দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর : আমরা যারা চাকরীজীবি বাড়ীর বাইরে বা দেশের বাইরে রুজীর জন্য থাকি। তারা তাদের কাজের মাঝে এক (১) দিন ছুটি পেলেও নিজ বাড়ী যাবার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি। কারণ; বাড়ীতে তার মা-বাপ-স্ত্রী-সন্তান যে তারই আপনজন। তাই ওদের সাথে মিলিত হয়ে সে শান্তি পায়। আপন মনের গোপন কথা বলে সে সুখী হয়। পৃথিবীতে এটাই যেন তার পরম কাম্য-চরম আনন্দ। সেটা আরও বেশী হয় যদি সে বিদেশে থাকে।
ঠিক সেরূপ আমাদের অনুভূতি ও উপলব্ধির মাঝে থাকে এক মূল্যবান বস্তু যা হলো মানব আত্মা অর্থাৎ দেহের প্রাণ। সেও পরদেশী হয়ে রয়েছে এ মাটির পৃথিবীতে। কারণ তার যে আদি বাসভূমি সেটা যে আলোর বা নূরের জগৎ। সেখানে সে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু যে দেহের মাঝে তাকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তাই দেহরূপ মানব তাকে ছাড়তে চায় না। তাকে বেঁধে নিজ রিপু চরিতার্থ করতে চায়। তখন আত্মার যে কান্না তা সে শুনতে পায় না বা চায় না। আত্মা বলে, “হে আমার পরদেশী দেখ আমায় আর কষ্ট দিও না। এতে আমি যে আমার আদি পবিত্র স্থানে ফিরে যেতে পারবো না। এ যে কত বড় দুঃখের ও লজ্জার কথা তা বলার ভাষা নেই। পরদেশী তুমি একটিবার আমার পানে চাও। দেখ কত সুন্দর আমি-সেতো সেই পরম সুন্দরেরই কারণে।
তাই পরদেশী তুমি আমায় আর কুলষিত করো না। আমায় বিকৃত করো না-বাঁচতে দাও। এ যে তোমারই বাঁচার পূর্ব শর্ত পরদেশী। কিন্তু এত আবেদন নিবেদন শুনার সময় নাই পরদেশীর। যার ফলে যা হবার তাই হয়। বড় করুণ পরিণতি মেনে নিতে হয় আত্মাকে। সেই আলোর জগতের পরদেশী কে এ মাটির জগতে এসে। দুঃখ-কষ্টের তখন থাকে না শেষ। তাই হে মানুষ! এ দুনিয়ার কয়েক বছরের জীবন বরবাদ করো না। আত্মার মুক্তির জন্য বন্ধুর খোঁজ নাও। আর সে বন্ধু হলো-আল্লাহর ওলী। তার সহবতে যাও হাতে হাত মিলাও। তাকে ভালবেসে আল্লাহ ও রাসূলের পথে চলো। আজ বারো শরীফ সে পথই দেখায়ে চলেছে। তাহলো মোহাম্মদ (সাঃ) কে ভালবেসে-মোহাম্মদীতে এসে-আত্মার মুক্তির পথও পাথেয় সঞ্চয় করা। বলা হয়েছে ”প্রতিটি নফস্ কে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে”। এখানে বলা হয় নাই, আত্মার মৃত্যু হবে। আত্মা অমর, নফ্সের মৃত্যুর পরই শুরু হবে-রূহানী জগতের জীবন। তাই সাধকরা, মরার আগে মরে যাও বলে থাকেন। অর্থাৎ নফসের মৃত্যু ঘটাতে বলেন। নফ্সের মৃত্যু ঘটলে সে এ দুনিয়া থেকেও রূহানী জগতের খবর পেতে পারে, দেখতে পারে। নফ্স বড় শক্তিশালী জিনিস। এর মৃত্যু ঘটাতে দরকার অল্লাহর ওলী বা কামেল এর সহবৎ। তাকে ভালবাসা, আর কঠোর সাধনা, রিয়াজত ও আধ্যাত্মিক প্রেম দরকার। যখন নফসের মৃত্যু ঘটে তখনই হয় মোমেনের হৃদয় আল্লাহর আরশ।
আল্লাহ বলেন; “আমি তোমার নফসের মধ্যে আছি তুমি তা দেখতে পাও না।” এতে বুঝা যায় নফস যখন বশিভূত হয়ে পবিত্র হয় তখন সেই নফস আর নিম্নপর্যায়ের নফস বা নফসে-আম্মারা থাকে না তখন এর উন্নতি ঘটে-যেখানে প্রভুর স্বাক্ষৎ পাওয়া যায়। যখন এ ভাবে পবিত্রতা এসে যায় তখন সাধকের সবকিছু পবিত্র হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে স্মরণ যোগ্য হারুত-মারুত ফেরেশ্তা দ্বয়ের ঘটনা। এ প্রসঙ্গে রাসূল (সাঃ) এর একটা পবিত্র হাদীসও রয়েছে যে; মানুষের শরীরে একখন্ড মাংস পিন্ড রয়েছে যা পবিত্র হলে তার সমগ্র দেহ পবিত্র হয়ে যায়। তা হল কল্ব বা আত্মা।
উত্তর দিচ্ছেন : নাজীর আহ্মদ জীবন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।