Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভাগ্যবান হাতি বনাম দুর্ভাগা জাতি

প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মহিউদ্দিন খান মোহন
ওটা এসেছিল বানের পানিতে ভেসে। প্রতিবেশী দেশ থেকে বানের তোড়ে সীমান্ত অতিক্রম করে কখন যে চলে এসেছিল তা বোধকরি ওই বিশালদেহী বোবা প্রাণীটি নিজেও বুঝতে পারেনি। ওটা বোধকরি এটাও বুঝতে পারেনি যে, যে দেশে সে এসে পড়েছে সেখানে সে ব্যাপক আলোড়ন তুলবে, জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি করবে, পত্র-পত্রিকার শিরোনাম হবে, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিশেষ প্রতিবেদন ও টক শো’র বিষয়বস্তু হবে এবং শেষ পর্যন্ত বেঘোরে প্রাণ হারাতে হবে। আর তার এ ‘মহাপ্রয়ানে’ মানুষ চোখের পানি ফেলবে এবং বিক্ষোভ মিছিল করবে।
হ্যাঁ, মাস দুয়েক আগে ভারতের আসাম বা তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে বানের পানিতে ভেসে যে হাতিটি বাংলাদেশে বিশিষ্ট মেহমান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিল, আমি সেটার কথাই বলছি। হাতিটির সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে পাসপোর্ট ভিসা লাগেনি, বিএসএফ কিংবা বিজিবির চেকিং এবং জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হয়নি। অর্থাৎ বানের পানিতে ভেসে আসার সময় বনজঙ্গল কচুরিপানার বাধা ছাড়া ওটাকে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হয়নি। করতে হয়নি কোনো সম্মুখ লড়াই কিংবা গেরিলা যুদ্ধ। তারপরও ওটার খেতাব জুটে গেল ‘বঙ্গ বাহাদুর’। কে বা কারা এ খেতাব দিল বানভাসি ওই হাতিটিকে সেটা হয়তো কেউই বলতে পারবেন না। বিস্ময়কর বিষয় হলো- আমাদের কিছু গণমাধ্যম আগ-পাছ চিন্তা না করে পথহারা হাতিটিকে ‘বঙ্গ বাহাদুর’ বলেই সম্বোধন করতে শুরু করে দিল। তারা একবারও ভেবে দেখল না ‘বঙ্গ’ শব্দটি আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং আবেগের সঙ্গে কতোটা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ‘বঙ্গবন্ধু’ ‘বঙ্গ ভবন’ ‘বঙ্গবীর’ ইত্যাদি যেসব শব্দের সঙ্গে আমরা পরিচিত সেগুলোর সবই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব অথবা স্থাপনার। তো সেই ‘বঙ্গ’কে ভিন দেশ থেকে ভেসে আসা একটি জানোয়ারের উপাধির সঙ্গে যুক্ত করাটা কতোটা যুক্তিযুক্ত হয়েছে তা অবশ্যই ভেবে দেখা দরকার।
এখানে একটি কথা না বলে পারছি না। আনন্দের অতিশয্যে আবেগাপ্লুত হয়ে আমাদের দেশের কিছু মানুষ এমনসব কথা বলেন বা কাজ করেন, যার কোনো যুক্তিই খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার কেউ কেউ নিজেকে বিখ্যাত বানানোর কসরৎ করতে গিয়ে কোনো কোনো সময় এমন কা- করে বসেন যা শিষ্টাচারের সীমানাকে অতিক্রম করে যায়। যেমন নারায়ণগঞ্জের একজন বিএনপি নেতা নিজের নামের আগে ‘মজলুম জননেতা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। অথচ কে না জানে এ উপ-মহাদেশের ইতিহাসে ‘মজলুম জননেতা’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন একজনই তিনি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তিনি তার কর্মের দ্বারা সে উপাধি অর্জন করেছিলেন। অথচ নারায়ণগঞ্জের ওই বিএনপি নেতা সে উপাধিকে অবলীলায় নিজের নামের সঙ্গে ব্যবহার করে চলেছেন। এটা যে একটি ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ সে কথা তাকে কে বোঝাবে! এটা তো জ্ঞানসম্পন্ন মানুষেরা জানেন যে, ‘মজলুম জননেতা’ ‘বঙ্গবন্ধু’ ‘শেরে বাংলা’ ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ এসব উপাধি একজন করে ব্যক্তিই পেয়েছেন; যারা তাদের কর্মের দ্বারা জনমনে মর্যাদার আসন লাভ করেছেন এবং ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। ওইসব উপাধি দ্বিতীয় কারো ব্যবহার করা শুধু ধৃষ্টতাই নয়, চরম বেয়াদবী বলেই মনে করি। ঠিক তেমনি আমাদের জাতীয় ইতিহাসে বিশেষ স্থান করে নেয়া ‘বঙ্গ’ শব্দটিকে একটি হাতির সঙ্গে যারা জুড়ে দিয়েছেন তারা যে কাজটা ঠিক করেননি এটা তাদের উপলব্ধি করতে হবে।
যা হোক, সে হাতির কাছে ফিরে যাই। হাতিটি এসেছিল গত ২৮ জুন ভারতের আসাম থেকে। বাংলাদেশে ঢুকেছিল কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী সীমান্ত দিয়ে। পরে সিরাজগঞ্জ থেকে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়িতে আসে ২৭ জুলাই। প্রথম আলোর এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে- হাতিটি বাংলাদেশে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটেছে। সর্বশেষ ওটার অবস্থান ছিল সরিষাবাড়ি উপজেলার কয়ড়া গ্রামে। হাতিটি উদ্ধারের সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। বন্য এই হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাগণ হেন চেষ্টা নেই যা করেননি। শিকল দিয়ে পা বাঁধা হয়েছিল; কিন্তু টেনে তোলা যায়নি। পরে উপর্যুপরি চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগ করে হাতিটিকে দুর্বল করা হয়। গত ১৪ আগস্ট চারবার চেতনানাশক দিয়ে চার পায়ে শিকল বেঁধে কয়রা গ্রামের খোলা মাঠে রাখা হয়েছিল হাতিটিকে। কিন্তু ১৯ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে হাতিটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, হাতিটির মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে হাতিটিকে কয়ড়া গ্রামেই মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
এদিকে পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বন্য হাতিটির মৃত্যুর পর সরিষাবাড়ি ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মানুষ দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা হাতিটির মৃত্যুর জন্য চেতনানাশক ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এবং বন কর্মকর্তাদের অবহেলাকে দায়ী করেছে। তবে উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তারা বলেছেন, দীর্ঘ পথ পরিক্রমার শ্রান্তি, উপযুক্ত খাদ্যের অভাব, মানসিক চাপ ও জলজ পরিবেশের কারণে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
কোন কারণে হাতিটি মারা গেছে, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। তবে এ হাতিটিকে নিয়ে আমাদের দেশে যে ধরনের তোলপাড় ঘটে গেল তা নিয়ে দু’চার কথা বলা বোধকরি অন্যায় হবে না। এটা ঠিক, একটি অবোধ প্রাণীর এভাবে বেঘোরে মারা যাওয়াটা দুঃখজনক বৈকি! তবে হাতিটির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর অশ্রু বিসর্জন, বিক্ষোভ মিছিল ইত্যাদি যেসব খবর গণমাধ্যমে এসেছে তাতে কিছু প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই সামনে চলে এসেছে। প্রশ্নটা হলো- একটি বন্য প্রাণীর জন্য যে দেশের মানুষের এত দরদ, এতো মহব্বত, সে দেশের মানুষ এতো অন্যায় কীভাবে করে? কীভাবে তারা সামান্য স্বার্থের জন্য অন্যের মাথায় বাড়ি দেয়, বুকে ছুরি মারে কিংবা বুলেটে ছিদ্র করে দেয় হৃদপি-!
হাতিটিকে বাঁচাতে গ্রামবাসী যে যার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শুনে ভালো লাগারই কথা! আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে একটি প্রাণীর প্রাণ রক্ষায় এগিয়ে যাওয়াটা দায়িত্ব-কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু এই মানুষেরাই যখন চোখের সামনে দুর্বৃত্তের হাতে একজন মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখে, সর্বস্ব লুটে নিতে দেখে, তখন চোখ ঘুরিয়ে চলে যায় অন্যদিকে। যখন কোনো খুনি তার অস্ত্রের দ্বারা খুন করতে উদ্যত হয় কোনো পথচারীকে, আমরা তখন নিজের জীবনের প্রতি গভীর প্রেমের কারণে উল্টো দিকে ভোঁ দৌড় লাগাই। অথচ সাহস করে সবাই যদি আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচাতে একযোগে এগিয়ে আসে, তাহলে দুর্বৃত্ত-খুনীরা কারো সম্পদ বা জীবন হরণ করার সুযোগ পেতো না।
ভাবতে অবাক লাগে, রাস্তার পাশে মানুষের লাশ পড়ে থাকতে দেখলেও যাদের কোনো বিকার বা প্রতিক্রিয়া হয় না, এক পলক দেখেই ‘কোন ঝামেলায় জড়িয়ে যাই’- এ ভয়ে ত্রস্তপদে পশ্চাদপসারণ করে, তারাই একটি হাতির জন্য অশ্রু বিসর্জন দেয়, বিক্ষোভ মিছিল করে। নানা দুর্ঘটনায় এদেশে প্রতিদিন বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মরছে, দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হচ্ছে। কই, নিহত বা খুন হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন ছাড়া আমরা কী তাদের জন্য এক ফোঁটা চোখের পানিও ফেলি? নারায়ণগঞ্জের সাত খুন, সাগর-রুনির রহস্যময় হত্যাকা-, কুমিল্লার সোহাগী জাহান তনু হত্যা, চট্টগ্রামে এসপির স্ত্রী মিতু হত্যার ঘটনা গণমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছিল। বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে কিছু মিছিলও হয়েছে। কিন্তু ব্যাপক জনগণ কি কখনো সম্মিলিত ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে?
একটি বিষয় লক্ষণীয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব জুড়েই চলছে এটা। বন্য প্রাণী সংরক্ষণের জন্য সরকারগুলো, বিশ্ব সংস্থাগুলো নানা রকম প্রকল্প হাতে নিচ্ছে, সভা-সমাবেশ করছে, আইন কানুন বানাচ্ছে। পশু-পাখির বংশ রক্ষার জন্য যারা এতো উদগ্রীব, তারা মানুষের জীবন রক্ষায় কি অতোটা তৎপর? প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার মহৎ উদ্দেশ্যে বন্য প্রাণীকূলকে রক্ষার জন্য যে পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে উপদেশ খয়রাত করে, সহযোগিতার কথা বলে, তারাই আবার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে কিংবা বজায় রাখতে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হাজার হাজার আদম সন্তানকে হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করে না! ওইসব বিশ্ব মুরব্বীদের ‘পশুপ্রেম’ যতোটা প্রবল, তার সিকি ভাগও যদি মানবপ্রেম থাকতো তাহলে এ পৃথিবীটা প্রকৃতই শান্তিময় হয়ে উঠতো।
আসলে মনুষ্য চরিত্র বড়ই জটিল! যে মানুষটিকে দেখা যায় তার পোষা কুকুর-বিড়ালটিকে অতি যতœ সহকারে লালন-পালন করতে, পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে, সে মানুষটিকেই আবার দেখা যায় তারই বাড়িতে কর্মরত কাজের লোক-বুয়াদের অনাদর অবহেলায় তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে। পোষা কুকুর বা বিড়াল ঘরের তৈরি খাবার খেয়ে ফেললে বা কোনো আসবাব ভেঙে ফেললে যে গৃহকর্তা কিছুই বলেন না, তাকেই দেখা যায় সামান্য একটা গ্লাস বা প্লেট ভাঙ্গার অভিযোগে কাজের ছেলে বা মেয়েটাকে নির্দয়ভাবে পেটাতে। কী বিচিত্র মানুষের চরিত্র।
‘জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর’Ñএ বাণীটি আমরা সবাই জানি। আল্লাহর সৃষ্ট জীবকে ভালোবাসা মানুষের কর্তব্য। সৃষ্টিকে ভালোবাসলেই স্রষ্টার ভালোবাসা পাওয়া যায় এটা মহামনীষীরা বলে গেছেন। সৃষ্টিকে আমরা অবশ্যই ভালোবাসব। সে ক্ষেত্রে ‘সৃষ্টির সেরা জীব’ মানুষকে ভালোবাসতে হবে সবার আগে। বলতে দ্বিধা নেই- মানুষের প্রতি আমাদের ভালোবাসা এখন আর তেমন নেই। কোথায় যেন একটা ঘুণ পোঁকা বাসা বেঁধেছে। আমরা এখন আত্মস্বার্থ ছাড়া কিছু বুঝি না। কী ব্যক্তি পর্যায়, কী সমাজ, কী রাষ্ট্রীয় পর্যায়। স্বার্থই এখন সবার মূলমন্ত্র। আত্মস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ভাই ভাইকে, স্বামী-স্ত্রীকে, স্ত্রী-স্বামীকে, বাপ-পুত্রকে, পুত্র-বাপকে খুন করতেও দ্বিধা করছে না। সামান্য একটু স্বার্থের জন্য রক্তের সম্পর্ক, আত্মীয়তার সম্পর্ক, বন্ধুত্বের সম্পর্ক সব ভুলে একে অপরের প্রতি খড়গহস্ত হয়ে উঠতে আমরা দ্বিধা করি না। সামাজিক ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার, নিজের বা গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষার জন্য কলহ-বিবাদ সৃষ্টি, এমনকি খুনোখুনিতেও আমরা পিছ পা হই না। আর রাজনৈতিক ক্ষেত্রের কথা যত কম বলা যায় ততোই ভালো। ‘ক্ষমতা’ নামক ‘কোহিনুর’ পাথরটি করায়ত্ত করতে কিংবা রক্ষা করতে হেন নিষ্ঠুর কাজ নেই যা করতে আমাদের রাজনীতির মানুষের দ্বিধা করেন। সারাক্ষণ যাদের মুখে আমরা মানবপ্রেম-দেশপ্রেমের সুমধুর বাণী শুনি, তারাই সময়ে সময়ে হয়ে ওঠেন বিবেক-বিবেচনাহীন। তাদের স্বার্থের যূপকাষ্ঠের শিকার হতে হয় নিরীহ মানুষকে।
ভারতের আসাম থেকে ভেসে আসা হাতিটিকে আমার ভাগ্যবানই মনে হচ্ছে। কেননা, সে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিল, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছিল, সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তা ব্যক্তিদেরও মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছিল। সর্বোপরি ওটার মৃত্যুর পর মানুষ চোখের পানি ফেলেছে, বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পক্ষান্তরে আমরা এমনই দুর্ভাগা জাতি যে, এখানে কেউ কারো প্রতি সমব্যথী হয় না, বেকায়দা বেঘোরে মরে পড়ে থাকলেও কেউ ফিরে দেখে না। যাদের হাতে মানুষের জীবন আর সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব তারাই মাঝে মধ্যে হয়ে ওঠে লুটেরা ও হন্তারক। তারপরও আমরা বেঁচে আছি। বেঁচে আছি সবকিছু মেনে নিয়েই। এভাবে বেঁচে থাকতে হয় বোধ হয়।
হাতিটিকে আমার ভাগ্যবান মনে হয় আরেকটি কারণে। তাহলো, ওটা ভারত থেকে বানের পানিতে ভেসে এসে এদেশের মানুষের ভালোবাসার সরোবরেও ভেসেছে, আদর পেয়েছে। কিন্তু এদেশের একজন মানুষ যদি পথ ভুলে কিংবা দুর্যোগে পড়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে চলে যেত তাহলে কী ঘটত? হয় তাকে সে দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলার আসামি হতে হতো, অথবা ফেলানীর মতো ঝুলে থাকতে হতো কাঁটা তারের বেড়ায়।
য় লেখক : সাংবাদিক
সড়যড়হ৯১@যধুড়ড়.পড়স



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাগ্যবান হাতি বনাম দুর্ভাগা জাতি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ