পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করে শীর্ষে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন দেশের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান। এক বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে সোনালী ব্যাংকের ২০২০ সালের স্লোগান রাখেন ‘দীপ্ত শপথ মুজিব বর্ষে, আমরা যাব সবার শীর্ষে’। করোনায় দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতির মধ্যেও ‘ব্যাংক মাতা’ হিসেবে পরিচিত সোনালী ব্যাংক গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করেছেন। এই সময়ে কৃষকদের মাঝে বিনা সুদে ঋণ বিতরণ অব্যাহত রাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং চালু রাখা, ডেবিট, ক্রেডিট কার্ড চালুসহ আধুনিক সব সেবা চালু করে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকটিকে ঢেলে সাজিয়েছেন। পাশাপাশি সেবায় বৈচিত্র্যতা আনতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি কথা রেখেছেন। ব্যাংকটি সবার শীর্ষেই অবস্থান করছে। এর আগে তিন বছর ‘রূপালী ব্যাংকের এমডি’ দায়িত্ব পালন করে সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী পদে যোগ দেন।
তথ্য অনুযায়ী, করোনার মধ্যেও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে সোনালী ব্যাংক। পাশাপাশি ব্যাংকটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ মুনাফা করেছে সদ্য বিদায়ী বছরে। ব্যাংকটি ২০২০ বিদায়ী বছরের ২ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা অর্জন করেছে যা ২০১৯ সালে ছিল ১ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকটির মুনাফা বেড়েছে ৪৬৫ কোটি টাকা। মুনাফার এই প্রবৃদ্ধির হার ২৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকের সিইও এন্ড ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধানের নেতৃত্বে এ অসমান্য অর্জন করেছে ‘ব্যাংক মাতা’ হিসেবে পরিচিত দেশের সর্ববৃহৎ এই ব্যাংকটি। আর তাই এক বছর আগে শীর্ষে যাওয়ার যে প্রত্যয় করেছিলেন ব্যাংকিং খাতে দক্ষ ব্যাংকার হিসেবে পরিচিত এই ব্যাংকার তা তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন। তবে এ সাফল্যেও তিনি আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন না বা নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দেখছেন না। এটাকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিশ্রমের ফল হিসেবে দেখছেন। আর এ সাফল্যকে স্বাভাবিক হিসেবেই মূল্যায়ন করে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মো. আতাউর রহমান প্রধান।
গতকাল ইনকিলাবকে তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের বর্তমান আমানত ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা যা গত ২০১৯ সালের তুলনায় ৯ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা বেশি। বর্তমানে মুনাফার পাশাপাশি আমানতের দিক দিয়েও সোনালী ব্যাংক শীর্ষে। মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, করোনার মধ্যেও আমাদের ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। জাতীয় অর্থনীতিতে গতি থাকলে বরাবরের মতোই ব্যাংকের মুনাফা হবে। তাই শিল্পখাতকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উজ্জীবিত করে গ্রাহক সেবার মান বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখা সম্ভব বলে মনে করেন এ ব্যাংকার।
সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার দিকে আমরা জোর দিয়েছি। একই সঙ্গে মহামারি করোনা আমাদের অনেকক্ষেত্রে পিছিয়ে দিয়েছে সত্য। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও আছে। এই সময়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা পাঁচ বছর এগিয়েছি। করোনার মধ্যেও প্রতি সপ্তাহে বোর্ড (পরিষদ) সভা হয়েছে। যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত পরিষদ সভায় গৃহীত হয়েছে। মহামারি আমাদের পাঁচ বছরের প্লানকে এক বছরে বাস্তবায়ন করতে শিখিয়েছে। করোনার সময় বিকল্প পন্থায় তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে ঘরে বসে হিসাব খোলার সুযোগ রেখেছি। এতে ১ লাখেরও বেশি হিসাব খোলা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রাম-গঞ্জে বেশি হিসাব খোলা হয়েছে। আর এ জন্য বড় অঙ্কের আমানত বেড়েছে। পাশাপাশি আমরা এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার মান উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছি।
মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, দেশের অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে সোনালী ব্যাংকের ১১ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তিন বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় এ ব্যাংকটি জাতীয় অর্থনীতিতে বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটাকে ব্যাংকটির স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই দেখছেন তিনি।
সোনালী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান এ ব্যাংকে যোগদানের আগে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব রূপালী ব্যাংকেও সাফল্যের সঙ্গে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। অনলাইন ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে রূপালী ব্যাংককে তিনি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। সোনালী ব্যাংকে এসেও তিনি নানা সংস্কারমূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, সোনালী ব্যাংকে ২ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৬ জন মারা গেছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন খাতে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছেন। এ ক্রান্তিকালেও সোনালী ব্যাংকের দেশব্যাপী ১ হাজার ২২৪টি দেশের বাইরে আরও ২টি শাখাসহ মোট ১ হাজার ২২৬ শাখার মাধ্যমে জরুরি ব্যাংকিং সেবা চালু রেখেছে। ২০১৮ সালেও যেখানে সোনালী ব্যাংকের লোকসানী শাখা ছিল ৯৩টি। সেখানে বর্তমানে লোকসানী শাখা কমে ২০টিতে দাড়িয়েছে। করোনার সময়ে জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জিবীত করার লক্ষে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনার প্যাকেজ বাস্তবায়নে সোনালী ব্যাংক কাজ করেছে।
মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, করোনার প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও ব্যাংক প্রত্যেকটি কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রণোদনা ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ বিমানকে ১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকও একটি গাইডলাইন দিয়েছে সেগুলো ফলো করে আমরা পদক্ষেপ নিয়ে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের চেষ্টা করেছি।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, সরকারও সব ধরণের সহায়তা দিচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভাতা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। এ অর্থ আমাদের আর্থিক প্রক্রিয়াকে সচল রাখছে। আগের বছরের তুলনায় গতবছর রেমিট্যান্সও বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন আতাউর রহমান প্রধান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।