পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০২১ সালে সরকার পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এবছর শেষ হচ্ছে। আগামী বছরের আসুন আমাদের সকলের একটাই সংকল্প হবে, শপথ হবে ঐক্য। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দানবীয় সরকার, স্বৈরতান্ত্রিক সরকার, একনায়কতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করব জনগণের নির্বাচনের মাধ্যমে। এজন্য এখন আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমগ্র রাজনৈতিক দলগুলোকে আবার আমি আহবান জানাচ্ছি, আসুন গণতন্ত্রকে উদ্ধারের সংগ্রাম শুধু একা বিএনপির নয়। সকল রাজনৈতিক দল, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের মাধ্যমে সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অবশ্যই একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গতকাল বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।
সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে উপস্থিত হয়। পুলিশ মৎস্যভবন, তোপখানা সড়কের মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে নেতা-কর্মীদের আসতে বাধা প্রদান করে। এতে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে, অন্যদিকে নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
রাজধানী ঢাকা ছাড়াও বুধবার সারাদেশে জেলা ও মহানগরেও একাদশ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীদের পুলিশি বাঁধা প্রদান ও গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সমাবেশে আসতে বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের বাঁধা দেয়া হচ্ছে। অসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। লজ্জা হয় যখন দেখি প্রধানমন্ত্রী বলছেন যে, তারা গণতন্ত্র দিয়েছেন বলেই নাকী দেশ খুব ভালো চলছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় থেকে তারা বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধবংস করে দিয়েছে, তারা আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা, অর্থনীতি ধবংস করেছে, প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে এবং বাংলাদেশে একটা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। মেগা প্রজক্টের নামে মেগা লুট, শেয়ারবাজার ধবংস করে ফেলা, ব্যাংক-বীমাকে লুট করে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ধবংস করে ফেলা হয়েছে। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে জনগণকে একটা বিপন্ন অবস্থার মধ্যে নিয়ে এসেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিনই গণতন্ত্র বিশ্বাস করেনি। তারা সবসময় গণতন্ত্রের বিরোধিতা করেছে, কাজ করেছে উল্টো। এই সরকার গোটা দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে। মানুষগুলোকে একটা শ্বাসরুদ্ধ করে একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এই অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে, সমগ্র মানুষকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্ত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে এদেরকে বাধ্য করতে হবে এই সরকারকে সরে যেতে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এই কমিশন সারাদিন মিথ্যা কথা বলে। যে কথাগুলো শুনলে লোকে হাসে। এখন নাকী খুব সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে, চমৎকার নির্বাচন হচ্ছে। যেখানে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না মানুষ। ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করে। একখানে দিলে আরেকখানে ভোট পড়ে। ধানের শীষে ভোট দিয়ে নৌকায় গিয়ে পড়ে-এই অবস্থা তারা (নির্বাচন কমিশন) তৈরি করেছে।
মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন-নবী-খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম নকির পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিরিন সুলতানা, আমিনুল হক, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমূখ।
পুলিশ-বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ: বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। এদিন সকাল ১০টা থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে মেট্রোরেলের কাজ চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি নেতাদের রাস্তার একপাশে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতির কারণে সেটি সম্ভব হয়ে উঠেনি। মানুষের উপস্থিতির কারণে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। এতে সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ১০টা ৫০ মিনিটে সচিবালয়ের পশ্চিম সড়ক হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মিছিল সমাবেশস্থলে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। নেতাকর্মীরা বাধা অতিক্রম করে এগোতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ওপর চড়াও হয়। পুলিশকে এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে। একপর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সমাবেশ শুরু হয়। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।