেড়েছে কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা। মুসুল আর মুগ ডালের কেজি এ অঞ্চলে এখন ১৩০ টাকা।
এদিকে গত মাস দুয়েক ধরে দক্ষিনাঞ্চলে রান্নার গাসের দামও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। নভেম্বরের শুরুতে দক্ষিনাঞ্চলের বাজারে সাড়ে ১২ কেজির এলপি গ্যাস সিলিন্ডার যেখানে ৭২৫ টাকায় বিক্রী হত, এখন তা সাড়ে ৯শ টাকা। উপজেলাগুলোতে তা আরো ২৫ টাকা বেশী। বিভিন্ন গ্যাস বিক্রেতাদের দাবী, কোম্পানী থেকে দাম বাড়ানোর ফলেই তাদের কিছু করার থাকছে না। টাকার তুলনায় ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারনেই আমদানীকৃত এসব এলপি গ্যাসের দাম বেড়েছে বলে দাবী করেছেন এলপিজি’র কয়েকজন বাল্ক বিক্রেতা।
দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলায় প্রায় ১৫টি বেসরকারী গ্যাস কোম্পানী এলপিজি বাজারজাত করছে। কিন্তু মূল্য নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে কোন প্রতিযোগীতা না থাকলেও দাম বাড়াবার ক্ষেত্রে সবাই এককাট্ট বলেও অভিযোগ রয়েছে। সরকারী পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানী দক্ষিণাঞ্চলে এলপি গ্যাস বিক্রী করলেও তা এতটাই সিমিত যে, চাহিদার ১০%-ও পুরন হচ্ছে না। এ ব্যাপারে বরিশালে রাষ্ট্রীয় এসব জ¦ালানী কোম্পানীর বিক্রয় ও বিপনন ব্যবস্থাপকদের সাথে আলাপ করা হলে তারা চাহিদানুযায়ী সরবারহের ঘাটতির কথা স্বীকার করলেও উৎপাদন সহ বিপনন ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর নিভরশীল বলে জানান। দক্ষিণাঞ্চরে প্রতিমাসেনুন্যতম৫০ হাজার সিলিন্ডার গ্যসের প্রয়োজন হলেও রাষ্ট্রীয় ৩টি কোম্পানী ৩ হাজার সিলিন্ডারও সরবারহ করতে পারছে না বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ