Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে

নোয়াখালীতে আবদুল কাদের মির্জা

নোয়াখালী ব্যুরো ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি’র ছোট ভাই বসুরহাট পৌর মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, চারিদিকে বারুদের গন্ধ, অস্ত্র তাক করে রেখেছে। আমাকে মেরে ফেলতে পারে। আমাকে মেরে ফেললে আপনারা জানাজা পড়ে মাটি দিয়ে আসবেন। তবে আমি রীতিমত সত্য কথা বলে যাবো।

গতকাল শুক্রবার বসুরহাট পৌরসভার ২, ৫, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য রাখেন আসন্ন পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা। কাদের মির্জা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি এ বাঙালি জাতির জন্য ৩০ বছর আন্দোলন করেছেন, ১৪ বছর কারাগারে ছিলেন, ৩ বার ফাঁসির কাষ্টে গিয়ে বাঙালি জাতির জয়গান গেয়েছেন। সেই নেতাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। আপনারা যে যে দল করেন শেখ হাসিনাকে অপছন্দ করেন, আওয়ামী লীগকেও অপছন্দ করেন সমস্যা নেই কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করবেন, না হলে অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি পাবো। গত নির্বাচনে শেখ হাসিনা প্রশাসনের লোকজনের নিকট ফল চেয়েছেন। অতি উৎসাহী প্রশাসনের লোকজন গাছসহ নেত্রীকে দিয়েছেন। এতে নেত্রীর ভাব মর্যাদা নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনের লোকজন বেশি উড়তেছে তাদের বিচার হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছেন কিন্তু ভোটের অধিকার এখনও নিশ্চিত হয় নাই। নেত্রীকে অনুরোধ করব, সিদ্ধান্ত নিন, মাদক ও নারী কেলেঙ্কারীর সাথে আওয়ামী লীগের কোন নেতা থাকতে পারবেন না। নেত্রীকে বলব, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করুন। তিনি আরও বলেন, আমাদের পোস্টার মাইজদী ও ফেনীর ষড়যন্ত্রকারীরা ছিঁড়ে ফেলেছে। বিএনপি, জামায়াত আমার পোস্টার ছিঁড়ে নাই। আমি আবারও বলছি বৃহত্তর নোয়াখালীতে সুষ্ঠু নির্বাচনে হলে আওয়ামী লীগ ৩-৪টি আসন পাবে। বাকী আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা হেরে যাবে, পালানোর পথ খুঁজে পাবে না, আমাকে এ কথাগুলো বলতে হবে, না বললে তারা সংশোধন হবে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, এগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাতে হবে। শেখ হাসিনা সাহসী নেত্রী ১৭ বার ওনাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আল্লাহ ওনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। বিএনপি পিন্টুর মত দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিচার করেনি, নেত্রী নিজের দলের দুর্নীতিবাজদের বিচার করে দেশবাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন। বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসেছে, আ.লীগ ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে। মির্জা আরও বলেন, আমাদের নেতা মো. শাহাব উদ্দিন দুই পিরিয়ড উপজেলা চেয়ারম্যান, অথচ তিনি সরকারের সম্মানী ভাতা নেননি, সরকারি বাড়িতেও থাকেন নি। এ সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতাকে জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা বানানো হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ আ.লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুল, সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক নাজিম, বসুরহাট পৌরসভা আ.লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আজম পাশা চৌধুরী রুমেলসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমার নেতা ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় বলতে চাই, যদি কাগজে লেখ নাম, সে নাম মুছে যাবে, পাথরে লেখ নাম, পাথর ক্ষয়ে যাবে, হৃদয়ে লেখ নাম, সে নাম রয়ে যাবে। আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আমার নাম আপনাদের হৃদয়ে লিখে রাখবেন এবং আমাকে ভোট দিবেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই এবং বসুরহাট পৌরসভা মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তার পক্ষে এগিয়ে এলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও ফেনীর সাবেক এমপি জয়নাল হাজারী।

গত বৃহস্পতিবার ফেবসুক লাইভে আবদুল কাদের মির্জাকে বীর পুরুষ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, কাদের মির্জা সত্য কথা বলেছেন। মির্জা প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশে এখনও বাক স্বাধীনতা রয়েছে, আছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। আমার বিশ্বাস মির্জার বক্তব্যের কারণে বাংলাদেশের রাজনীতির দৃশ্য পরিবর্তন হয়েছে গেছে। মির্জা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেনি। আপনাকে (ওবায়দুল কাদের) বা প্রধানমন্ত্রীকেও খারাপ বলেনি। সে দলের ভেতর থাকা দুর্নীতিবাজদের বিচার চেয়েছে।



 

Show all comments
  • Tareq Sabur ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১১:৪১ এএম says : 0
    শেখ হাসিনা প্রশাসনের নিকট ফল চেয়েছে আর প্রশাসন দিনের ভোট রাতে করে মানুষের ভোটের অধিকার হরন করেছে আর ফলটা শেখ হাসিনাকে উপহার দিয়েছে। দেশের মানুষের কস্টার্যিত টাকায় বেতন নিয়ে ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে দেশের মানুষের সাথেই গাদ্দারি। চুরির নির্দেশ দিল শেখ হাসিনা, চুরি করল প্রশাসন আর চুরির ফলটা (দেশের টাকা লুটপাট) ভোগ করছে শেখ হাসিনাও তার দলবল। প্রশাসনে যে যেদিকে পারে লুটপাট করছে। পুরা প্রশাসন ও পুতুল সরকার নিয়ন্ত্রন করে ভারত। দেশের এমন চরম পরিস্তিতি। এরপরও শেখ হাসিনা নিরপরাধ?
    Total Reply(0) Reply
  • Zubaer Ahmed ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১:৪৪ পিএম says : 0
    সত্য বলে যান ভাই যদিও মানুষের কাছে তা তিক্ত হোক কিন্তু আল্লাহর কাছে তা বড়ই মিঠা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ