Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন বছরে নাট্যাঙ্গণের শিল্পীদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর হিড়িক

মারুফ সরকার: | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

নাটকের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এবং ভালো নাটক নির্মাণের সংখ্যা কমে গেলেও চাহিদাসম্পন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক দিন দিন বেড়ে চলেছে। করোনায় নাট্যাঙ্গণ অচল হয়ে পড়ার পর নতুন করে যখন নির্মাতারা নাটক নির্মাণে ব্যস্ত হচ্ছেন, তখনই কোনো কোনো চাহিদাসম্পন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রী তাদের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে নির্মাতারাও বিপাকে পড়ছেন। নাটক নির্মাণ করতে গিয়ে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক দিতে গিয়ে নাটকের চরিত্রের সংখ্যাও কমিয়ে দিচ্ছেন। একদিনের শুটিংয়েই নাটকের নির্মাণ কাজ শেষ করছেন। এতে নাটকের মান কতটা ভাল হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জানা যায়, নতুন বছরের শুরুতে বেশ কয়েকজন শিল্পী তাদের পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, তৌসিফ মাহবুব, ফারহান আহমেদ জোভান, তানজিন তিশা, সাবিলা নূর, সাফা কবির, মিশু সাব্বির, শামীম হাসানসহ একাধিক শিল্পী। অন্যদিকে, করোনা মহামারীর মধ্যেই পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। তিনি আগে এক ঘন্টার নাটক বাবদ পারিশ্রমিক নিতেন ৭০ হাজার টাকা। এখন নিচ্ছেন এক লাখ টাকা। নির্মাতাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত বছর পর্যন্ত তৌসিফ একটি একক নাটকে অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিক নিতেন ৪০ হাজার টাকা। এ বছরের শুরু থেকেই তিনি ২০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। জোভান আহমেদ গত বছর পর্যন্ত পারিশ্রমিক নিতেন ৪০ হাজার টাকা। নতুন বছরে নিচ্ছেন ৫০ হাজার টাকা। একইভাবে মোশাররফ করিম, আফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরীরও পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন। ঈদুল আজহার পরই তারা প্রায় লাখ টাকার মতো করে পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের যুক্তি হচ্ছে, ইউটিউব চ্যানেলে ভিউ বেশি এমন অভিনয় শিল্পীদের পারিশ্রমিকই তারা বাড়াচ্ছেন। বাস্তবতা হচ্ছে ইউটিউবে এসব বেশি পারিশ্রমিক নেয়া শিল্পীদের মধ্যে অনেকের নাটকই এখন আর কাক্সিক্ষত ভিউজ হচ্ছে না। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে বেশিরভাগ নাটকের কাহিনী প্রেম ও বিরহ কেন্দ্রিক। একটা সময় টেলিভিশনে মানসম্মত পারিবারিক নাটক প্রচার হতো বেশি। এখন সেসব নাটরে জায়গা দখল করেছে ভালবাসা নির্ভর গল্পের নাটক-টেলিছবি। এ ধারায় ইউটিউব চ্যানেলে ভিউ বৃদ্ধি করার জন্য নির্মিত হচ্ছে অশ্লীল সংলাপ ও দৃশ্যের নাটক নির্মিত হচ্ছে। তারকা শিল্পীদের পারিশ্রমিক বাড়ার খবরে উদ্বিগ্ন টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ স¤পাদক সাজু মুনতাসির। তিনি বলেন, এখনো প্রতিদিন নাটকের বাজেট কমছে। সেখানে কিছু মানুষের কারণে তারকাদের বাজেট বাড়ায় আমরা হতাশ। এটা মানসম্পন্ন নাটকের জন্য অশুভ সংকেত। অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, চাহিদা থাকলে পারিশ্রমিক আপনা আপনি বেড়ে যায়। শিল্পীদের নিজে পারিশ্রমিক নির্ধারণ না করাই ভালো। কোনো শিল্পী যদি বছরে বছরে পারিশ্রমিক বাড়ান, তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। অযাচিতভাবে নিজেদের পারিশ্রমিক বাড়ানোকে আমি নিন্দা জানাই। ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ইউটিউবের ভিউকে বাহানা করে কিছু শিল্পী অযৌক্তিকভাবে পারিশ্রমিক বাড়িয়ে নাটকের সিংহভাগ টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। বাকি টাকা দিয়ে নাটক হবে কি না তা ভাবছেন না। এটা কাম্য হতে পারে না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাটক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ