Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বরিশালে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকাণ্ডে বিএমপি’র মর্যাদা ও আস্থা ম্লান হতে চলেছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২১, ৪:৪১ পিএম

বরিশাল মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের এসআই মহিউদ্দিনের হাতে গ্রেপ্তারের পরে শিক্ষানবিস আইনজীবী রেজাউলের মৃত্যুর পরে পুলিশের ইমেজ সংকট আরো তলানীতে ঠেকছে। যদিও পুলিশের দায়িত্বশীল মহল থেকে একজন পুলিশকর্মীর কর্মকান্ডে পুরো ইউনিটের ওপর প্রভাব পড়বেনা বলে দাবী করা হয়েছে,কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি নগরীর ট্রাফিক পুলিশের নানা অপকর্ম এনগরীতে অনেকটাই ওপেনÑসিক্রেট।
বছর দুয়েক আগেও গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্য একটি বেসরকারী টিভি চানেলের সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে শারিরিক নির্যাতন করার ঘটনায় কয়েকজনকে সাসপেন্ড করা ছাড়াও ডিসি ডিবি’র অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ট্রাফিকের ডিসি’কে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে ঘটনা খুব বেশীদিন মনে রাখেননি বরিশাল মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সহ ঐ ইউনিটের দায়িত্বশীল মহল।
ফলে এ নগরীতে গোয়েন্দা শাখার কতিপয় সদস্যর বেপরোয়া কর্মকান্ড সাধারন মানুষের মধ্যে পুলিশ সম্পর্কে চীরাচরিত বিরূপ ধারনা ক্রমাগত স্ফিত করেছে। সর্বশেষ গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে নগরীর ধান গবেষনা ইনিস্টিউট সড়ক থেকে শিক্ষানবীস আইনজীবী রেজাউলকে আটক করে মহানগর পুলিশের ডিবি’র সাব-ইনেসপেক্টর মহিউদ্দিন অমানবিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। আর সুস্থ স্বাভাবিক রেজাউলকে আটকের পরে রক্তক্ষরনে মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ দায় এড়াতে পারেনা বলে মনে করছেন নগরবাশী। এমনকি ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে নিহত রেজাউলের শরীরে একাধীক আঘাতের আলামতও মিলেছে বলে জানা গেছে। মহানগর পুলিশ থেকে ইতোমধ্যে অভিযুক্ত এসআই মহিউদ্দিনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হলেও কঠোর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
তবে নিহত রেজাউলের পিতার দায়ের করা হত্যা মামলা আদালত আমলে নিয়ে তদন্তে পিবিআই’কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এসআই মহিউদ্দিন সহ অজ্ঞাত আরো ৩জনকে আসামী করা দারে করা ঐ মামলায় আদালত একজন ইনেসপেক্টর পদ মর্জাদার কমকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করারও দিক নির্দেশনা প্রদান করেছে।
এদিকে এ ঘটনার পরে এসআই মহিউদ্দিনের নানা অপকর্ম প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। বরিশালেরই বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা এক সাবেক পুলিশ কর্মীর পুত্র মহিউদ্দিন কনেষ্টবল হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেয়। এরপরে নানা পথ ধরে সে সাব-ইনেসপেক্টর হিসেব পদোন্নতি পেয়ে বরিশাল মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় নিয়োগ লাভের পরে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এমনকি ইতোপূর্বে কোতয়ালী থানায় চাকুরিকালেও তার বিরুদ্ধে নানা সুস্পষ্ট অভিযোগ ছিল।
বিভিন্ন নিরিহ মানুষকে ক্রস ফায়ার ও এনকাউন্টারে হত্যা সহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে সে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নগরীর রূপাতলী ও সাগরদী এলাকায় যেকোন জমিজমা বেঁচা কেনায় পর্যন্ত তার হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। এভাবেই বরিশাল মহানগর পুলিশের এলাকায় ইতোমধ্যে মহিউদ্দিন প্রায় দেড় একর সম্পত্তির মালিক হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু এসব বিষয় কি কারনে এতদিন বিএমপি’র গোয়োন্দা শাখার প্রধান সহ বিএমপি’র উর্র্ধতন মহলের অগোচরে ছিল, সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে মহানগরবাসির মধ্যে। তবে এসব বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিএমপি’র কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান-বিপিএম-বার’এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমরা কঠার অবস্থানে রয়েছি। কোন একজন বা একাধীক সদস্যর নৈতিকতাহীন কর্মকান্ডে পুরো ইউনিটের মর্জাদা ম্লান হতে দেয়া হবে না। পুরো বিষয়টি তদন্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আদালতে দায়েরকৃত মামলা পিবিআই তদন্ত করছে। সেখানে যা পাওয়া যাবে, সেভাবেই পদক্ষেপ গ্রহনের কথাও জানান পুলিশ কমিশনার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ